ঢাকা ০৯:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেকর্ডের মালা গেঁথে আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

  • আপডেট সময় : ০৭:১২:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া প্রতিবেদক: নবজাগরণের গল্প লেখার সিরিজে আরেকটি চমৎকার ইনিংস খেললেন শারমিন আক্তার। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে টানা তৃতীয় ইনিংসে পঞ্চাশ ছাড়ালেন ফারজানা আক্তার। তাদের রেকর্ডগড়া জুটিতে অনায়াস জয়ে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে সোমবার ৭ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। ১৮৬ রানের লক্ষ্য ৭৫ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলেছে নিগার সুলতানার দল। ভারতে আগামী বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার আশা জিইয়ে রাখতে এই সিরিজে পূর্ণ ছয় পয়েন্ট জরুরি ছিল বাংলাদেশর জন্য। তিন ম্যাচেই দাপুটে জয়ে নেই লক্ষ্য পূরণ করেছে তারা। এ নিয়ে তৃতীয়বার কোনো দলকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজে সব ম্যাচ জয়ের নজির এটিই প্রথম। এই সাফল্যের বড় কারিগর দলে ফেরা শারমিন। প্রায় দেড় বছর পর দলে ফিরে প্রথম ম্যাচে ৯৬ রানে দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। সোমবার ৮৮ বলে ৭২ রানের ইনিংস খেলে আবার তিনি ম্যাচের সেরার স্বীকৃতি পান। নিজেকে নতুনভাবে মেলে ধরার এই সিরিজে তিন ম্যাচে শারমিনের সংগ্রহ ৭০.৩৩ গড়ে ২১১ রান। এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার এক সিরিজে দুইশর বেশি রান করলেন। গত বছর ভারতের বিপক্ষে ১৮১ রান করে রেকর্ডটি এতদিন ছিল ফারজানা হকের। অভিজ্ঞ ব্যাটার এই সিরিজেও যথারীতি উজ্জ্বল। তিন ম্যাচেই ফিফটি করা ওপেনারের রান এই সিরিজে মোট ১৭২। এই প্রথম এক সিরিজে তিনটি পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস খেললেন বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার।
প্রথম ম্যাচে ১০৪ রানের জুটি গড়া ফারজানা ও শারমিন এবার যোগ করেন ১৪৩ রান। যে কোনো উইকেটেই ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ এটি। সব মিলিয়ে এই সিরিজে মোট ৬টি পঞ্চাশছোঁয়া জুটি পেয়েছে বাংলাদেশ। এটিও রেকর্ড। গত বছর ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচে ৫টি পঞ্চাশছোঁয়া জুটি গড়েছিল তারা। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আরেকবার ব্যাটিং নেন আইরিশ অধিনায়ক গ্যাবি লুইস। দ্বিতীয় ম্যাচের চেয়ে ২০-৩০ রান বেশি করার লক্ষ্যের কথা বলেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের স্পিন পরীক্ষায় নাকাল হয়ে আগের চেয়ে উল্টো কম রানে গুটিয়ে যান তারা। মন্থর শুরুর পর ষষ্ঠ ওভারে সুলতানা খাতুনের নিচু হয়ে যাওয়া ডেলিভারি স্টাম্পে টেনে আনেন সারাহ ফোর্বস। স্কোরবোর্ডে তখন মাত্র ৯ রান। শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন লুইস ও এমি হান্টার। তবে রানের গতি বাড়াতে সফল হননি তারা। ৪৮ রানের জুটি গড়তে দুজন মিলে খেলেন ৮১ বল। ৪০ বলে ২৩ রান করা হান্টারকে এলবিডব্লিউ করেন রাবেয়া। ২৬তম ওভারে থার্ড ম্যানে লুইসের একটি বাউন্ডারি ঠেকানোর চেষ্টায় ঘাড় ও মাথায় আঘাত পান মারুফা। পরে আর মাঠে ফিরতে পারেননি দলের একমাত্র পেসার। কনকাশন বদলি হিসেবে নামানো হয় পেস অলরাউন্ডার রিতু মনিকে।
