ঢাকা ১২:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

রাবেয়ার শেকল ভাঙার লড়াই

  • আপডেট সময় : ১২:১১:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

গার্গী তনুশ্রী পাল : হাঁটতে শেখার বয়সে চোখের সমস্যা ধরা পড়ে তার। তবে সামাজিক অবজ্ঞা, সমবয়সীদের সঙ্গে খেলতে না পারা, স্কুলে ভর্তি হতে না পারার মতো ঘটনাই বেশি কষ্ট দিয়েছে তাকে। সেই রাবেয়াই এখন পথ দেখাচ্ছেন অন্যদেরও।
রাজধানী ঢাকার রায়ের বাজার বস্তির ছোট এই ঘরে পরিবারের সাথে বাস করে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাবেয়া আক্তার রুহী। ছোটবেলায় হাঁটতে শেখার বয়সেই তার চোখের দৃষ্টিতে ধরা পড়ে সমস্যা। সেটা সারাতে অপারেশন করতে গিয়ে এক চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় তার। এরপর অন্য চোখে সামান্য দৃষ্টি নিয়ে শুরু হয় রাবেয়ার জীবনযুদ্ধ। রাবেয়ার মা ফাতেমা বেগম বলেন, “মানুষই অনেকই বিভিন্ন কথা বলে। তারপরও আমি চাই যে আল্লাহর রহমতে ওরে মানুষের মতো মানুষ করতে। যেন নিজে কিছু করতে পারে। স্কুল কোচিং নিয়ে চার বার যাতায়াত করতে হয় আমাকে।”
চোখের এই সমস্যা নিয়ে রাবেয়া ছোট থেকেই চমকে দিতে থাকে বাবা- মা, আর চারপাশের মানুষকে। মুখে মুখে, শুনে শুনেই শিখে নেয় নানান ছড়া; কবিতা, হাতের কাছে যা পায়, তাতেই আঁকতে থাকে নানা চিত্রকর্ম। এত প্রতিভা নিয়েও স্কুলে ভর্তি হতে গেলে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় কর্তৃপক্ষ।
রাবেয়া হ্যালোকে বলে, “আমার পড়াশোনার প্রতি খুব একটা আগ্রহ ছিল। তো আম্মুকে বলছিলাম আম্মু আমি পড়াশোনা করিতে চাই। কিন্তু আশে পাশের স্কুল বলছে আমরা এমন শিক্ষার্থী আমরা ভর্তি নেই না। পরে ভর্তি হয়েছি প্রতিবন্ধী স্কুলে।”
অনেক সংগ্রামের বিনিময়ে বিদ্যালয়ে ভর্তির পর বহু মানুষের প্রিয়পাত্রী হয়ে উঠে সে। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি কেবল নিজের কাজের মাঝেই নিজেকে আটকে রাখেনি রাবেয়া। আশপাশের শিশুরা যাতে মোবাইলে আসক্ত না হয়, সে জন্য সে নিয়েছে নানা উদ্যোগ। শিশুদের সাথে গল্প করা, ছবি আঁকা শেখানো, কবিতা পাঠের আসরের আয়োজন করে সে। সমবয়সী মেয়েদের সচেতন করে বাল্যবিয়েসহ নানান বিষয়ে। সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে চায় এই সংগ্রামী শিশু। সামাজিক অবজ্ঞা, সমবয়সীদের সঙ্গে খেলতে না পারার কষ্ট, স্কুলে ভর্তি হতে না পারা- ছোট বেলা থেকে এসব কিছু আহত করেছে রাবেয়াকে। সেই রাবেয়া এখন অন্য শিশুদের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী গড়তে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিবেদকের বয়স: ১৩। সৌজন্যে : বিডিনিউজের শিশু সাংবাদিকতা বিষয়ক বিভাগ ‘হ্যালো’।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টা হতাশ-ক্ষুব্ধ, ‘পদত্যাগ’ নিয়ে আলোচনা

রাবেয়ার শেকল ভাঙার লড়াই

আপডেট সময় : ১২:১১:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩

গার্গী তনুশ্রী পাল : হাঁটতে শেখার বয়সে চোখের সমস্যা ধরা পড়ে তার। তবে সামাজিক অবজ্ঞা, সমবয়সীদের সঙ্গে খেলতে না পারা, স্কুলে ভর্তি হতে না পারার মতো ঘটনাই বেশি কষ্ট দিয়েছে তাকে। সেই রাবেয়াই এখন পথ দেখাচ্ছেন অন্যদেরও।
রাজধানী ঢাকার রায়ের বাজার বস্তির ছোট এই ঘরে পরিবারের সাথে বাস করে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাবেয়া আক্তার রুহী। ছোটবেলায় হাঁটতে শেখার বয়সেই তার চোখের দৃষ্টিতে ধরা পড়ে সমস্যা। সেটা সারাতে অপারেশন করতে গিয়ে এক চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় তার। এরপর অন্য চোখে সামান্য দৃষ্টি নিয়ে শুরু হয় রাবেয়ার জীবনযুদ্ধ। রাবেয়ার মা ফাতেমা বেগম বলেন, “মানুষই অনেকই বিভিন্ন কথা বলে। তারপরও আমি চাই যে আল্লাহর রহমতে ওরে মানুষের মতো মানুষ করতে। যেন নিজে কিছু করতে পারে। স্কুল কোচিং নিয়ে চার বার যাতায়াত করতে হয় আমাকে।”
চোখের এই সমস্যা নিয়ে রাবেয়া ছোট থেকেই চমকে দিতে থাকে বাবা- মা, আর চারপাশের মানুষকে। মুখে মুখে, শুনে শুনেই শিখে নেয় নানান ছড়া; কবিতা, হাতের কাছে যা পায়, তাতেই আঁকতে থাকে নানা চিত্রকর্ম। এত প্রতিভা নিয়েও স্কুলে ভর্তি হতে গেলে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় কর্তৃপক্ষ।
রাবেয়া হ্যালোকে বলে, “আমার পড়াশোনার প্রতি খুব একটা আগ্রহ ছিল। তো আম্মুকে বলছিলাম আম্মু আমি পড়াশোনা করিতে চাই। কিন্তু আশে পাশের স্কুল বলছে আমরা এমন শিক্ষার্থী আমরা ভর্তি নেই না। পরে ভর্তি হয়েছি প্রতিবন্ধী স্কুলে।”
অনেক সংগ্রামের বিনিময়ে বিদ্যালয়ে ভর্তির পর বহু মানুষের প্রিয়পাত্রী হয়ে উঠে সে। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি কেবল নিজের কাজের মাঝেই নিজেকে আটকে রাখেনি রাবেয়া। আশপাশের শিশুরা যাতে মোবাইলে আসক্ত না হয়, সে জন্য সে নিয়েছে নানা উদ্যোগ। শিশুদের সাথে গল্প করা, ছবি আঁকা শেখানো, কবিতা পাঠের আসরের আয়োজন করে সে। সমবয়সী মেয়েদের সচেতন করে বাল্যবিয়েসহ নানান বিষয়ে। সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে চায় এই সংগ্রামী শিশু। সামাজিক অবজ্ঞা, সমবয়সীদের সঙ্গে খেলতে না পারার কষ্ট, স্কুলে ভর্তি হতে না পারা- ছোট বেলা থেকে এসব কিছু আহত করেছে রাবেয়াকে। সেই রাবেয়া এখন অন্য শিশুদের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী গড়তে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিবেদকের বয়স: ১৩। সৌজন্যে : বিডিনিউজের শিশু সাংবাদিকতা বিষয়ক বিভাগ ‘হ্যালো’।