ঢাকা ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রাজার ব্যাটে চ্যাম্পিয়ন দুবাই ক্যাপিটালস

  • আপডেট সময় : ০৫:০০:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: সিকান্দার রাজা যখন ক্রিজে গেলেন, দলের সম্ভাবনা তখন দোলাচলে। জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৯ বলে ৩৮। সেই ম্যাচ শেষ চার বল আগেই। রাজার ব্যাট থেকেই যে এলো ১২ বলে অপরাজিত ৩৪ রান! এমনিতে এই টুর্নামেন্টে দর্শক খুব একটা হয় না। তবে ফাইনালে গ্যালারিতে ছিল ভিড়। সেই দর্শকদের সামনে দারুণ এক ক্যামিও খেলে ম্যাচ জিতিয়ে যুদ্ধজয়ী গ্ল্যাডিয়েটরের মতোই বুনো হুঙ্কার ছুড়লেন রাজা। বাঁধন হারা উদযাপনে মেতে উঠল সতীর্থরা।

আগেরবার ফাইনালে হেরে যাওয়া দুবাই ক্যাপিটালস এবার জিতে নিল ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি-টোয়েন্টির (আইএল টি-টোয়েন্টি) প্রথম আসরের শিরোপা। টুর্নামেন্টের তৃতীয় আসরের ফাইনালে রোববার তারা ৪ উইকেটে হারাল ডেজার্ট ভাইপার্সকে। দুই ইংলিশ ক্রিকেটার ম্যাক্স হোল্ডেন ও অধিনায়ক স্যাম কারানের ফিফটিতে ২০ ওভারে ১৮৯ রান তোলে ভাইপার্স। রান তাড়ার শুরুটা ভালো না হলেও শেষ পর্যন্ত চার বল বাকি থাকতে জিতে যায় ক্যাপিটালস। শেষের নায়ক রাজা হলেও ম্যাচের সেরা রভম্যান পাওয়েল। প্রতিপক্ষ কিপার আজম খানের অবিশ্বাস্য ব্যর্থতায় শুরুতেই জীবন পেয়ে ক্যারিবিয়ান এই ব্যাটসম্যান খেলেন ৩৮ বলে ৬৩ রানের ইনিংস। গ্রুপ পর্বের শীর্ষে থাকা ভাইপার্স ফাইনালের আগে চারটি ম্যাচ হেরেছিল, তিনটিই ছিল ক্যাপিটালসের বিপক্ষে।

ফাইনালেও তাদের মেনে নিতে হলো একই পরিণতি। টুর্নামেন্টের তিন আসরে দুবার রানার্স আপ হলো দলটি। ভাইপার্সকে ভুগিয়েছে চোটও। নিয়মিত অধিনায়ক লকি ফার্গুসন ও দলের সফলতম বোলার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে পায়নি তারা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভাইপার্সের শুরুটা ভালো ছিল না। দুই ওপেনার রাহমানউল্লাহ গুরবাজ ও অ্যালেক্স হেলস ফেরেন ৫ রানে। তিনে নামা ম্যাক্স হোল্ডেন সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নেন ড্যান লরেন্সকে সঙ্গে নিয়ে। মূল কাজ অবশ্যই হোল্ডেনই করেন। ৪১ রানের জুটি শেষে লরেন্স আউট হন ১০ বলে ১০ করে।

এরপর হোল্ডেন ও কারান মিলে আরও এগিয়ে নেন দলকে। ১২ চারে ৫১ বলে ৭৬ রান করা হোল্ডেনকে ফেরান রাজা। পরের জুটির বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ভাইপার্স পায় বড় সংগ্রহ। ২৯ বলে ৬৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন কারান ও আজম খান। ৩৩ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন কারান, ১৩ বলে অপরাজিত ২৭ করেন আজম। শেষ ৬ ওভারে ভাইপার্স তোলে ৮১ রান। ১৯০ রান তাড়ায় যেমন দরকার, ক্যাপিটালসের শুরুটা ছিল ঠিক এর উল্টো। আগের ম্যাচে অপরাজিত ৯৩ রান করা ডেভিড ওয়ার্নার এবার ফেরেন ৪ রানে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা গুলবাদিন নাইব আউট হয়ে যান ৫ রানে। অধিনায়ক স্যাম বিলিংস বিদায় নেন ৬ রানে। ৫ ওভার শেষে দলের রান ছিল ৩ উইকেটে ৩১। চতুর্থ উইকেটে ৫৩ বলে ৮০ রানের জুটি গড়ে দলকে পথে ফেরান শেই হোপ ও রভম্যান পাওয়েল।