রিপ্লে না দেখেই সেটি বাউন্ডারি দিয়ে দেন মাঠের আম্পায়ার। রিপ্লেতে দেখা যায়, সীমানা দড়ি ছোঁয়ার আগেই বল ফিরিয়েছেন মারুফা। তবে সিদ্ধান্ত বদলানো হয়নি। ওই চারে ৭৬ বলে ফিফটি পূর্ণ হয় আইরিশ অধিনায়কের। এরপর টিকতে পারেননি তিনি। দলের একশ হওয়ার আগে ফাহিমার বলে বোল্ড হন ৯ চারে ৭৯ বলে ৫২ রান করা লুইস। পরে আর কোনো জুটি গড়ে ওঠেনি আইরিশদের। ওর্লা প্রেন্ডারগাস্ট ৪৫ বলে ২ চারে করেন ২৭ রান। এছাড়া আর্লিন কেলি, অ্যালানা ডালজেল ও ক্যারা মারের ছোট ছোট ইনিংসে দুইশর কাছে যায় আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন ফাহিমা। সুলতানা ও নাহিদার ঝুলিতে জমা পড়ে ২টি করে উইকেট। রান তাড়ায় ফের হতাশ করেন মুর্শিদা খাতুন। প্রেন্ডারগাস্টের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন বাঁহাতি ওপেনার। শুরুর আনন্দ বেশিক্ষণ টেকেনি আয়ারল্যান্ডের। দ্বিতীয় উইকেটে আরেকবার বড় জুটি গড়ে তোলেন ফারজানা ও শারমিন। বরাবরের মতোই রয়েসয়ে ব্যাটিং করতে থাকেন ফারজানা। আর শারমিন ছোটান স্ট্রোকের ফুলঝুরি।
দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলেন দারুণ ছন্দে থাকা শারমিন। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে স্লগ করে লং অন দিয়ে মারেন চার। পরের ওভারে ফ্রি হিট পেয়ে চমৎকার অফ ড্রাইভে আরেকটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। ১২তম ওভারে পঞ্চাশ করে ফেলে বাংলাদেশ। যেখানে শারমিনের অবদান ২৫ বলে ২৮ রান। এরপর একই ছন্দে এগোতে থাকেন ২৮ বছর বয়সী ব্যাটার। থার্ড ম্যান দিয়ে বাউন্ডারি মেরে ক্যারিয়ারের অষ্টম ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি ৫৮ বলে। পরে অ্যামি ম্যাগুয়েইরের বলে পরপর দুই চার মেরে ৮৯ বলে ফিফটি করেন ফারজানা। তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ত্রয়োদশ ফিফটি এটি। ৩৩তম ওভারে ম্যাগুয়েইরের প্রথম বলে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান ৫৩ রানে থাকা ফারজানা। এক বল পরই ফ্রেয়া সারজেন্টের ক্যাচে বিদায়ঘণ্টা বাজে শারমিনের। তিন ম্যাচে দ্বিতীয় পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংসে ১১টি চার মারেন শারমিন। সব মিলিয়ে সিরিজে তার বাউন্ডারি ২৯টি। বাংলাদেশের পক্ষে এক সিরিজে সর্বোচ্চ বাউন্ডারির আগের রেকর্ড ছিল ফারজানার, গত বছর ভারতের বিপক্ষে ১৭টি। শারমিনের বিদায়ে ভাঙে ১৪৩ রানের জুটি। চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও শতরানের জুটি গড়েছিলেন শারমিন ও ফারজানা। এই প্রথম এক সিরিজে একাধিক শতরানের জুটি পেল বাংলাদেশ। ফারজানাও অবশ্য ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি। ৬ চারের ইনিংস খেলে ম্যাগুয়েইরের বলে আউট হয়ে যান তিনি। বাকি পথটুকু পাড়ি দেন নিগার ও সোবহানা মোস্তারি। দুই দল এখন খেলবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। সিলেটে ম্যাচ তিনটি হবে আগামী বৃহস্পতিবার, শনিবার ও সোমবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আয়ারল্যান্ড: ৫০ ওভারে ১৮৫ (ফোর্বস ৫, লুইস ৫২, হান্টার ২৩, প্রেন্ডারগাস্ট ২৭, পল ৯, রেমন্ড-হোয়ি ৬, কেলি ১৮, ডালজেল ১৯, মারে ১৩, সারজেন্ট ৭*, ম্যাগুয়েইর ৩; মারুফা ৫-০-১০-০, সুলতানা ১০-২-২৯-২, নাহিদা ১০-০-৫৫-২, রাবেয়া ১০-০-২৭-১, ফাহিমা ১০-০-৪৩-৩, স্বর্ণা ৪-০-১৫-১, রিতু ১-০-৬-০)
বাংলাদেশ: ৩৭.৩ ওভারে ১৮৬/৩ (ফারজানা ৬২,, মুর্শিদা ৮, শারমিন ৭২, নিগার ১৮*, সোবহানা ৭*; প্রেন্ডারগাস্ট ৫-০-১৭-১, সারজেন্ট ৭-০-৩৬-০, মারে ৬-০-৪২-০, কেলি ৫.৩-১-২০-০, ডালজেল ৫-০-২২-০, ম্যাগুয়েইর ৮-০-৩৮-২, ফোর্বস ১-০-১০-০)
ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ বাংলাদেশ ৩-০তে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: শারমিন আক্তার
প্লেয়ার অব দা সিরিজ: ফারজানা হক

