ক্রীড়া ডেস্ক: আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে লড়াই হলো জমজমাট। ৯০ মিনিটে দুইবার, অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে তিনবার এগিয়ে গেল স্পেন। প্রতিবার লড়াইয়ে ফিরে ম্যাচ টাইব্রেকারে টেনে নিল নেদারল্যান্ডস। সেখানেও লড়াই হলো দারুণ, শেষ পর্যন্ত অবশ্য পেরে উঠল না ডাচরা। উয়েফা নেশন্স লিগের সেমি-ফাইনালে উঠল স্প্যানিশরা। ভালেন্সিয়ায় রোববার রাতে কোয়ার্টার-ফাইনালের ফিরতি লেগে ৩-৩, দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৫ ড্র হয়। পরে পেনাল্টি শুটআউটে ৫-৪ গোলের জয় পায় স্পেন। মূল ম্যাচে স্পেনের হয়ে জোড়া গোল করেন মিকেল ওইয়ারসাবাল, একটি করেন লামিনে ইয়ামাল।
নেদারল্যান্ডসের হয়ে একবার করে জালের দেখা পান মেমফিস ডিপাই, ইয়ান মাটসেন ও শাভি সিমন্স। টাইব্রেকারে দুই দলেরই প্রথম তিনটি করে শট খুঁজে পায় ঠিকানা। নেদারল্যান্ডসের নোয়া ল্যাংয়ের নেওয়া চতুর্থ শট লাগে ক্রসবারে। স্পেনের ইয়ামালের শট ঠেকান গোলরক্ষক। পঞ্চম শটে গোল পায় দুই দলই। এরপর ডোনিয়েল মালেনের শট ঠেকান স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমোন। পেদ্রি জালে বল পাঠাতেই উল্লাসে মাতে স্বাগতিক শিবির। প্রথম লেগে শেষ দিকের গোলে হার এড়ানো স্পেন এবার অষ্টম মিনিটে ওইয়ারসাবালের সফল স্পট কিকে এগিয়ে যায়। এই ফরোয়ার্ড নিজেই নেদারল্যান্ডসের বক্সে ফাউলের শিকার হওয়ায় পেনাল্টি পেয়েছিল স্বাগতিকরা। একাদশ মিনিটে দ্বিগুণ হতে পারত ব্যবধান। ইয়ামালের চমৎকার পাস ধরে বল জালে পাঠান ওইয়ারসাবাল, তবে অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। পরের মিনিটে নিকো উইলিয়ামসের শট ঠেকান গোলরক্ষক বার্ট ভেরব্রুখেন। প্রতিপক্ষের আক্রমণের ঝাঁপটা সামলে গুছিয়ে ওঠার চেষ্টা করে নেদারল্যান্ডস। তবে প্রথমার্ধে স্পেনের গোলরক্ষকের পরীক্ষা সেভাবে নিতে পারেনি সফরকারীরা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দারুণ এক সেভে জাল অক্ষত রাখেন সিমোন। বক্সের বাঁ দিক থেকে জাস্টিন ক্লাইভার্টের শট ফিরিয়ে দেন তিনি। ৫৪তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরান ডিপাই। বক্সে তাকেই স্পেনের ডিফেন্ডার রবিন লে নরম্যান্ড ফাউল করায় পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি।
নেদারল্যান্ডসের হয়ে শততম ম্যাচ খেলতে নেমে ডিপাইয়ের গোল হলো ৪৭টি, দেশের সর্বোচ্চ গোলদাতা রবিন ফন পার্সির থেকে তিন গোল পেছনে আছেন তিনি। দারুণ এক পাল্টা-আক্রমণে ৬৭তম মিনিটে আবার এগিয়ে যায় স্পেন। উইলিয়ামসের পাস বক্সে পেয়ে ওইয়ারসাবালের প্রথম প্রচেষ্টা রুখে দেন আগুয়ান গোলরক্ষক, ফিরতি বল হেডে জালে পাঠান রেয়াল সোসিয়েদাদের এই ফরোয়ার্ড। অভিষিক্ত ডিফেন্ডার মাটসেনের দারুণ গোলে ৭৯তম মিনিটে দ্বিতীয় দফায় সমতায় ফেরে নেদারল্যান্ডস। বক্সের বাইরে থেকে জোরাল কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।
অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচের ১০৩তম মিনিটে স্পেনকে তৃতীয়বারের মতো লিড এনে দেন ইয়ামাল। মাঝমাঠ থেকে ডিন হাউসেনের উঁচু করে বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে, ডিফেন্ডার মাটসেনের বাধা এড়িয়ে বাঁ পায়ের শটে দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন বার্সেলোনার তরুণ উইঙ্গার। সেই স্বস্তি বেশিক্ষণ থাকেনি তাদের। ১০৯তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে স্কোরলাইন ৩-৩ ও দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৫ করেন শাভি সিমন্স। তাকে গোলরক্ষক সিমোন ফাউল করায় পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে ডোনিয়েল মালেনের জোরাল শট ঠেকান সিমোন। পরে টাইব্রেকারেও মালেনের শট ঠেকিয়ে শেষের নায়ক তিনিই।