ঢাকা ১০:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

রূপগঞ্জে আগুনে নিহতদের লাশ হস্তান্তর

  • আপডেট সময় : ০১:১০:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অগাস্ট ২০২১
  • ১০৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : কল্পনা বেগমের বয়স ৫০। বগুড়া থেকে সাত বছরের নাতি নয়নকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসেছেন রূপগঞ্জের সেজান সুজের কারখানায় পুড়ে ভস্ম হয়ে যাওয়া মেয়ে নাজমা বেগমের লাশ নিতে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কল্পনা বেগম বলেন, আমার মেয়ের লাশ নিতে এসেছি। গতকাল আমাদের ফোন করা হয়েছিল। নয়নের বয়স সাত বছর হলেও মায়ের মৃত্যু নিয়ে অনেকটা ভাবলেশহীন দেখা যায় শিশুটিকে। মর্গের সামনে নানীর হাত ধরে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে ছিল।
গত ১০ জুলাই রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকা-ে পুড়ে ৪৮ জনের মৃত্যু হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে থাকা ৪৮ জনের মধ্যে বুধবার ২৪ জনের লাশ হাস্তান্তর করা হয়েছে তাদের স্বজনদের কাছে। দুপুর ২টার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ঢাকা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. ইমাম হোসেনের উপস্থিতিতে এ লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন।
যাদের মরদেহ হস্তান্তর করেছে সিআইডি : আগুনে নিহত ৪৮ জনের মধ্যে ৪৫ জনের মরদেহ শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২৪ জনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গ থেকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডি জানায়, সরকারি খরচে মরদেহগুলো স্বজনদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
২৪ জনের মরদেহ হস্তান্তর- মো. আয়াত হোসেন, মো. নাঈম ইসলাম, নুসরাত জাহান টুকটুকি, হিমা আক্তার, মোসা. সাগরিকা শায়লা, খাদেজা আক্তার, মোহাম্মদ আলী, তাকিয়া আক্তার, মোসা. শাহানা আক্তার, মোসা. মিতু আক্তার, জাহানারা, মোসা.ফারজানা, মোসা. ফাতেমা আক্তার, মোসা. নাজমা খাতুন, ইসরাত জাহান তুলি, মোসা. নাজমা বেগম, রাশেদ, মো. রাকিব হোসেন, ফিরোজা, মো. তারেক জিয়া, মো. রিপন মিয়া, মোসা. শাহানা আক্তার, মো. মুন্না ও রিয়া আক্তার।
এ সময় নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম মাহফুজুর রহমান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুর নবী এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এছাড়া হাসেম ফুডসের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল আগেই।
গত ১০ জুলাই অগ্নিকা-ে পুড়ে মারা যান ৪৮ জন। ওই ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা করেন ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন। পরে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।
ওই মামলায় পুলিশ সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম, হাসীব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম, তানজীম ইব্রাহীম, সিইও শাহেন শান আজাদ, উপ-মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে।
তাদের চার দিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়। এরইমধ্যে ১৪ জুলাই চেয়ারম্যান হাসেমের দুই ছেলে তাওসীব ইব্রাহীম ও তানজীম ইব্রাহীম আদালত থেকে জামিন পান। আর বাকি ৬ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নির্বাচন ভণ্ডুল করার অপচেষ্টাকে রুখে দিতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

রূপগঞ্জে আগুনে নিহতদের লাশ হস্তান্তর

আপডেট সময় : ০১:১০:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : কল্পনা বেগমের বয়স ৫০। বগুড়া থেকে সাত বছরের নাতি নয়নকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসেছেন রূপগঞ্জের সেজান সুজের কারখানায় পুড়ে ভস্ম হয়ে যাওয়া মেয়ে নাজমা বেগমের লাশ নিতে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কল্পনা বেগম বলেন, আমার মেয়ের লাশ নিতে এসেছি। গতকাল আমাদের ফোন করা হয়েছিল। নয়নের বয়স সাত বছর হলেও মায়ের মৃত্যু নিয়ে অনেকটা ভাবলেশহীন দেখা যায় শিশুটিকে। মর্গের সামনে নানীর হাত ধরে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে ছিল।
গত ১০ জুলাই রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকা-ে পুড়ে ৪৮ জনের মৃত্যু হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে থাকা ৪৮ জনের মধ্যে বুধবার ২৪ জনের লাশ হাস্তান্তর করা হয়েছে তাদের স্বজনদের কাছে। দুপুর ২টার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ঢাকা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. ইমাম হোসেনের উপস্থিতিতে এ লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন।
যাদের মরদেহ হস্তান্তর করেছে সিআইডি : আগুনে নিহত ৪৮ জনের মধ্যে ৪৫ জনের মরদেহ শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২৪ জনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গ থেকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডি জানায়, সরকারি খরচে মরদেহগুলো স্বজনদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
২৪ জনের মরদেহ হস্তান্তর- মো. আয়াত হোসেন, মো. নাঈম ইসলাম, নুসরাত জাহান টুকটুকি, হিমা আক্তার, মোসা. সাগরিকা শায়লা, খাদেজা আক্তার, মোহাম্মদ আলী, তাকিয়া আক্তার, মোসা. শাহানা আক্তার, মোসা. মিতু আক্তার, জাহানারা, মোসা.ফারজানা, মোসা. ফাতেমা আক্তার, মোসা. নাজমা খাতুন, ইসরাত জাহান তুলি, মোসা. নাজমা বেগম, রাশেদ, মো. রাকিব হোসেন, ফিরোজা, মো. তারেক জিয়া, মো. রিপন মিয়া, মোসা. শাহানা আক্তার, মো. মুন্না ও রিয়া আক্তার।
এ সময় নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম মাহফুজুর রহমান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুর নবী এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এছাড়া হাসেম ফুডসের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল আগেই।
গত ১০ জুলাই অগ্নিকা-ে পুড়ে মারা যান ৪৮ জন। ওই ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা করেন ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন। পরে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।
ওই মামলায় পুলিশ সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম, হাসীব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম, তানজীম ইব্রাহীম, সিইও শাহেন শান আজাদ, উপ-মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে।
তাদের চার দিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়। এরইমধ্যে ১৪ জুলাই চেয়ারম্যান হাসেমের দুই ছেলে তাওসীব ইব্রাহীম ও তানজীম ইব্রাহীম আদালত থেকে জামিন পান। আর বাকি ৬ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।