ঢাকা ০১:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
রূপনগরে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সংবাদ ব্রিফিং

রাসায়নিক গুদামটি অবৈধ, তিনবার নোটিশও দেওয়া হয়েছিল

  • আপডেট সময় : ০৯:১৯:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

গতকাল বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফায়ার সার্ভিসের তৈরি করা অবৈধ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে আগুনে পুড়ে যাওয়া রাসায়নিক গুদাম আলম ট্রেডার্সও ছিল বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম।
গতকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি। তাজুল ইসলাম আরো জানান, সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি তিনবার ওই গুদামে নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। এখন ওই গুদাম অভিযান চালানোর পর্যায়ে ছিল।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগে। এই আগুন বিস্ফোরিত হয়ে পাশের চারতলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ভবনটির দোতলায় স্মার্ট প্রিন্টিং নামের একটি কারখানায় টি-শার্ট প্রিন্ট করা হয়। আর তিন ও চারতলায় আরএন ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানা আছে। পরে চারতলা ভবনের দোতলা ও তিনতলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়। ১০ জনের মরদেহ শনাক্তের দাবি করেছেন স্বজনেরা।

রাসায়নিকের তেজস্ক্রিয়তার কারণে গুদামে এখনো সার্চ অপারেশন চালানো যায়নি বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আরো ৩৬ থেকে ৭২ ঘণ্টা লাগতে পারে। এখন রাসায়নিক দ্রব্যগুলো পানি ছিটিয়ে অপসারণ করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা গতকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছি। এই পর্যন্ত অগ্রগতি হচ্ছে গতকালকেই গার্মেন্টস অংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পাশে যে কেমিক্যালের গোডাউন, যো আলম ট্রেডারস নামে পরিচিত, সেই গোডাউনের আগুন আমরা আজ (বুধবার) বেলা ২টা ২০ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আনার ঘোষণা করেছি।

এই কর্মকর্তা আরো বলেন, তবে এখানে বেশ কিছু বিষয় রয়েছে। এটা একটা রাসায়নিক গুদাম এবং এখানে ছয়-সাত ধরনের বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য রয়েছে। তবে কী ধরনের রাসায়নিক বা এগুলোর মাত্রা কী, তা এখনো যাচাই–বাছাই করা যায়নি। পুরো গুদাম বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যে ভরা। পানি ছিটিয়ে এসব রাসায়নিক পরিষ্কার করা হচ্ছে। কাজটি সময় সাপেক্ষ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সিস্টেমেটিক কাজ করছি। টেকনোলজি অ্যাপ্লাই করছি। ড্রোন দিয়ে দেখছি এবং আমরা বোঝার চেষ্টা করছি।

আলম ট্রেডার্সের ভবনটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, গুদাম অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লম্বা সময় ধরে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে এই ভবনের পিলারগুলো অনেকাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে রাজউক, ভবন বিশারদ, যারা দায়িত্বশীল ব্যক্তি রয়েছেন, তাঁরাই বলতে পারবেন যে কতটুকু ক্ষতি হয়েছে। এখানে যেকোনো অভিযান চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুঁকি এড়াতে নিরাপত্তার সঙ্গে ধাপে ধাপে কাজ করা হচ্ছে।
ভেতরের অবস্থার বিষয়ে তাজুল ইসলাম জানান, আলম ট্রেডার্সের মূল দরজায় তালা মারা ছিল। হাইড্রলিক স্প্রেডার ও কাটার দিয়ে এটাকে কেটে তারপর খুলতে হয়েছে। সুতরাং ধারণা করা হচ্ছে যে এখানে হয়তো মানুষ ছিল না। তারপরও সার্চ অপারেশন না চালানো পর্যন্ত বলা যাবে না, এখানে মানুষ ছিলেন কি ছিলেন না।

২৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে: মিরপুরের শাহ আলম কেমিক্যাল নামের রাসায়নিক গোডাউনে গোডাউনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গতকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কেমিক্যাল আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জাননা ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। এর মাধ্যমে প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর নিভলো ভয়াবহ এই আগুন।

ঢামেকে ১৬ মরদেহ, এলেন ১৭ পরিবার: রাজধানীর মিরপুর রূপনগর এলাকায় কেমিক্যাল গোডাউন ও গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেলেও মরদেহ খুঁজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে এসেছেন ১৭টি পরিবার। গতকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে ঢামেক মর্গে নিহত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