পাওয়েল আউট হতে পারতেন ২ রানেই। ইংলিশ লেগ স্পিনার ন্যাথান সাউটারের বলে স্টাম্পড হয়েছিলেন তিনি ক্রিজ ছেড়ে অনেক দূর এগিয়ে গিয়ে। আউট হয়ে মাঠ ড্রেসিং রুমের পথে অনেকটা এগিয়েও যান তিনি। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার দেখতে পান, কিপার আজম বল গ্লাভসে জমিয়েছেন স্টাম্পের সামান্য সামনে থেকে। আউট হওয়ার বদলে ‘নো’ বল।

সেটির চরম খেসারত দিতে হয় দলকে। হোপ আউট হন ৩৯ বলে ৪৩ রান করে। জয়ের জন্য তখন ৬.৩ ওভারে ৭৯ রান লাগে ক্যাপিটালসের। পাওয়েলের ব্যাট তখন ঝলসে ওঠে। মহামূল্য একটি ক্যামিও খেলেন দাসুন শানাকা। ১ রানে জীবন পেয়ে লঙ্কান অলরাউন্ডার করেন ১০ বলে ২১ রান। ৩৮ বলে ৬৩ করে পাওয়েল যখন আউট হন, তখন ক্যাপিটালসের লাগে দুই ওভারে ২৪ রান। ভাইপার্সের বোলিং আক্রমণের মূল অস্ত্র মোহাম্মদ আমির আসেন তখন বোলিংয়ে। তিন ওভারে স্রেফ ২০ রান দিয়ে তখন তার দুই উইকেট। কিন্তু পাকিস্তানি পেসারকেই গুঁড়িয়ে তিনটি চারসহ ওভারে ১৫ রান নিয়ে দলকে জয়ের কিনারায় নিয়ে যান রাজা। শেষ ওভারে ৯ রানের সমীকরণে প্রথম বলে ছক্কা ও পরের বলে বাউন্ডারিতে তিনি শেষ করে দেন ম্যাচ।

পাওয়েল আউট হওয়ার পর ৮ বলে ২৫ রান তোলে ক্যাপিটালস, সবটুকুই করেন রাজা একাই। এই টুর্নামেন্টের বেশির ভাগটায় ক্যাপিটালসের অধিনায়ক ছিলেন রাজাই। কিন্তু সেরা ছন্দে ছিলেন না তিনি। বিগ ব্যাশ শেষে এখানে ফিরে শেষ চার ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেন স্যাম বিলিংস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেষের নায়ক রাজাই। দলের উৎসবের মধ্যমনিও তিনিই।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মব বন্ধ না করলে ডেভিল হিসেবে ট্রিট করবো: উপদেষ্টা মাহফুজ

রাজার ব্যাটে চ্যাম্পিয়ন দুবাই ক্যাপিটালস

আপডেট সময় : ০৫:০০:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক: সিকান্দার রাজা যখন ক্রিজে গেলেন, দলের সম্ভাবনা তখন দোলাচলে। জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৯ বলে ৩৮। সেই ম্যাচ শেষ চার বল আগেই। রাজার ব্যাট থেকেই যে এলো ১২ বলে অপরাজিত ৩৪ রান! এমনিতে এই টুর্নামেন্টে দর্শক খুব একটা হয় না। তবে ফাইনালে গ্যালারিতে ছিল ভিড়। সেই দর্শকদের সামনে দারুণ এক ক্যামিও খেলে ম্যাচ জিতিয়ে যুদ্ধজয়ী গ্ল্যাডিয়েটরের মতোই বুনো হুঙ্কার ছুড়লেন রাজা। বাঁধন হারা উদযাপনে মেতে উঠল সতীর্থরা।

