ঢাকা ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

ব্যতিক্রমী সম্পর্কের নজির গড়ে সুন্দরবনের দুই তরুণীর বিয়ে

  • আপডেট সময় : ০৬:০০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: সমকামী ভালোবাসায় আচ্ছন্ন হয়ে বিয়ে করলেন দুই তরুণী। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাতে সাত পাকে বাঁধা পড়েছেন ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের মন্দিরবাজার থাকা এলাকার রিয়া সর্দার এবং কুলতলি ব্লকের বকুলতলার বাসিন্দা রাখি নস্কর। তবে তাঁদের ‘অন্য ভালোবাসায়’ কোনও মতবিরোধ দেখায়নি এলাকা বাসীরা, বরং তাদের বিয়ের দেওয়ায় ব্যাপক অবদান রেখেছে স্থানীয় একটি ক্লাব। ক্লাব কর্তৃপক্ষের সহায়তায় মঙ্গলবার একটি মন্দিরে বিয়ে করেছেন দুই তরুণী। বিয়ের পর তাঁরা বলেছেন, ‘জীবনের পথে চলতে গেলে ভালবাসাটাই আসল। কাকে ভালবাসছি বড় কথা নয়।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ছোটবেলাতেই রিয়ার মা-বাবা মারা গিয়েছেন। মাসি-মেসোর কাছে মানুষ সে। আর রাখি বেড়ে উঠেছেন একান্নবর্তী পরিবারে। দু’জনেই পেশায় নৃত্যশিল্পী। কিন্তু তাঁদের ফোনে আলাপ হয়েছিল। সেখান থেকে বন্ধুত্ব এবং প্রেমের সূত্রপাত। এরপর দুই যুবতী সিদ্ধান্ত নেন একসঙ্গে থাকবেন। তবে তাদের সমকামী ভালবাসা, সমাজ মেনে নেবে না, সেটাও জানতেন। আসবে কটাক্ষের ঝড়। কিন্তু তবুও একসঙ্গে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। একে অপরের পাশ থেকে সরে দাঁড়ান নি। শেষমেশ মঙ্গলবার ভয়, সঙ্কোচকে দূরে রেখে সাতপাকে বাঁধা পড়েন সুন্দরবনের দুই যুবতী। জয় হয় তাঁদের ভালোবাসার। মেনে না নেওয়া তো দূরের কথা, বরং পাড়ার বড়রাই তাঁদের চারহাত এক করে দেয়।

রিয়া জানিয়েছেন, তাঁদের সম্পর্কের কথা বাড়িতে জানালেও কেউ মেনে নেননি। কিন্তু ভালবাসার মানুষের হাত ছাড়েন নি তিনি। তাই বাড়ি ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। রাখির বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। তবে রাখির পরিবার তাঁদের সম্পর্কে বাধা দেয়নি। তাঁরাই প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলোচনা করে দুই যুবতীর বিয়ের ব্যবস্থা করে স্থানীয় মন্দিরে। অবশেষে মঙ্গলবার সাতপাকে ঘুরে, মালাবদল সেরে নতুন জীবন শুরু করেন রিয়া ও রাখি। বিয়ের পর রাখি জানিয়েছেন, ‘আমাদের ২ বছরের সম্পর্ক। ফোনে পরিচয় হয়েছিল। অনেকেই বলেছিল মেয়ে-মেয়ে আবার সম্পর্ক কী! কিন্তু আমরা শুরু থেকেই একসঙ্গেই থাকব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার বাড়িতে সকলে মেনে নিয়েছেন। তবে রিয়ার বাড়িতে আমাদের সম্পর্কটা মানতে পারছিল না। তাই সে আমার বাড়িতেই চলে আসে।’ আর দুই মেয়ের সিঁদুরদান, সাতপাক বাঁধা দেখার জন্যে স্থানীয় অনেকেই উপস্থিত ছিলেন তাদের বিয়েতে।

