ঢাকা ১০:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

রিয়াল মাদ্রিদকে উড়িয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে পিএসজি

  • আপডেট সময় : ০৭:৫৪:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: থিবো কোর্তোয়ার চমৎকার দুটি সেভের পরও ২৪ মিনিটের মধ্যে তিন গোলে পিছিয়ে পড়ল রিয়াল মাদ্রিদ। পিএসজির গোছানো আক্রমণাত্মক ফুটবলের সামনে খুঁজেই পাওয়া গেল না শাবি আলোন্সোর দলকে। দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় একটু উন্নতি করলেও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের চ্যালেঞ্জই জানাতে পারল না তারা। ক্লাব বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে বুধবার ৪-০ গোলে হেরেছে রেয়াল। জোড়া গোল করেছেন ফাবিয়ান রুইস, একটি করে গোল করেছেন উসমান দেম্বেলে ও গন্সালো রামোস।

 

ভীষণ হতাশার মৌসুমে ট্রফি শূন্যই থাকল ই্উরোপের সফলতম দলটি। এর বিপরীত অবস্থা পিএসজির। আরাধ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পর এবার লুইস এনরিকের দলের সামনে সুযোগ আরেকটি শিরোপা প্রথমবারের মতো জয়ের। আগামী রোববার নতুন আঙ্গিকের ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে চেলসির মুখোমুখি হবে পিএসজি। প্রথম চার মিনিটে দুটি দুর্দান্ত সেভ করেন থিবো কোর্তোয়া। কিন্তু তার ডিফেন্ডারদের নিদারুণ ব্যর্থতায় পরের পাঁচ মিনিটে জোড়া গোল করে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় পিএসজি। নিজেদের পেনাল্টি স্পটের কাছে বল পেয়ে ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেননি রেয়ালের সেন্টার-ব্যাক রাউল আসেন্সিও। বল কেড়ে নিয়ে এগিয়ে যান দেম্বেল। ছুটে গিয়ে তাকে কড়া ট্যাকল করে বসেন কোর্তোয়া। বলের নাগাল পাননি বেলজিয়ান গোলরক্ষক, সেটি পেয়ে যান রুইস। অরক্ষিত স্প্যানিশ মিডফিল্ডার অনায়াসে খুঁজে নেন ফাঁকা জাল।
ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই আরেক সেন্টার-ব্যাক আন্টোনিও রুডিগারের মারাত্মক ভুলে আরও পিছিয়ে পড়ে রিয়াল।

 

নিজেদের অর্ধে বল পেয়ে শট নিতে পারেননি জার্মান ডিফেন্ডার। পেছন থেকে ছুটে গিয়ে বল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আড়াআড়ি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ফরাসি ফরোয়ার্ড দেম্বেলে। যানজটের জন্য দুই দল ২০ মিনিট দেরিতে আসায়, ১০ মিনিটে দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে রেয়াল শুরু করেছিল অনেকটা যেন ঘরের মাঠে খেলার অনুভূতি নিয়ে। গ্যালারিতে আধিক্য ছিল তাদের সমর্থকদের। কিন্তু শুরুর দুই গোলে তাদের মাঝে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা।

২৪তম মিনিটে তাদের যেন শোকের সাগরে ডুবান রুইস। ‘ওয়ান টাচ’ আক্রমণের দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে রেয়ালের রক্ষণকে পুরোপুরি অকার্যকর করে ফেলে পিএসজি। পেনাল্টি স্পটের কাছে আশরাফ হাকিমির চমৎকার পাস পেয়ে, ফেদে ভালভের্দের চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে ঠা-া মাথায় নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোলটি করেন রুইস। পিএসজির রক্ষণে পাল্টা চাপ তৈরি করা দূরের কথা, বলের নাগালও পাচ্ছিল না রেয়াল। প্রায় ৮০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে আক্রমণ করে যাচ্ছিল পিএসজি। ৩৯তম মিনিটে ব্যবধান আরও প্রায় বাড়িয়েই ফেলছিল তারা। একটুর জন্য শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি খাভিচা কাভারাৎস্খেলিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে ৪৭তম মিনিটে রেয়ালের জালে বল পাঠান দিজিরে দুয়ে। কিন্তু অফসাইডের জন্য মেলেনি গোল। এর ১০ মিনিট পর দেম্বেলে ও কাভারাৎস্খেলিয়াকে তুলে নেন পিএসজি কোচ। আর ৬১তম মিনিটে জুড বেলিংহ্যামের জায়গায় লুকা মদ্রিচকে নামান রেয়াল কোচ আলোন্সো।

