ঢাকা ০৭:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

রূপচর্চায় চুনের ব্যবহার

  • আপডেট সময় : ০৫:৪৫:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক: পান খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত চুন ত্বক ও চুলের যত্নেও উপকারী। প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক ও এক্সফোলিয়েটরের মতো কাজ করে এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, ব্রণ ও ফুসকুড়ি কমায়, দাগ-ছোপ হালকা করে এবং স্ক্যাল্পকে পরিষ্কার রাখে। সতর্কভাবে ব্যবহার করলে চুন ত্বক উজ্জ্বল এবং সংক্রমণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

চুন রূপচর্চায় ব্যবহার করবেন যে ভাবে-

চুনের পানি তৈরি
এক চামচ খাওয়ার চুন এক কাপ পানিতে মিশিয়ে রাখুন। ১০-১৫ মিনিট পর উপরের পরিষ্কার পানি ব্যবহার করুন। নিচের দুধ সাদা অংশ ফেলে দিন, কারণ তা ত্বকে জ্বালা বা পোড়া সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

এক্সফোলিয়েশন হিসেবে ব্যবহার করতে
একটি পাত্রে এক চামচ চুন, এক চামচ ব্রাউন সুগার, অ্যালোভেরা জেল ও মধু মিশিয়ে মুখে হালকা ম্যাসাজ করুন। হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তবে যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক বা স্পর্শকাতর, তারা মুখে চুন না মাখলেই ভালো। না হলে ত্বকে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। লাল হয়ে ত্বক ফুলেও যেতে পারে।

অতিরিক্ত তেল দূর করতে
তুলা দিয়ে সামান্য চুনের পানি মুখে লাগিয়ে ৩-৪ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি অতিরিক্ত তেল ও ময়লা দূর করে। এটি সপ্তাহে ১-২ দিন ব্যবহারে যথেষ্ট।

কালচে দাগ হালকা করতে
গলা, কনুই ও হাঁটুর কালচে দাগ হালকা করতে এক চা চামচ চুনের পানি ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট করে দাগে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে দাগ হালকা হয়।

ব্রণ কমাতে
ব্রণ কমাতে চুনের পানিতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ব্রণের উপর লাগিয়ে নিন। এটি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

খুশকি কমাতে
মাথার ত্বকে হালকা চুনের পানি লাগিয়ে ৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি খুশকি কমায় এবং স্ক্যাল্পের জীবাণু দূর করে। সপ্তাহে একবার ব্যবহার করাই যথেষ্ট।

ত্বকের যত্নে কাজ করে যেভাবে
১. চুনের মূল উপাদান ক্যালসিয়াম অক্সাইড, যা একটি ক্ষারধর্মী পদার্থ। ক্ষার ত্বকের উপরের স্তরের মৃত কোষগুলো তুলতে সাহায্য করে। যখন এই মৃত কোষগুলো দূর করা হয়, তখন ত্বক নতুন, তাজা কোষের উপরে আসে।

২. চুনের মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ত্বকে থাকা ক্ষতিকারক জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। ব্রণ এবং ফুসকুড়ির কারণ মূলত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। চুন ব্যবহারের ফলে এই জীবাণু মারা যায় বা কমে যায়, ফলে ত্বক সংক্রমণমুক্ত থাকে।

৩. চুনে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ মাথার ত্বককে পরিষ্কার রাখে। যখন চুনের পানি বা পেস্ট হালকা করে স্ক্যাল্পে লাগানো হয়, এটি অতিরিক্ত তেল এবং ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে। ফলে চুলের ত্বকে ব্যাকটেরিয়া জমতে পারে না, যা মূলত খুশকির কারণ।

সতর্কতা
চুন সরাসরি বা ঘন অবস্থায় ত্বকে লাগানো বিপজ্জনক। চুনাপাথরের গুঁড়া সপ্তাহে একবারই ব্যবহার করুন, কারণ এর কঠোর গুণের কারণে প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য নিরাপদ নয়। সবসময় পানি বা অন্য উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। ব্যবহারের আগে ছোট অংশে পরীক্ষা (প্যাচ টেস্ট) করে নিন, যাতে অ্যালার্জি বা ত্বকের জ্বালা-পোড়া এড়ানো যায়।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