নিহত দাবিকৃত ১৭ জন হলেন- মো. আল মামুন (৩৯), মো. নূরে আলম সরকার (২৩), ফারজানা আক্তার (১৫), নার্গিস আক্তার (১৮), খালিদ হাসান সাব্বির (২৯), আব্দুল আলিম (১৪), রবিউল ইসলাম রবিন (২০), মাহিয়া আক্তার (১৪), জয় মিয়া (২০), মাজিয়া সুলতানা (১৮), আসমা আক্তার (১৩), সানোয়ার হোসেন (২২), মুনা আক্তার (১৬), মৌসুমী খাতুন (২২), মুক্তা (৩৬), তোফায়েল আহমেদ (১৮) ও নাজমুল ইসলাম রিয়াজ (৩৮)। রূপনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান লস্কর বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমরা এখন পর্যন্ত ৬টি মরদেহ বুঝে পেয়েছি। ১৬টি মরদেহের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬টি মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহগুলোর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে, এরপর পরিবারের নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে হস্তান্তর করা হবে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মরদেহের খোঁজে ১৭ পরিবার আমাদের কাছে এসেছিলেন। সব ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও মিলিয়ে পরিবারের সঙ্গে যাচাই শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

কেমিক্যালে অসুস্থ হচ্ছেন অনেকে: রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় আগুনে পুড়ে যাওয়া কেমিক্যাল গোডাউন থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এ অবস্থায় গোডাউনের পাশের রাইজিং ফ্যাশন নামের একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের অনেকে এই কেমিক্যালের প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বুধবার সকালে শিয়ালবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুড়ে যাওয়া ওই কেমিক্যাল গোডাউন থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। তবে ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুন নিভে গেছে।

এদিকে, কেমিক্যাল গোডাউনের পাশে অবস্থিত রাইজিং ফ্যাশন নামের একটি গার্মেন্টসের কর্মীরা সকালে কর্মক্ষেত্রে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কথা বলে জানা যায়, দুর্ঘটনার সময় কেমিক্যাল গ্যাসে পুরো গার্মেন্টস ভরে যায়। সকালে গার্মেন্টসে প্রবেশের পর একে একে কর্মীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের অনেককে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। রাইজিং ফ্যাশনের কর্মী মো. আল আমিন বলেন, কেমিক্যাল গোডাউনের বিষাক্ত গ্যাসে গার্মেন্টস ভরে ছিল। আমরা সকালে যখন কাজ করতে আসলাম, তখন কেমিক্যাল রিয়েকশনে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসময় রাইজিং ফ্যাশন নামের ওই গার্মেন্টসের সামনে কর্মীদের অবস্থান করতে দেখা যায়। তাদের কাউকে কাউকে বাড়ি ফিরে যেতে দেখা যায়।

সানা/আপ্র-১৫/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

রূপনগরে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সংবাদ ব্রিফিং

রাসায়নিক গুদামটি অবৈধ, তিনবার নোটিশও দেওয়া হয়েছিল

আপডেট সময় : ০৯:১৯:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফায়ার সার্ভিসের তৈরি করা অবৈধ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে আগুনে পুড়ে যাওয়া রাসায়নিক গুদাম আলম ট্রেডার্সও ছিল বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম।
গতকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি। তাজুল ইসলাম আরো জানান, সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি তিনবার ওই গুদামে নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। এখন ওই গুদাম অভিযান চালানোর পর্যায়ে ছিল।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগে। এই আগুন বিস্ফোরিত হয়ে পাশের চারতলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ভবনটির দোতলায় স্মার্ট প্রিন্টিং নামের একটি কারখানায় টি-শার্ট প্রিন্ট করা হয়। আর তিন ও চারতলায় আরএন ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানা আছে। পরে চারতলা ভবনের দোতলা ও তিনতলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়। ১০ জনের মরদেহ শনাক্তের দাবি করেছেন স্বজনেরা।

রাসায়নিকের তেজস্ক্রিয়তার কারণে গুদামে এখনো সার্চ অপারেশন চালানো যায়নি বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আরো ৩৬ থেকে ৭২ ঘণ্টা লাগতে পারে। এখন রাসায়নিক দ্রব্যগুলো পানি ছিটিয়ে অপসারণ করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা গতকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছি। এই পর্যন্ত অগ্রগতি হচ্ছে গতকালকেই গার্মেন্টস অংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পাশে যে কেমিক্যালের গোডাউন, যো আলম ট্রেডারস নামে পরিচিত, সেই গোডাউনের আগুন আমরা আজ (বুধবার) বেলা ২টা ২০ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আনার ঘোষণা করেছি।

এই কর্মকর্তা আরো বলেন, তবে এখানে বেশ কিছু বিষয় রয়েছে। এটা একটা রাসায়নিক গুদাম এবং এখানে ছয়-সাত ধরনের বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য রয়েছে। তবে কী ধরনের রাসায়নিক বা এগুলোর মাত্রা কী, তা এখনো যাচাই–বাছাই করা যায়নি। পুরো গুদাম বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যে ভরা। পানি ছিটিয়ে এসব রাসায়নিক পরিষ্কার করা হচ্ছে। কাজটি সময় সাপেক্ষ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সিস্টেমেটিক কাজ করছি। টেকনোলজি অ্যাপ্লাই করছি। ড্রোন দিয়ে দেখছি এবং আমরা বোঝার চেষ্টা করছি।

