নিজস্ব প্রতিবেদক : তুরস্কের বাদামি-সাদা, ভারতের গোলাপি লাল, পাকিস্তানি কালচে-লাল, দেশি সোনালি পেঁয়াজ বর্তমান বাজারে ক্রেতাদের টানছে। বড় ছোট মাঝারি পেঁয়াজ আলাদা করে রাখা। খুচরায় ৭৫-৮০-৮৫ টাকার পেঁয়াজ। এর মধ্যে চামড়া বা খোসা ছাড়া নিম্নমানের পেঁয়াজ ৫০ টাকা। চট্টগ্রাম মহানগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের ১৮ নম্বর ইলেকট্রিক লেনের মেসার্স ফাইজান বাণিজ্যলয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে দেখা যায় এই দৃশ্য। সারি সারি পেঁয়াজের বস্তা এ দোকানে। কিছু পেঁয়াজ রাখা হয়েছে বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসের মধ্যে। দম ফেলার ফুরসত নেই বিক্রয়কর্মীদের। তার মধ্যেই একজন বললেন, পুরো বাজারে আমরাই কমদামে খুচরায় পেঁয়াজ বিক্রি করি। সব ধরনের পেঁয়াজ আছে। ভারতের পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। মান ও আকার ভেদে ৮৫-৯০ টাকা কেজি। এরপর বড় আকারের পাকিস্তানি লাল পেঁয়াজ ও তুরস্কের বাদামি চামড়ায় মোড়ানো সাদা পেঁয়াজের কদর, প্রতিকেজি ৭৫-৮০ টাকা। রিয়াজউদ্দিন বাজারে দেশি পেঁয়াজ খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি। সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ভারত ছাড়াও চীন, মিশর, পাকিস্তান, কাতার, তুরস্ক, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে পেঁয়াজ এসেছিল। এবারও মিয়ানমার থেকে কিছু পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল খাতুনগঞ্জে। এবার জুলাই-আগস্ট দুই মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে নেমেছে ৪ হাজার ৭০০ টন পেঁয়াজ। ফাইজান বাণিজ্যালয়ে পেঁয়াজ কিনতে আসেন ঘরোয়া ক্যাটারিং সার্ভিসের কর্ণধার রেশমী আকতার। তিনি বলেন, সবজি, মাছ, মাংস, ভর্তা, ভাজি কিছুই পেঁয়াজ ছাড়া সুস্বাদু হয় না। এখানে বিভিন্ন দেশের বড় ছোট সব ধরনের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। টেবিলের নিচে কিছু খোসা ছাড়ানো ভালো মানের পেঁয়াজ দেখে ৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়েছি। তিনি জানান, সাদা পেঁয়াজগুলো স্যুপসহ চাইনিজ খাবারের উপযোগী। পাকিস্তানি পেঁয়াজগুলো লাল রঙের, মাঝারি ও বড় আকারের। এগুলো হোটেল রেস্টুরেন্টে বেশি চলছে। তরকারিতে একটু কালচে দেখালেও সালাদে বেশ ঝাঁজ লাগে। শুধু এক দোকানে নয়, পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর, দেশের ভোগ্যপণ্যের বড় বাজার খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই, পাহাড়তলী, কামাল বাজারসহ প্রায় সব আড়তে। অলিগলিতেও ভালো মানের ভারতীয় পেঁয়াজ রিকশাভ্যানে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। তবে খুচরা দোকানে ভারতের পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকাই। পাকিস্তান, চীন, তুরস্ক থেকে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত (রেফার) কনটেইনারে পেঁয়াজ আসছে চট্টগ্রাম বন্দরে। আমদানি করা পেঁয়াজে পোকামাকড়, রোগবালাই ইত্যাদি দেখে ছাড়পত্র দিয়ে থাকে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র। এ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহ আলম বাংলানিউজকে জানান, সোমবার (২৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১৭৪ টন পেঁয়াজ খালাস হয়েছে। এগুলো তুরস্ক থেকে আমদানি হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে পাকিস্তান থেকে ৬০০ টনের বেশি পেঁয়াজ এসেছিল বন্দরে। ১-২৫ নভেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খালাস হয়েছে ২ হাজার ২২১ টন পেঁয়াজ। তিনি বলেন, পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য হওয়ায় দ্রুততম সময়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ছাড়পত্র দিয়ে থাকি আমরা। আমদানির পাইপলাইনে আরও পেঁয়াজ আছে। খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের বড় পাইকারি বিপণিকেন্দ্র হামিদুল্লাহ মার্কেট। এ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, দুই দিন আগেও ভারতের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৮০-৮৫ টাকা কেজি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারপ্রধানের বক্তব্যের পর পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়ে ৮৫-৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
রিয়াজউদ্দিন বাজার চার দেশের পেঁয়াজ কেজি ৭৫-৮৫ টাকা
জনপ্রিয় সংবাদ