ঢাকা ১০:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫

রানা প্লাজায় আহতদের ৫৬.৫ শতাংশের শারীরিক অবস্থার অবনতি: জরিপ

  • আপডেট সময় : ১২:৫৬:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২
  • ৯৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন যে, তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে; যা গত বছর ছিল ১৪ শতাংশ। যারা তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তারা কোমর, মাথা, হাত-পা এবং পিঠে ব্যথাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে বেঁচে যাওয়া ২০০ জনের মধ্যে একশনএইড বাংলাদেশ পরিচালিত এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, আগের বছরগুলোতে চালানো জরিপে দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের শারীরিক স্বাস্থ্যের পর্যায়ক্রমে উন্নতি পরিলক্ষিত হলেও এবছর অবনতি ঘটেছে। জরিপে আরও উঠে আসে, ৩৩ শতাংশের অবস্থা প্রায় স্থিতিশীল এবং ১০ দশমিক ৫ শতাংশের অবস্থা সম্পূর্ণ স্থিতিশীল রয়েছে। গতবছর যেখানে মানসিক ট্রমায় আক্রান্ত ছিলেন ১২ দশমিক ৫ শতাংশ, এবছর সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশে। ৩১ শতাংশ বলেছেন, তাদের মানসিক অবস্থা প্রায় স্থিতিশীল এবং ২০ দশমিক ৫ শতাংশ সম্পূর্ণ স্থিতিশীল।
জরিপের তথ্য বলছে, রানা প্লাজায় দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৫৩ শতাংশ এবং বাকি ৪৭ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থানে নিযুক্ত। এদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ বলেছেন শারীরিক অক্ষমতার কারণে তারা কাজ করতে পারেন না এবং ১০ শতাংশ এখনও মানসিক যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। আহত শ্রমিকদের মধ্যে ঘন ঘন কাজ পরিবর্তন করার প্রবণতা দেখা গেছে যার কারণ হিসেবে শারীরিক সীমাবদ্ধতার জন্য দীর্ঘ সময় একই ধরনের কাজ করার অক্ষমতার বিষয়টি উঠে এসে জরিপে।
জরিপ অনুসারে, ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ তাদের আদি পেশা পোশাক খাতে ফিরে গেছেন এবং আরও ৮ শতাংশ টেইলারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। অনেকেই তাদের পেশা বদলে গৃহকর্ম, দিনমজুরি, কৃষিকাজ, বিক্রয় এবং গাড়ি চালানোর মতো পেশায় নিযুক্ত হয়েছেন।
জরিপে দেখা গেছে, বেশিরভাগের আয় করোনা মহামারির প্রভাবে ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন যে, মহামারি চলাকালীন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার মতো পর্যাপ্ত অর্থ তাদের কাছে ছিল না। ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন, তারা নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করতে পারেননি এবং ২২ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন, তারা সন্তানের সঠিক যতœ নিতে পারেননি। ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশকে মহামারি চলাকালে তাদের পরিবারের খাবার এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্য ঋণ করতে হয়েছে। দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ৩৬ শতাংশের পারিবারিক আয় ৫ হাজার টাকার কম এবং ৩৪ শতাংশের ১০ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পারিবারিক আয় রয়েছে বলে জরিপে জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ৩৫ শতাংশ লোক বলেছেন যে, তাদের মাসিক খরচ ১০ হাজার টাকার বেশি এবং ৩০ শতাংশের ১৫ হাজার টাকারও বেশি যার অধিকাংশই খরচ হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়, বাসা ভাড়া, সন্তানের শিক্ষা এবং চিকিৎসা খাতে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রানা প্লাজায় আহতদের ৫৬.৫ শতাংশের শারীরিক অবস্থার অবনতি: জরিপ

আপডেট সময় : ১২:৫৬:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন যে, তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে; যা গত বছর ছিল ১৪ শতাংশ। যারা তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তারা কোমর, মাথা, হাত-পা এবং পিঠে ব্যথাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে বেঁচে যাওয়া ২০০ জনের মধ্যে একশনএইড বাংলাদেশ পরিচালিত এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, আগের বছরগুলোতে চালানো জরিপে দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের শারীরিক স্বাস্থ্যের পর্যায়ক্রমে উন্নতি পরিলক্ষিত হলেও এবছর অবনতি ঘটেছে। জরিপে আরও উঠে আসে, ৩৩ শতাংশের অবস্থা প্রায় স্থিতিশীল এবং ১০ দশমিক ৫ শতাংশের অবস্থা সম্পূর্ণ স্থিতিশীল রয়েছে। গতবছর যেখানে মানসিক ট্রমায় আক্রান্ত ছিলেন ১২ দশমিক ৫ শতাংশ, এবছর সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশে। ৩১ শতাংশ বলেছেন, তাদের মানসিক অবস্থা প্রায় স্থিতিশীল এবং ২০ দশমিক ৫ শতাংশ সম্পূর্ণ স্থিতিশীল।
জরিপের তথ্য বলছে, রানা প্লাজায় দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৫৩ শতাংশ এবং বাকি ৪৭ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থানে নিযুক্ত। এদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ বলেছেন শারীরিক অক্ষমতার কারণে তারা কাজ করতে পারেন না এবং ১০ শতাংশ এখনও মানসিক যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। আহত শ্রমিকদের মধ্যে ঘন ঘন কাজ পরিবর্তন করার প্রবণতা দেখা গেছে যার কারণ হিসেবে শারীরিক সীমাবদ্ধতার জন্য দীর্ঘ সময় একই ধরনের কাজ করার অক্ষমতার বিষয়টি উঠে এসে জরিপে।
জরিপ অনুসারে, ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ তাদের আদি পেশা পোশাক খাতে ফিরে গেছেন এবং আরও ৮ শতাংশ টেইলারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। অনেকেই তাদের পেশা বদলে গৃহকর্ম, দিনমজুরি, কৃষিকাজ, বিক্রয় এবং গাড়ি চালানোর মতো পেশায় নিযুক্ত হয়েছেন।
জরিপে দেখা গেছে, বেশিরভাগের আয় করোনা মহামারির প্রভাবে ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন যে, মহামারি চলাকালীন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার মতো পর্যাপ্ত অর্থ তাদের কাছে ছিল না। ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন, তারা নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করতে পারেননি এবং ২২ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন, তারা সন্তানের সঠিক যতœ নিতে পারেননি। ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশকে মহামারি চলাকালে তাদের পরিবারের খাবার এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্য ঋণ করতে হয়েছে। দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ৩৬ শতাংশের পারিবারিক আয় ৫ হাজার টাকার কম এবং ৩৪ শতাংশের ১০ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পারিবারিক আয় রয়েছে বলে জরিপে জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ৩৫ শতাংশ লোক বলেছেন যে, তাদের মাসিক খরচ ১০ হাজার টাকার বেশি এবং ৩০ শতাংশের ১৫ হাজার টাকারও বেশি যার অধিকাংশই খরচ হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়, বাসা ভাড়া, সন্তানের শিক্ষা এবং চিকিৎসা খাতে।