আলম ট্রেডার্সের ভবনটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, গুদাম অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লম্বা সময় ধরে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে এই ভবনের পিলারগুলো অনেকাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে রাজউক, ভবন বিশারদ, যারা দায়িত্বশীল ব্যক্তি রয়েছেন, তাঁরাই বলতে পারবেন যে কতটুকু ক্ষতি হয়েছে। এখানে যেকোনো অভিযান চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুঁকি এড়াতে নিরাপত্তার সঙ্গে ধাপে ধাপে কাজ করা হচ্ছে।
ভেতরের অবস্থার বিষয়ে তাজুল ইসলাম জানান, আলম ট্রেডার্সের মূল দরজায় তালা মারা ছিল। হাইড্রলিক স্প্রেডার ও কাটার দিয়ে এটাকে কেটে তারপর খুলতে হয়েছে। সুতরাং ধারণা করা হচ্ছে যে এখানে হয়তো মানুষ ছিল না। তারপরও সার্চ অপারেশন না চালানো পর্যন্ত বলা যাবে না, এখানে মানুষ ছিলেন কি ছিলেন না।

২৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে: মিরপুরের শাহ আলম কেমিক্যাল নামের রাসায়নিক গোডাউনে গোডাউনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গতকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কেমিক্যাল আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জাননা ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। এর মাধ্যমে প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর নিভলো ভয়াবহ এই আগুন।

ঢামেকে ১৬ মরদেহ, এলেন ১৭ পরিবার: রাজধানীর মিরপুর রূপনগর এলাকায় কেমিক্যাল গোডাউন ও গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেলেও মরদেহ খুঁজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে এসেছেন ১৭টি পরিবার। গতকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে ঢামেক মর্গে নিহত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

নিহত দাবিকৃত ১৭ জন হলেন- মো. আল মামুন (৩৯), মো. নূরে আলম সরকার (২৩), ফারজানা আক্তার (১৫), নার্গিস আক্তার (১৮), খালিদ হাসান সাব্বির (২৯), আব্দুল আলিম (১৪), রবিউল ইসলাম রবিন (২০), মাহিয়া আক্তার (১৪), জয় মিয়া (২০), মাজিয়া সুলতানা (১৮), আসমা আক্তার (১৩), সানোয়ার হোসেন (২২), মুনা আক্তার (১৬), মৌসুমী খাতুন (২২), মুক্তা (৩৬), তোফায়েল আহমেদ (১৮) ও নাজমুল ইসলাম রিয়াজ (৩৮)। রূপনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান লস্কর বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমরা এখন পর্যন্ত ৬টি মরদেহ বুঝে পেয়েছি। ১৬টি মরদেহের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬টি মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহগুলোর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে, এরপর পরিবারের নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে হস্তান্তর করা হবে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মরদেহের খোঁজে ১৭ পরিবার আমাদের কাছে এসেছিলেন। সব ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও মিলিয়ে পরিবারের সঙ্গে যাচাই শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

কেমিক্যালে অসুস্থ হচ্ছেন অনেকে: রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় আগুনে পুড়ে যাওয়া কেমিক্যাল গোডাউন থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এ অবস্থায় গোডাউনের পাশের রাইজিং ফ্যাশন নামের একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের অনেকে এই কেমিক্যালের প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বুধবার সকালে শিয়ালবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুড়ে যাওয়া ওই কেমিক্যাল গোডাউন থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। তবে ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুন নিভে গেছে।

এদিকে, কেমিক্যাল গোডাউনের পাশে অবস্থিত রাইজিং ফ্যাশন নামের একটি গার্মেন্টসের কর্মীরা সকালে কর্মক্ষেত্রে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কথা বলে জানা যায়, দুর্ঘটনার সময় কেমিক্যাল গ্যাসে পুরো গার্মেন্টস ভরে যায়। সকালে গার্মেন্টসে প্রবেশের পর একে একে কর্মীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের অনেককে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। রাইজিং ফ্যাশনের কর্মী মো. আল আমিন বলেন, কেমিক্যাল গোডাউনের বিষাক্ত গ্যাসে গার্মেন্টস ভরে ছিল। আমরা সকালে যখন কাজ করতে আসলাম, তখন কেমিক্যাল রিয়েকশনে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসময় রাইজিং ফ্যাশন নামের ওই গার্মেন্টসের সামনে কর্মীদের অবস্থান করতে দেখা যায়। তাদের কাউকে কাউকে বাড়ি ফিরে যেতে দেখা যায়।

সানা/আপ্র-১৫/১০/২০২৫