এসি/আপ্র/১৬/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

রূপচর্চায় চুনের ব্যবহার

আপডেট সময় : ০৫:৪৫:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

লাইফস্টাইল ডেস্ক: পান খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত চুন ত্বক ও চুলের যত্নেও উপকারী। প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক ও এক্সফোলিয়েটরের মতো কাজ করে এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, ব্রণ ও ফুসকুড়ি কমায়, দাগ-ছোপ হালকা করে এবং স্ক্যাল্পকে পরিষ্কার রাখে। সতর্কভাবে ব্যবহার করলে চুন ত্বক উজ্জ্বল এবং সংক্রমণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

চুন রূপচর্চায় ব্যবহার করবেন যে ভাবে-

চুনের পানি তৈরি
এক চামচ খাওয়ার চুন এক কাপ পানিতে মিশিয়ে রাখুন। ১০-১৫ মিনিট পর উপরের পরিষ্কার পানি ব্যবহার করুন। নিচের দুধ সাদা অংশ ফেলে দিন, কারণ তা ত্বকে জ্বালা বা পোড়া সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

এক্সফোলিয়েশন হিসেবে ব্যবহার করতে
একটি পাত্রে এক চামচ চুন, এক চামচ ব্রাউন সুগার, অ্যালোভেরা জেল ও মধু মিশিয়ে মুখে হালকা ম্যাসাজ করুন। হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তবে যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক বা স্পর্শকাতর, তারা মুখে চুন না মাখলেই ভালো। না হলে ত্বকে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। লাল হয়ে ত্বক ফুলেও যেতে পারে।

অতিরিক্ত তেল দূর করতে
তুলা দিয়ে সামান্য চুনের পানি মুখে লাগিয়ে ৩-৪ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি অতিরিক্ত তেল ও ময়লা দূর করে। এটি সপ্তাহে ১-২ দিন ব্যবহারে যথেষ্ট।

কালচে দাগ হালকা করতে
গলা, কনুই ও হাঁটুর কালচে দাগ হালকা করতে এক চা চামচ চুনের পানি ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট করে দাগে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে দাগ হালকা হয়।

ব্রণ কমাতে
ব্রণ কমাতে চুনের পানিতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ব্রণের উপর লাগিয়ে নিন। এটি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

খুশকি কমাতে
মাথার ত্বকে হালকা চুনের পানি লাগিয়ে ৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি খুশকি কমায় এবং স্ক্যাল্পের জীবাণু দূর করে। সপ্তাহে একবার ব্যবহার করাই যথেষ্ট।

ত্বকের যত্নে কাজ করে যেভাবে
১. চুনের মূল উপাদান ক্যালসিয়াম অক্সাইড, যা একটি ক্ষারধর্মী পদার্থ। ক্ষার ত্বকের উপরের স্তরের মৃত কোষগুলো তুলতে সাহায্য করে। যখন এই মৃত কোষগুলো দূর করা হয়, তখন ত্বক নতুন, তাজা কোষের উপরে আসে।

২. চুনের মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ত্বকে থাকা ক্ষতিকারক জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। ব্রণ এবং ফুসকুড়ির কারণ মূলত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। চুন ব্যবহারের ফলে এই জীবাণু মারা যায় বা কমে যায়, ফলে ত্বক সংক্রমণমুক্ত থাকে।

৩. চুনে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ মাথার ত্বককে পরিষ্কার রাখে। যখন চুনের পানি বা পেস্ট হালকা করে স্ক্যাল্পে লাগানো হয়, এটি অতিরিক্ত তেল এবং ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে। ফলে চুলের ত্বকে ব্যাকটেরিয়া জমতে পারে না, যা মূলত খুশকির কারণ।

সতর্কতা
চুন সরাসরি বা ঘন অবস্থায় ত্বকে লাগানো বিপজ্জনক। চুনাপাথরের গুঁড়া সপ্তাহে একবারই ব্যবহার করুন, কারণ এর কঠোর গুণের কারণে প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য নিরাপদ নয়। সবসময় পানি বা অন্য উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। ব্যবহারের আগে ছোট অংশে পরীক্ষা (প্যাচ টেস্ট) করে নিন, যাতে অ্যালার্জি বা ত্বকের জ্বালা-পোড়া এড়ানো যায়।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

এসি/আপ্র/১৬/১১/২০২৫