ঢাকা ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

রাত পোহালেই ঈদ

  • আপডেট সময় : ০১:৫৩:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪
  • ২৩৭ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি : বছর ঘুরে ফিরে এলো পবিত্র ঈদুল আজহার দিন। ত্যাগের মহিমায় আগামীকাল সোমবার (১৭ জুন) দেশব্যাপী উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা পালিত হয়। ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহায় ঠিক আগের দিন চাঁদ দেখার বিষয় নেই। ১০ দিন আগেই ঠিক হয়ে যায় ঈদের দিনক্ষণ। সে অনুসারে পশু কেনা, নাড়ির টানে গ্রামে যাওয়াসহ ঈদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে থাকেন সবাই। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে মানুষ, যার যার সাধ্যমতো কিনছেন পশু।
ঈদুল আজহা আমাদের দেশের মানুষের কাছে ‘কোরবানির ঈদ’ নামে পরিচিত। এর ইতিহাস সুপ্রাচীন। সারা বিশ্বের মুসলমানরা ১০ জিলহজ কোরবানি দিয়ে থাকেন। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন।
পবিত্র ঈদের দিন সকালে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের মাধ্যমে ঈদ উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। নামাজের পর খুতবায় ইমাম সাহেব কোরবানির মর্মবাণী তুলে ধরবেন। পশু কোরবানির মাধ্যমে মনের পশুকে দমনের আহ্বান থাকে খুতবায়। দোয়ার মাধ্যমে ঈদ উদযাপনের প্রথম পর্ব শেষ হবে। এরপর পশু কোরবানির মাধ্যমে শুরু হবে ঈদের দ্বিতীয় পর্বের উদযাপন। গ্রাম থেকে শহর সব জায়গায় বিকাল পর্যন্ত আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর মধ্যে কোরবানির পশুর মাংস বিতরণের আনন্দে মেতে উঠবেন অনেকে।
রাজধানী ঢাকায় বেশ কয়েকটি ঈদের নামাজের জামাত হবে। ঈদের জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিতে র‌্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে।
ঈদুল ফিতরের পর মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আজহা। আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তার প্রিয় পুত্রকে কোরবানি করতে চেয়েছিলেন। ইব্রাহিম (আ.)-এর নিয়ত ও তা বাস্তবায়নের উদ্যোগে খুশি হয়ে তার পুত্রের বদলে পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালার ইশারায় দুম্বা কোরবানি হয়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর অসামান্য এই ত্যাগের মহিমা জাগ্রত রাখতে সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পশু কোরবানি করেন। ঈদুল আজহার পরের দুদিন অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও পশু কোরবানির সুযোগ থাকে।
এদিকে উন্নয়নশীল বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হওয়ায়, গত ঈদুল ফিতরের মতো এই ঈদযাত্রাও এখন পর্যন্ত যথেষ্ট স্বস্তিদায়ক বলে দেখা গেছে। উল্লেখযোগ্য কোনো দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ছাড়াই নিরাপদেই হোক সবার যাতায়াত-ভ্রমণ-বেড়ানো। দেশে দেশে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটুক। পৃথিবীব্যাপী যুদ্ধের নামে যে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে, অচিরেই তা বন্ধ হোক, শান্তি নেমে আসুক মানুষের জীবনে। সব কিছুই স্বাভাবিক হোক। আশা করবো-সবাই সুস্থ-সুন্দর-স্বাভাবিকভাবে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে মুসলমান সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ধর্মীয় উৎসব পালন করে কর্মস্থলে ফিরে আসবেন।
জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করবেন রাষ্ট্রপতি: রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন রাজধানীর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে প্রধান ঈদের জামাতে সর্বস্তরের শত শত মুসল্লিদের সাথে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করবেন। বাংলাদেশে সোমবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন গতকাল শনিবার বাসস’কে জানান, রাষ্ট্রপতি তাঁর পরিবারের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার নামাজ জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৭টায় আদায় করবেন। রাষ্ট্রপতি ঈদগাহে পৌঁছলে প্রধান বিচারপতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রসহ সংশ্লিষ্টরা তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সংসদ সদস্য, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ঈদের নামাজ আদায় করবেন। নামাজ শেষে রাষ্ট্রপ্রধান ঈদগাহে মুসল্লিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। তবে প্রতিকূল আবহাওয়া বা অন্য কোনো কারণে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করা সম্ভব না হলে রাষ্ট্রপতি সকাল ৮টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় ঈদগাহে মহিলাদেরও ও ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও তাঁর সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বঙ্গভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাবেন তিনি। পরে রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাবেন।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রাত পোহালেই ঈদ