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রেকর্ডের মালা গেঁথে আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০৭:১২:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

ক্রীড়া প্রতিবেদক: নবজাগরণের গল্প লেখার সিরিজে আরেকটি চমৎকার ইনিংস খেললেন শারমিন আক্তার। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে টানা তৃতীয় ইনিংসে পঞ্চাশ ছাড়ালেন ফারজানা আক্তার। তাদের রেকর্ডগড়া জুটিতে অনায়াস জয়ে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে সোমবার ৭ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। ১৮৬ রানের লক্ষ্য ৭৫ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলেছে নিগার সুলতানার দল। ভারতে আগামী বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার আশা জিইয়ে রাখতে এই সিরিজে পূর্ণ ছয় পয়েন্ট জরুরি ছিল বাংলাদেশর জন্য। তিন ম্যাচেই দাপুটে জয়ে নেই লক্ষ্য পূরণ করেছে তারা। এ নিয়ে তৃতীয়বার কোনো দলকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজে সব ম্যাচ জয়ের নজির এটিই প্রথম। এই সাফল্যের বড় কারিগর দলে ফেরা শারমিন। প্রায় দেড় বছর পর দলে ফিরে প্রথম ম্যাচে ৯৬ রানে দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। সোমবার ৮৮ বলে ৭২ রানের ইনিংস খেলে আবার তিনি ম্যাচের সেরার স্বীকৃতি পান। নিজেকে নতুনভাবে মেলে ধরার এই সিরিজে তিন ম্যাচে শারমিনের সংগ্রহ ৭০.৩৩ গড়ে ২১১ রান। এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার এক সিরিজে দুইশর বেশি রান করলেন। গত বছর ভারতের বিপক্ষে ১৮১ রান করে রেকর্ডটি এতদিন ছিল ফারজানা হকের। অভিজ্ঞ ব্যাটার এই সিরিজেও যথারীতি উজ্জ্বল। তিন ম্যাচেই ফিফটি করা ওপেনারের রান এই সিরিজে মোট ১৭২। এই প্রথম এক সিরিজে তিনটি পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস খেললেন বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার।
প্রথম ম্যাচে ১০৪ রানের জুটি গড়া ফারজানা ও শারমিন এবার যোগ করেন ১৪৩ রান। যে কোনো উইকেটেই ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ এটি। সব মিলিয়ে এই সিরিজে মোট ৬টি পঞ্চাশছোঁয়া জুটি পেয়েছে বাংলাদেশ। এটিও রেকর্ড। গত বছর ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচে ৫টি পঞ্চাশছোঁয়া জুটি গড়েছিল তারা। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আরেকবার ব্যাটিং নেন আইরিশ অধিনায়ক গ্যাবি লুইস। দ্বিতীয় ম্যাচের চেয়ে ২০-৩০ রান বেশি করার লক্ষ্যের কথা বলেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের স্পিন পরীক্ষায় নাকাল হয়ে আগের চেয়ে উল্টো কম রানে গুটিয়ে যান তারা। মন্থর শুরুর পর ষষ্ঠ ওভারে সুলতানা খাতুনের নিচু হয়ে যাওয়া ডেলিভারি স্টাম্পে টেনে আনেন সারাহ ফোর্বস। স্কোরবোর্ডে তখন মাত্র ৯ রান। শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন লুইস ও এমি হান্টার। তবে রানের গতি বাড়াতে সফল হননি তারা। ৪৮ রানের জুটি গড়তে দুজন মিলে খেলেন ৮১ বল। ৪০ বলে ২৩ রান করা হান্টারকে এলবিডব্লিউ করেন রাবেয়া। ২৬তম ওভারে থার্ড ম্যানে লুইসের একটি বাউন্ডারি ঠেকানোর চেষ্টায় ঘাড় ও মাথায় আঘাত পান মারুফা। পরে আর মাঠে ফিরতে পারেননি দলের একমাত্র পেসার। কনকাশন বদলি হিসেবে নামানো হয় পেস অলরাউন্ডার রিতু মনিকে।