ওআ/আপ্র/০৫/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ব্যতিক্রমী সম্পর্কের নজির গড়ে সুন্দরবনের দুই তরুণীর বিয়ে

আপডেট সময় : ০৬:০০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: সমকামী ভালোবাসায় আচ্ছন্ন হয়ে বিয়ে করলেন দুই তরুণী। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাতে সাত পাকে বাঁধা পড়েছেন ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের মন্দিরবাজার থাকা এলাকার রিয়া সর্দার এবং কুলতলি ব্লকের বকুলতলার বাসিন্দা রাখি নস্কর। তবে তাঁদের ‘অন্য ভালোবাসায়’ কোনও মতবিরোধ দেখায়নি এলাকা বাসীরা, বরং তাদের বিয়ের দেওয়ায় ব্যাপক অবদান রেখেছে স্থানীয় একটি ক্লাব। ক্লাব কর্তৃপক্ষের সহায়তায় মঙ্গলবার একটি মন্দিরে বিয়ে করেছেন দুই তরুণী। বিয়ের পর তাঁরা বলেছেন, ‘জীবনের পথে চলতে গেলে ভালবাসাটাই আসল। কাকে ভালবাসছি বড় কথা নয়।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ছোটবেলাতেই রিয়ার মা-বাবা মারা গিয়েছেন। মাসি-মেসোর কাছে মানুষ সে। আর রাখি বেড়ে উঠেছেন একান্নবর্তী পরিবারে। দু’জনেই পেশায় নৃত্যশিল্পী। কিন্তু তাঁদের ফোনে আলাপ হয়েছিল। সেখান থেকে বন্ধুত্ব এবং প্রেমের সূত্রপাত। এরপর দুই যুবতী সিদ্ধান্ত নেন একসঙ্গে থাকবেন। তবে তাদের সমকামী ভালবাসা, সমাজ মেনে নেবে না, সেটাও জানতেন। আসবে কটাক্ষের ঝড়। কিন্তু তবুও একসঙ্গে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। একে অপরের পাশ থেকে সরে দাঁড়ান নি। শেষমেশ মঙ্গলবার ভয়, সঙ্কোচকে দূরে রেখে সাতপাকে বাঁধা পড়েন সুন্দরবনের দুই যুবতী। জয় হয় তাঁদের ভালোবাসার। মেনে না নেওয়া তো দূরের কথা, বরং পাড়ার বড়রাই তাঁদের চারহাত এক করে দেয়।

রিয়া জানিয়েছেন, তাঁদের সম্পর্কের কথা বাড়িতে জানালেও কেউ মেনে নেননি। কিন্তু ভালবাসার মানুষের হাত ছাড়েন নি তিনি। তাই বাড়ি ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। রাখির বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। তবে রাখির পরিবার তাঁদের সম্পর্কে বাধা দেয়নি। তাঁরাই প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলোচনা করে দুই যুবতীর বিয়ের ব্যবস্থা করে স্থানীয় মন্দিরে। অবশেষে মঙ্গলবার সাতপাকে ঘুরে, মালাবদল সেরে নতুন জীবন শুরু করেন রিয়া ও রাখি। বিয়ের পর রাখি জানিয়েছেন, ‘আমাদের ২ বছরের সম্পর্ক। ফোনে পরিচয় হয়েছিল। অনেকেই বলেছিল মেয়ে-মেয়ে আবার সম্পর্ক কী! কিন্তু আমরা শুরু থেকেই একসঙ্গেই থাকব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার বাড়িতে সকলে মেনে নিয়েছেন। তবে রিয়ার বাড়িতে আমাদের সম্পর্কটা মানতে পারছিল না। তাই সে আমার বাড়িতেই চলে আসে।’ আর দুই মেয়ের সিঁদুরদান, সাতপাক বাঁধা দেখার জন্যে স্থানীয় অনেকেই উপস্থিত ছিলেন তাদের বিয়েতে।

ওআ/আপ্র/০৫/১১/২০২৫