ঢাকা ১১:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

রায়হানকে ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করেন এসআই আকবরসহ ৪ পুলিশ: পিবিআই

  • আপডেট সময় : ০১:৩৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মে ২০২১
  • ১১৫ বার পড়া হয়েছে


সিলেট প্রতিনিধি : এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্য রায়হান আহমদকে সিলেটের বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করেন বলে অভিযোগপত্রে জানিয়েছে পিবিআই।
আলোচিত এ মামলার তদন্ত শেষে গতকাল বুধবার ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়ে সিলেট পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন।
গত বছর ১১ অক্টোবর সিলেট শহরের আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি সেখানে মারা যান। পরদিন তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন বলেন, “রায়হান আহমদকে ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানোর প্রমাণ মিলেছে তদন্তে। বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, এএসআই আশেকে এলাহি, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও টিটুচন্দ্র দাস নির্যাতনে অংশ নেন।”
তিনি বলেন, “নির্যাতনের আলামত নষ্ট ও নির্যাতনকারীদের পালাতে সহয়াতা করেন এএসআই হাসান উদ্দিন ও কথিত সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল নোমান।”
এই ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে বহিষ্কৃত পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে রয়েছেন। নোমান এখনও পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন তদন্তের তথ্য দিয়ে বলেন, “রায়হানকে কাষ্টঘর থেকে ধরে আনে বন্দরবাজার ফাঁড়ির পুলিশ। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসবাদকালে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে মারা যান।”
তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে ৩০২, ৫০১ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ১৫(২), ১৫(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

“দুই আইনের একটিতে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-। অপরটিতে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবনের কথা উল্লেখ আছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের মৃত্যুদ- হতে পারে।”
এক হাজার ৯৬২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ৬৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে ১০ জন ১৬৪ ধারায় আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন; যাদের মধ্যে সাতজন পুলিশ রয়েছেন।
রায়হানকে ফাঁড়িতে ধরে আনার কারণ সম্পর্কে হুমায়ুন কবির বলেন, “সাইদুল শেখ নামে এক ব্যক্তির ছিনতাই অভিযোগ পেয়ে রায়হানকে কাষ্টঘর থেকে ধরে আনে পুলিশ।
“সাইদুল ইয়াবা সংগ্রহ করতে কাষ্টঘর এলাকায় গিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলাও রয়েছে। সাইদুলের দাবি, ইয়াবা সংগ্রহকালে সেখানে রায়হানের সঙ্গে তার বাগবিত-া হয়। সাইদ্লুরে অভিযোগ পেয়ে রায়হানকে কাষ্টঘর থেকে ধরে আনে বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ।” রায়হানের মা সালমা বেগম প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছেন, অন্য কারও ইন্ধনে পূর্বপরিকল্পনার জেরে রায়হানকে তুলে এনে নির্যাতন করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, “রায়হানকে নির্যাতনের সঙ্গে পূর্ববিরোধের কিছু পাওয়া যায়নি তদন্তে।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রায়হানকে ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করেন এসআই আকবরসহ ৪ পুলিশ: পিবিআই

আপডেট সময় : ০১:৩৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মে ২০২১


সিলেট প্রতিনিধি : এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্য রায়হান আহমদকে সিলেটের বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করেন বলে অভিযোগপত্রে জানিয়েছে পিবিআই।
আলোচিত এ মামলার তদন্ত শেষে গতকাল বুধবার ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়ে সিলেট পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন।
গত বছর ১১ অক্টোবর সিলেট শহরের আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি সেখানে মারা যান। পরদিন তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন বলেন, “রায়হান আহমদকে ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানোর প্রমাণ মিলেছে তদন্তে। বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, এএসআই আশেকে এলাহি, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও টিটুচন্দ্র দাস নির্যাতনে অংশ নেন।”
তিনি বলেন, “নির্যাতনের আলামত নষ্ট ও নির্যাতনকারীদের পালাতে সহয়াতা করেন এএসআই হাসান উদ্দিন ও কথিত সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল নোমান।”
এই ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে বহিষ্কৃত পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে রয়েছেন। নোমান এখনও পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন তদন্তের তথ্য দিয়ে বলেন, “রায়হানকে কাষ্টঘর থেকে ধরে আনে বন্দরবাজার ফাঁড়ির পুলিশ। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসবাদকালে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে মারা যান।”
তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে ৩০২, ৫০১ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ১৫(২), ১৫(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

“দুই আইনের একটিতে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-। অপরটিতে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবনের কথা উল্লেখ আছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের মৃত্যুদ- হতে পারে।”
এক হাজার ৯৬২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ৬৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে ১০ জন ১৬৪ ধারায় আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন; যাদের মধ্যে সাতজন পুলিশ রয়েছেন।
রায়হানকে ফাঁড়িতে ধরে আনার কারণ সম্পর্কে হুমায়ুন কবির বলেন, “সাইদুল শেখ নামে এক ব্যক্তির ছিনতাই অভিযোগ পেয়ে রায়হানকে কাষ্টঘর থেকে ধরে আনে পুলিশ।
“সাইদুল ইয়াবা সংগ্রহ করতে কাষ্টঘর এলাকায় গিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলাও রয়েছে। সাইদুলের দাবি, ইয়াবা সংগ্রহকালে সেখানে রায়হানের সঙ্গে তার বাগবিত-া হয়। সাইদ্লুরে অভিযোগ পেয়ে রায়হানকে কাষ্টঘর থেকে ধরে আনে বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ।” রায়হানের মা সালমা বেগম প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছেন, অন্য কারও ইন্ধনে পূর্বপরিকল্পনার জেরে রায়হানকে তুলে এনে নির্যাতন করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, “রায়হানকে নির্যাতনের সঙ্গে পূর্ববিরোধের কিছু পাওয়া যায়নি তদন্তে।”