রিপ্লে না দেখেই সেটি বাউন্ডারি দিয়ে দেন মাঠের আম্পায়ার। রিপ্লেতে দেখা যায়, সীমানা দড়ি ছোঁয়ার আগেই বল ফিরিয়েছেন মারুফা। তবে সিদ্ধান্ত বদলানো হয়নি। ওই চারে ৭৬ বলে ফিফটি পূর্ণ হয় আইরিশ অধিনায়কের। এরপর টিকতে পারেননি তিনি। দলের একশ হওয়ার আগে ফাহিমার বলে বোল্ড হন ৯ চারে ৭৯ বলে ৫২ রান করা লুইস। পরে আর কোনো জুটি গড়ে ওঠেনি আইরিশদের। ওর্লা প্রেন্ডারগাস্ট ৪৫ বলে ২ চারে করেন ২৭ রান। এছাড়া আর্লিন কেলি, অ্যালানা ডালজেল ও ক্যারা মারের ছোট ছোট ইনিংসে দুইশর কাছে যায় আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন ফাহিমা। সুলতানা ও নাহিদার ঝুলিতে জমা পড়ে ২টি করে উইকেট। রান তাড়ায় ফের হতাশ করেন মুর্শিদা খাতুন। প্রেন্ডারগাস্টের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন বাঁহাতি ওপেনার। শুরুর আনন্দ বেশিক্ষণ টেকেনি আয়ারল্যান্ডের। দ্বিতীয় উইকেটে আরেকবার বড় জুটি গড়ে তোলেন ফারজানা ও শারমিন। বরাবরের মতোই রয়েসয়ে ব্যাটিং করতে থাকেন ফারজানা। আর শারমিন ছোটান স্ট্রোকের ফুলঝুরি।
দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলেন দারুণ ছন্দে থাকা শারমিন। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে স্লগ করে লং অন দিয়ে মারেন চার। পরের ওভারে ফ্রি হিট পেয়ে চমৎকার অফ ড্রাইভে আরেকটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। ১২তম ওভারে পঞ্চাশ করে ফেলে বাংলাদেশ। যেখানে শারমিনের অবদান ২৫ বলে ২৮ রান। এরপর একই ছন্দে এগোতে থাকেন ২৮ বছর বয়সী ব্যাটার। থার্ড ম্যান দিয়ে বাউন্ডারি মেরে ক্যারিয়ারের অষ্টম ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি ৫৮ বলে। পরে অ্যামি ম্যাগুয়েইরের বলে পরপর দুই চার মেরে ৮৯ বলে ফিফটি করেন ফারজানা। তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ত্রয়োদশ ফিফটি এটি। ৩৩তম ওভারে ম্যাগুয়েইরের প্রথম বলে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান ৫৩ রানে থাকা ফারজানা। এক বল পরই ফ্রেয়া সারজেন্টের ক্যাচে বিদায়ঘণ্টা বাজে শারমিনের। তিন ম্যাচে দ্বিতীয় পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংসে ১১টি চার মারেন শারমিন। সব মিলিয়ে সিরিজে তার বাউন্ডারি ২৯টি। বাংলাদেশের পক্ষে এক সিরিজে সর্বোচ্চ বাউন্ডারির আগের রেকর্ড ছিল ফারজানার, গত বছর ভারতের বিপক্ষে ১৭টি। শারমিনের বিদায়ে ভাঙে ১৪৩ রানের জুটি। চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও শতরানের জুটি গড়েছিলেন শারমিন ও ফারজানা। এই প্রথম এক সিরিজে একাধিক শতরানের জুটি পেল বাংলাদেশ। ফারজানাও অবশ্য ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি। ৬ চারের ইনিংস খেলে ম্যাগুয়েইরের বলে আউট হয়ে যান তিনি। বাকি পথটুকু পাড়ি দেন নিগার ও সোবহানা মোস্তারি। দুই দল এখন খেলবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। সিলেটে ম্যাচ তিনটি হবে আগামী বৃহস্পতিবার, শনিবার ও সোমবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আয়ারল্যান্ড: ৫০ ওভারে ১৮৫ (ফোর্বস ৫, লুইস ৫২, হান্টার ২৩, প্রেন্ডারগাস্ট ২৭, পল ৯, রেমন্ড-হোয়ি ৬, কেলি ১৮, ডালজেল ১৯, মারে ১৩, সারজেন্ট ৭*, ম্যাগুয়েইর ৩; মারুফা ৫-০-১০-০, সুলতানা ১০-২-২৯-২, নাহিদা ১০-০-৫৫-২, রাবেয়া ১০-০-২৭-১, ফাহিমা ১০-০-৪৩-৩, স্বর্ণা ৪-০-১৫-১, রিতু ১-০-৬-০)
বাংলাদেশ: ৩৭.৩ ওভারে ১৮৬/৩ (ফারজানা ৬২,, মুর্শিদা ৮, শারমিন ৭২, নিগার ১৮*, সোবহানা ৭*; প্রেন্ডারগাস্ট ৫-০-১৭-১, সারজেন্ট ৭-০-৩৬-০, মারে ৬-০-৪২-০, কেলি ৫.৩-১-২০-০, ডালজেল ৫-০-২২-০, ম্যাগুয়েইর ৮-০-৩৮-২, ফোর্বস ১-০-১০-০)
ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ বাংলাদেশ ৩-০তে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: শারমিন আক্তার
প্লেয়ার অব দা সিরিজ: ফারজানা হক