ঢাকা ০২:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

রুমে ডেকে শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ

  • আপডেট সময় : ১১:৫২:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে রুমে ডেকে এনে মারধর করে ২০ হাজার টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত শুক্রবার বিকালে হলটির ২৩২ নম্বরে কক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূরের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সামছুল ইসলাম। তারেক নূর বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অভিযোগপত্রটি প্রক্টর অফিসে পাঠিয়েছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সামছুল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের ও মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের মুখে থাকা ভাস্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের একই বর্ষের শিক্ষার্থী। লিখিত অভিযোগে সামছুল জানান, শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। এ বিষয়ে কাউকে কিছু জানালে ‘বুয়েটের আবরারে’র মতো পরিণতির হবে বলে হুমকিও তাকে দেওয়া হয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি সামছুল নিজ হলে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করেন। সেই অর্থ দিয়েই তার পরিবার চলে। সেবাগ্রহীতাদের কাজের বিনিময়ে দেওয়া অগ্রিম ও নিজের জমানো টাকা তারা কেড়ে নিয়েছে বলে দাবি তার।
ঘটনার বর্ণনায় একটি সংস্থার কাছে অর্থনীতির এ শিক্ষার্থী বলেন, “শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে ভাস্কর আমাকে ওর রুমে দেখা করতে বলে। রুমে গেলে আমার কাছে সে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এ সময় টাকা দিতে না চাইলে ভাস্করসহ আরও দুইজন আমাকে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর শুরু করে। পরে গলায় ধারালো ছুরি ধরে জোর করে আমার কাছে প্রায় ২০ হাজার টাকা কেড়ে নেয়।“
গত ১৫ আগস্টও ভাস্কর তার কাছে চাঁদা দাবি করেছিল বলে অভিযোগ সামছুলের। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভাস্কর বলেন, “আমার বিরুদ্ধে সামছুলের করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটে নাই। ও আমার বন্ধু, বেশ কিছুদিন আগে আমার দুই সহপাঠী আমার কাছে মোবাইল সার্ভিসিং-এর ব্যাপারে জানতে চেয়েছিল। তখন আমি সামছুলকে বলেছিলাম, তাদের যেনো সহায়তা করে। “যারাই আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করতে ইন্ধন জুগিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।” যোগ করেন এ ছাত্রলীগ নেতা।
মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নির্যাতনের ঘটনা প্রক্টরের কাছ থেকে জানার পরপরই হলে গিয়েছি। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ওই শিক্ষার্থীর সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।”
প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, “এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক আরিফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, “আমি খোঁজ নিচ্ছি। সত্যতা পেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রুমে ডেকে শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ

আপডেট সময় : ১১:৫২:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে রুমে ডেকে এনে মারধর করে ২০ হাজার টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত শুক্রবার বিকালে হলটির ২৩২ নম্বরে কক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূরের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সামছুল ইসলাম। তারেক নূর বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অভিযোগপত্রটি প্রক্টর অফিসে পাঠিয়েছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সামছুল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের ও মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের মুখে থাকা ভাস্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের একই বর্ষের শিক্ষার্থী। লিখিত অভিযোগে সামছুল জানান, শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। এ বিষয়ে কাউকে কিছু জানালে ‘বুয়েটের আবরারে’র মতো পরিণতির হবে বলে হুমকিও তাকে দেওয়া হয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি সামছুল নিজ হলে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করেন। সেই অর্থ দিয়েই তার পরিবার চলে। সেবাগ্রহীতাদের কাজের বিনিময়ে দেওয়া অগ্রিম ও নিজের জমানো টাকা তারা কেড়ে নিয়েছে বলে দাবি তার।
ঘটনার বর্ণনায় একটি সংস্থার কাছে অর্থনীতির এ শিক্ষার্থী বলেন, “শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে ভাস্কর আমাকে ওর রুমে দেখা করতে বলে। রুমে গেলে আমার কাছে সে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এ সময় টাকা দিতে না চাইলে ভাস্করসহ আরও দুইজন আমাকে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর শুরু করে। পরে গলায় ধারালো ছুরি ধরে জোর করে আমার কাছে প্রায় ২০ হাজার টাকা কেড়ে নেয়।“
গত ১৫ আগস্টও ভাস্কর তার কাছে চাঁদা দাবি করেছিল বলে অভিযোগ সামছুলের। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভাস্কর বলেন, “আমার বিরুদ্ধে সামছুলের করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটে নাই। ও আমার বন্ধু, বেশ কিছুদিন আগে আমার দুই সহপাঠী আমার কাছে মোবাইল সার্ভিসিং-এর ব্যাপারে জানতে চেয়েছিল। তখন আমি সামছুলকে বলেছিলাম, তাদের যেনো সহায়তা করে। “যারাই আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করতে ইন্ধন জুগিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।” যোগ করেন এ ছাত্রলীগ নেতা।
মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নির্যাতনের ঘটনা প্রক্টরের কাছ থেকে জানার পরপরই হলে গিয়েছি। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ওই শিক্ষার্থীর সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।”
প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, “এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক আরিফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, “আমি খোঁজ নিচ্ছি। সত্যতা পেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”