ফাইনালের কথা মাথায় রেখে দ্বিতীয়ার্ধে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের তুলে নেন পিএসজি কোচ। বিরতির পর বেশ উন্নতি করলে রেয়াল গোলের তেমন নিশ্চিত কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি। ৭০তম মিনিটে মাঠে আসেন রেয়ালের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার দানি কার্ভাহাল। গত অক্টোবরের পর এই প্রথম খেলতে নামলেন স্প্যানিশ রাইট-ব্যাক। একপেশে ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ান রামোস। খুব কাছ থেকে গতিময় শটে জাল খুঁজে নেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। গোল উদযাপনে তিনি স্মরণ করেন মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো জাতীয় দলের সতীর্ধ দিয়োগো জটাকে। পিএসজি ছাড়ার পর প্রথমবার নিজের সাবেক দলের মুখোমুখি হয়ে তেমন কিছুই করতে পারেননি কিলিয়ান এমবাপে। ফরাসি ক্লাবটির রেকর্ড গোলদাতার মতোই নিজের ছায়া হয়েছিলেন ভিনিসিউস জুনিয়র। এই ম্যাচ দিয়ে রেয়াল মাদ্রিদ অধ্যায় শেষ হলো মদ্রিচ ও লুকাস ভাসকেসের। দলের এমন ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সে নতুন মৌসুমের আগে নিশ্চয় জেগে ওঠার বার্তা পেলেন নতুন কোচ আলোন্সো।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রিয়াল মাদ্রিদকে উড়িয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে পিএসজি

আপডেট সময় : ০৭:৫৪:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক: থিবো কোর্তোয়ার চমৎকার দুটি সেভের পরও ২৪ মিনিটের মধ্যে তিন গোলে পিছিয়ে পড়ল রিয়াল মাদ্রিদ। পিএসজির গোছানো আক্রমণাত্মক ফুটবলের সামনে খুঁজেই পাওয়া গেল না শাবি আলোন্সোর দলকে। দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় একটু উন্নতি করলেও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের চ্যালেঞ্জই জানাতে পারল না তারা। ক্লাব বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে বুধবার ৪-০ গোলে হেরেছে রেয়াল। জোড়া গোল করেছেন ফাবিয়ান রুইস, একটি করে গোল করেছেন উসমান দেম্বেলে ও গন্সালো রামোস।

 

ভীষণ হতাশার মৌসুমে ট্রফি শূন্যই থাকল ই্উরোপের সফলতম দলটি। এর বিপরীত অবস্থা পিএসজির। আরাধ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পর এবার লুইস এনরিকের দলের সামনে সুযোগ আরেকটি শিরোপা প্রথমবারের মতো জয়ের। আগামী রোববার নতুন আঙ্গিকের ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে চেলসির মুখোমুখি হবে পিএসজি। প্রথম চার মিনিটে দুটি দুর্দান্ত সেভ করেন থিবো কোর্তোয়া। কিন্তু তার ডিফেন্ডারদের নিদারুণ ব্যর্থতায় পরের পাঁচ মিনিটে জোড়া গোল করে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় পিএসজি। নিজেদের পেনাল্টি স্পটের কাছে বল পেয়ে ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেননি রেয়ালের সেন্টার-ব্যাক রাউল আসেন্সিও। বল কেড়ে নিয়ে এগিয়ে যান দেম্বেল। ছুটে গিয়ে তাকে কড়া ট্যাকল করে বসেন কোর্তোয়া। বলের নাগাল পাননি বেলজিয়ান গোলরক্ষক, সেটি পেয়ে যান রুইস। অরক্ষিত স্প্যানিশ মিডফিল্ডার অনায়াসে খুঁজে নেন ফাঁকা জাল।
ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই আরেক সেন্টার-ব্যাক আন্টোনিও রুডিগারের মারাত্মক ভুলে আরও পিছিয়ে পড়ে রিয়াল।