আপডেট সময় : ০১:৫৩:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

বিশেষ প্রতিনিধি : বছর ঘুরে ফিরে এলো পবিত্র ঈদুল আজহার দিন। ত্যাগের মহিমায় আগামীকাল সোমবার (১৭ জুন) দেশব্যাপী উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা পালিত হয়। ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহায় ঠিক আগের দিন চাঁদ দেখার বিষয় নেই। ১০ দিন আগেই ঠিক হয়ে যায় ঈদের দিনক্ষণ। সে অনুসারে পশু কেনা, নাড়ির টানে গ্রামে যাওয়াসহ ঈদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে থাকেন সবাই। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে মানুষ, যার যার সাধ্যমতো কিনছেন পশু।
ঈদুল আজহা আমাদের দেশের মানুষের কাছে ‘কোরবানির ঈদ’ নামে পরিচিত। এর ইতিহাস সুপ্রাচীন। সারা বিশ্বের মুসলমানরা ১০ জিলহজ কোরবানি দিয়ে থাকেন। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন।
পবিত্র ঈদের দিন সকালে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের মাধ্যমে ঈদ উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। নামাজের পর খুতবায় ইমাম সাহেব কোরবানির মর্মবাণী তুলে ধরবেন। পশু কোরবানির মাধ্যমে মনের পশুকে দমনের আহ্বান থাকে খুতবায়। দোয়ার মাধ্যমে ঈদ উদযাপনের প্রথম পর্ব শেষ হবে। এরপর পশু কোরবানির মাধ্যমে শুরু হবে ঈদের দ্বিতীয় পর্বের উদযাপন। গ্রাম থেকে শহর সব জায়গায় বিকাল পর্যন্ত আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর মধ্যে কোরবানির পশুর মাংস বিতরণের আনন্দে মেতে উঠবেন অনেকে।
রাজধানী ঢাকায় বেশ কয়েকটি ঈদের নামাজের জামাত হবে। ঈদের জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিতে র‌্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে।
ঈদুল ফিতরের পর মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আজহা। আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তার প্রিয় পুত্রকে কোরবানি করতে চেয়েছিলেন। ইব্রাহিম (আ.)-এর নিয়ত ও তা বাস্তবায়নের উদ্যোগে খুশি হয়ে তার পুত্রের বদলে পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালার ইশারায় দুম্বা কোরবানি হয়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর অসামান্য এই ত্যাগের মহিমা জাগ্রত রাখতে সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পশু কোরবানি করেন। ঈদুল আজহার পরের দুদিন অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও পশু কোরবানির সুযোগ থাকে।
এদিকে উন্নয়নশীল বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হওয়ায়, গত ঈদুল ফিতরের মতো এই ঈদযাত্রাও এখন পর্যন্ত যথেষ্ট স্বস্তিদায়ক বলে দেখা গেছে। উল্লেখযোগ্য কোনো দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ছাড়াই নিরাপদেই হোক সবার যাতায়াত-ভ্রমণ-বেড়ানো। দেশে দেশে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটুক। পৃথিবীব্যাপী যুদ্ধের নামে যে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে, অচিরেই তা বন্ধ হোক, শান্তি নেমে আসুক মানুষের জীবনে। সব কিছুই স্বাভাবিক হোক। আশা করবো-সবাই সুস্থ-সুন্দর-স্বাভাবিকভাবে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে মুসলমান সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ধর্মীয় উৎসব পালন করে কর্মস্থলে ফিরে আসবেন।
জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করবেন রাষ্ট্রপতি: রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন রাজধানীর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে প্রধান ঈদের জামাতে সর্বস্তরের শত শত মুসল্লিদের সাথে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করবেন। বাংলাদেশে সোমবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন গতকাল শনিবার বাসস’কে জানান, রাষ্ট্রপতি তাঁর পরিবারের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার নামাজ জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৭টায় আদায় করবেন। রাষ্ট্রপতি ঈদগাহে পৌঁছলে প্রধান বিচারপতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রসহ সংশ্লিষ্টরা তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সংসদ সদস্য, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ঈদের নামাজ আদায় করবেন। নামাজ শেষে রাষ্ট্রপ্রধান ঈদগাহে মুসল্লিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। তবে প্রতিকূল আবহাওয়া বা অন্য কোনো কারণে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করা সম্ভব না হলে রাষ্ট্রপতি সকাল ৮টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় ঈদগাহে মহিলাদেরও ও ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও তাঁর সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বঙ্গভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাবেন তিনি। পরে রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাবেন।