ঢাকা ১১:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
বিজ্ঞপ্তিতে প্রশ্ন টিআইবির

রাষ্ট্র-সংস্কার কি সরকারের কাছে শুধুই ফাঁকাবুলি

  • আপডেট সময় : ০৯:১৪:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুপারিশ বাদ দিয়ে দুদক অধ্যাদেশ, ২০২৫ চূড়ান্ত অনুমোদন করায় গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। পাশাপাশি রাষ্ট্র-সংস্কার কেবলই ফাঁকাবুলি কি না- এমন প্রশ্নও করছে সংস্থাটি।

শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ক্ষোভ জানায় সংস্থাটি। বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি জানায়, জুলাই সনদে সব রাজনৈতিক দলের সম্পূর্ণ ঐকমত্যসহ অন্তর্ভুক্ত এবং টিআইবির ধারাবাহিক অধিপরামর্শের ফলে এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সম্মতির পরও চূড়ান্ত অধ্যাদেশে তা বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি শুধু হতাশাজনক নয়, সরকারের অভ্যন্তরে প্রায় সব ক্ষেত্রে সংস্কার-প্রতিরোধক মহলের ষড়যন্ত্রের কাছে রাষ্ট্র সংস্কারের অভীষ্টের জিম্মিদশারও পরিচায়ক। ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও ১১টি সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠার যুগান্তকারী সিদ্ধান্তগ্রহণকারী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা দুদককে জবাবদিহির বাইরে রাখার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলসহ দেশবাসীকে কী এই বার্তা দিতে চাইছেন যে, রাষ্ট্র-সংস্কার কেবলই ফাঁকাবুলি? এই প্রশ্নও করছে সংস্থাটি।

বিগত দুই দশকের অভিজ্ঞতা, সব অংশীজনের মতামত, আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রেক্ষিত বিবেচনায় দুদক যাতে ক্ষমতাসীনদের হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে চলমান না থাকে, সে লক্ষ্যে দুদক সংস্কার কমিশন ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ গঠনের সুপারিশ করেছিল। এমন তথ্য উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জন্মলগ্ন থেকে প্রতিষ্ঠানটি যেভাবে জনআস্থার সংকটে ভুগছে ও স্বার্থান্বেষী মহলের ক্রীড়নক হিসেবে ক্ষমতাসীনদের সুরক্ষা আর প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে, তা থেকে উত্তরণ ঘটাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ প্রস্তাবটি করা হয়েছিল। এই কমিটি কর্তৃক দুদকের কাজের ষাণ্মাসিক ভিত্তিতে পর্যালোচনা, গণশুনানি ও পরামর্শের মাধ্যমে দুদককে প্রকৃতার্থে একটি জবাবদিহিমূলক, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার কৌশলগত সুপারিশটি অনুধাবনে সরকার ব্যর্থ হয়েছে, যা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। রাষ্ট্রসংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারের জন্য এটি স্ববিরোধী ও সংস্কারপরিপন্থি নজির। তিনি বলেন, আরো হতাশাজনক এ কারণে যে, নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে অন্তত সাতজন উপদেষ্টাও এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। অথচ তারা জানেন যে এই প্রস্তাবে জুলাই সনদে সই করা সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। জুলাই সনদ লঙ্ঘনের এমন উদাহরণ সৃষ্টি করার আগে সরকার কেন ভাবছে না যে, এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলকে তারা নিজেরাই জুলাই সনদ লঙ্ঘনে উৎসাহিত করছে? তাহলে কেন এত রক্তক্ষয়ী আত্মত্যাগ? দুর্নীতির কার্যকর নিয়ন্ত্রণের উপায় রুদ্ধ করে কীসের রাষ্ট্র সংস্কার?

সংস্থাটি জানায়, অধ্যাদেশটির যে খসড়াটি টিআইবির দেখার সুযোগ হয়েছিল, তা অনেকাংশে বিদ্যমান আইনের তুলনায় উন্নত মানের হওয়ায় টিআইবি সরকারকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যানুযায়ী চূড়ান্ত অধ্যাদেশে উল্লেখিত বিষয়টির পাশাপাশি আরো কতিপয় ঐকমত্য-অর্জিত গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুপারিশ বাদ দেওয়া হয়েছে, যা সরকারের অভ্যন্তরে স্বার্থান্বেষী ও প্রভাবশালী মহলের দুর্নীতি-সহায়ক ও সংস্কার-পরিপন্থি অবস্থান ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।