 

নিজেদের অর্ধে বল পেয়ে শট নিতে পারেননি জার্মান ডিফেন্ডার। পেছন থেকে ছুটে গিয়ে বল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আড়াআড়ি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ফরাসি ফরোয়ার্ড দেম্বেলে। যানজটের জন্য দুই দল ২০ মিনিট দেরিতে আসায়, ১০ মিনিটে দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে রেয়াল শুরু করেছিল অনেকটা যেন ঘরের মাঠে খেলার অনুভূতি নিয়ে। গ্যালারিতে আধিক্য ছিল তাদের সমর্থকদের। কিন্তু শুরুর দুই গোলে তাদের মাঝে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা।

২৪তম মিনিটে তাদের যেন শোকের সাগরে ডুবান রুইস। ‘ওয়ান টাচ’ আক্রমণের দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে রেয়ালের রক্ষণকে পুরোপুরি অকার্যকর করে ফেলে পিএসজি। পেনাল্টি স্পটের কাছে আশরাফ হাকিমির চমৎকার পাস পেয়ে, ফেদে ভালভের্দের চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে ঠা-া মাথায় নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোলটি করেন রুইস। পিএসজির রক্ষণে পাল্টা চাপ তৈরি করা দূরের কথা, বলের নাগালও পাচ্ছিল না রেয়াল। প্রায় ৮০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে আক্রমণ করে যাচ্ছিল পিএসজি। ৩৯তম মিনিটে ব্যবধান আরও প্রায় বাড়িয়েই ফেলছিল তারা। একটুর জন্য শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি খাভিচা কাভারাৎস্খেলিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে ৪৭তম মিনিটে রেয়ালের জালে বল পাঠান দিজিরে দুয়ে। কিন্তু অফসাইডের জন্য মেলেনি গোল। এর ১০ মিনিট পর দেম্বেলে ও কাভারাৎস্খেলিয়াকে তুলে নেন পিএসজি কোচ। আর ৬১তম মিনিটে জুড বেলিংহ্যামের জায়গায় লুকা মদ্রিচকে নামান রেয়াল কোচ আলোন্সো।

ফাইনালের কথা মাথায় রেখে দ্বিতীয়ার্ধে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের তুলে নেন পিএসজি কোচ। বিরতির পর বেশ উন্নতি করলে রেয়াল গোলের তেমন নিশ্চিত কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি। ৭০তম মিনিটে মাঠে আসেন রেয়ালের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার দানি কার্ভাহাল। গত অক্টোবরের পর এই প্রথম খেলতে নামলেন স্প্যানিশ রাইট-ব্যাক। একপেশে ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ান রামোস। খুব কাছ থেকে গতিময় শটে জাল খুঁজে নেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। গোল উদযাপনে তিনি স্মরণ করেন মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো জাতীয় দলের সতীর্ধ দিয়োগো জটাকে। পিএসজি ছাড়ার পর প্রথমবার নিজের সাবেক দলের মুখোমুখি হয়ে তেমন কিছুই করতে পারেননি কিলিয়ান এমবাপে। ফরাসি ক্লাবটির রেকর্ড গোলদাতার মতোই নিজের ছায়া হয়েছিলেন ভিনিসিউস জুনিয়র। এই ম্যাচ দিয়ে রেয়াল মাদ্রিদ অধ্যায় শেষ হলো মদ্রিচ ও লুকাস ভাসকেসের। দলের এমন ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সে নতুন মৌসুমের আগে নিশ্চয় জেগে ওঠার বার্তা পেলেন নতুন কোচ আলোন্সো।