সানা/ওআ/আপ্র/২৮/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

বিজ্ঞপ্তিতে প্রশ্ন টিআইবির

রাষ্ট্র-সংস্কার কি সরকারের কাছে শুধুই ফাঁকাবুলি

আপডেট সময় : ০৯:১৪:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুপারিশ বাদ দিয়ে দুদক অধ্যাদেশ, ২০২৫ চূড়ান্ত অনুমোদন করায় গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। পাশাপাশি রাষ্ট্র-সংস্কার কেবলই ফাঁকাবুলি কি না- এমন প্রশ্নও করছে সংস্থাটি।

শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ক্ষোভ জানায় সংস্থাটি। বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি জানায়, জুলাই সনদে সব রাজনৈতিক দলের সম্পূর্ণ ঐকমত্যসহ অন্তর্ভুক্ত এবং টিআইবির ধারাবাহিক অধিপরামর্শের ফলে এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সম্মতির পরও চূড়ান্ত অধ্যাদেশে তা বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি শুধু হতাশাজনক নয়, সরকারের অভ্যন্তরে প্রায় সব ক্ষেত্রে সংস্কার-প্রতিরোধক মহলের ষড়যন্ত্রের কাছে রাষ্ট্র সংস্কারের অভীষ্টের জিম্মিদশারও পরিচায়ক। ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও ১১টি সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠার যুগান্তকারী সিদ্ধান্তগ্রহণকারী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা দুদককে জবাবদিহির বাইরে রাখার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলসহ দেশবাসীকে কী এই বার্তা দিতে চাইছেন যে, রাষ্ট্র-সংস্কার কেবলই ফাঁকাবুলি? এই প্রশ্নও করছে সংস্থাটি।

বিগত দুই দশকের অভিজ্ঞতা, সব অংশীজনের মতামত, আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রেক্ষিত বিবেচনায় দুদক যাতে ক্ষমতাসীনদের হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে চলমান না থাকে, সে লক্ষ্যে দুদক সংস্কার কমিশন ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ গঠনের সুপারিশ করেছিল। এমন তথ্য উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জন্মলগ্ন থেকে প্রতিষ্ঠানটি যেভাবে জনআস্থার সংকটে ভুগছে ও স্বার্থান্বেষী মহলের ক্রীড়নক হিসেবে ক্ষমতাসীনদের সুরক্ষা আর প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে, তা থেকে উত্তরণ ঘটাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ প্রস্তাবটি করা হয়েছিল। এই কমিটি কর্তৃক দুদকের কাজের ষাণ্মাসিক ভিত্তিতে পর্যালোচনা, গণশুনানি ও পরামর্শের মাধ্যমে দুদককে প্রকৃতার্থে একটি জবাবদিহিমূলক, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার কৌশলগত সুপারিশটি অনুধাবনে সরকার ব্যর্থ হয়েছে, যা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। রাষ্ট্রসংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারের জন্য এটি স্ববিরোধী ও সংস্কারপরিপন্থি নজির। তিনি বলেন, আরো হতাশাজনক এ কারণে যে, নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে অন্তত সাতজন উপদেষ্টাও এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। অথচ তারা জানেন যে এই প্রস্তাবে জুলাই সনদে সই করা সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। জুলাই সনদ লঙ্ঘনের এমন উদাহরণ সৃষ্টি করার আগে সরকার কেন ভাবছে না যে, এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলকে তারা নিজেরাই জুলাই সনদ লঙ্ঘনে উৎসাহিত করছে? তাহলে কেন এত রক্তক্ষয়ী আত্মত্যাগ? দুর্নীতির কার্যকর নিয়ন্ত্রণের উপায় রুদ্ধ করে কীসের রাষ্ট্র সংস্কার?

সংস্থাটি জানায়, অধ্যাদেশটির যে খসড়াটি টিআইবির দেখার সুযোগ হয়েছিল, তা অনেকাংশে বিদ্যমান আইনের তুলনায় উন্নত মানের হওয়ায় টিআইবি সরকারকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যানুযায়ী চূড়ান্ত অধ্যাদেশে উল্লেখিত বিষয়টির পাশাপাশি আরো কতিপয় ঐকমত্য-অর্জিত গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুপারিশ বাদ দেওয়া হয়েছে, যা সরকারের অভ্যন্তরে স্বার্থান্বেষী ও প্রভাবশালী মহলের দুর্নীতি-সহায়ক ও সংস্কার-পরিপন্থি অবস্থান ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।

সানা/ওআ/আপ্র/২৮/১১/২০২৫