আগেরবার ফাইনালে হেরে যাওয়া দুবাই ক্যাপিটালস এবার জিতে নিল ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি-টোয়েন্টির (আইএল টি-টোয়েন্টি) প্রথম আসরের শিরোপা। টুর্নামেন্টের তৃতীয় আসরের ফাইনালে রোববার তারা ৪ উইকেটে হারাল ডেজার্ট ভাইপার্সকে। দুই ইংলিশ ক্রিকেটার ম্যাক্স হোল্ডেন ও অধিনায়ক স্যাম কারানের ফিফটিতে ২০ ওভারে ১৮৯ রান তোলে ভাইপার্স। রান তাড়ার শুরুটা ভালো না হলেও শেষ পর্যন্ত চার বল বাকি থাকতে জিতে যায় ক্যাপিটালস। শেষের নায়ক রাজা হলেও ম্যাচের সেরা রভম্যান পাওয়েল। প্রতিপক্ষ কিপার আজম খানের অবিশ্বাস্য ব্যর্থতায় শুরুতেই জীবন পেয়ে ক্যারিবিয়ান এই ব্যাটসম্যান খেলেন ৩৮ বলে ৬৩ রানের ইনিংস। গ্রুপ পর্বের শীর্ষে থাকা ভাইপার্স ফাইনালের আগে চারটি ম্যাচ হেরেছিল, তিনটিই ছিল ক্যাপিটালসের বিপক্ষে।

ফাইনালেও তাদের মেনে নিতে হলো একই পরিণতি। টুর্নামেন্টের তিন আসরে দুবার রানার্স আপ হলো দলটি। ভাইপার্সকে ভুগিয়েছে চোটও। নিয়মিত অধিনায়ক লকি ফার্গুসন ও দলের সফলতম বোলার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে পায়নি তারা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভাইপার্সের শুরুটা ভালো ছিল না। দুই ওপেনার রাহমানউল্লাহ গুরবাজ ও অ্যালেক্স হেলস ফেরেন ৫ রানে। তিনে নামা ম্যাক্স হোল্ডেন সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নেন ড্যান লরেন্সকে সঙ্গে নিয়ে। মূল কাজ অবশ্যই হোল্ডেনই করেন। ৪১ রানের জুটি শেষে লরেন্স আউট হন ১০ বলে ১০ করে।

এরপর হোল্ডেন ও কারান মিলে আরও এগিয়ে নেন দলকে। ১২ চারে ৫১ বলে ৭৬ রান করা হোল্ডেনকে ফেরান রাজা। পরের জুটির বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ভাইপার্স পায় বড় সংগ্রহ। ২৯ বলে ৬৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন কারান ও আজম খান। ৩৩ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন কারান, ১৩ বলে অপরাজিত ২৭ করেন আজম। শেষ ৬ ওভারে ভাইপার্স তোলে ৮১ রান। ১৯০ রান তাড়ায় যেমন দরকার, ক্যাপিটালসের শুরুটা ছিল ঠিক এর উল্টো। আগের ম্যাচে অপরাজিত ৯৩ রান করা ডেভিড ওয়ার্নার এবার ফেরেন ৪ রানে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা গুলবাদিন নাইব আউট হয়ে যান ৫ রানে। অধিনায়ক স্যাম বিলিংস বিদায় নেন ৬ রানে। ৫ ওভার শেষে দলের রান ছিল ৩ উইকেটে ৩১। চতুর্থ উইকেটে ৫৩ বলে ৮০ রানের জুটি গড়ে দলকে পথে ফেরান শেই হোপ ও রভম্যান পাওয়েল।

পাওয়েল আউট হতে পারতেন ২ রানেই। ইংলিশ লেগ স্পিনার ন্যাথান সাউটারের বলে স্টাম্পড হয়েছিলেন তিনি ক্রিজ ছেড়ে অনেক দূর এগিয়ে গিয়ে। আউট হয়ে মাঠ ড্রেসিং রুমের পথে অনেকটা এগিয়েও যান তিনি। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার দেখতে পান, কিপার আজম বল গ্লাভসে জমিয়েছেন স্টাম্পের সামান্য সামনে থেকে। আউট হওয়ার বদলে ‘নো’ বল।

সেটির চরম খেসারত দিতে হয় দলকে। হোপ আউট হন ৩৯ বলে ৪৩ রান করে। জয়ের জন্য তখন ৬.৩ ওভারে ৭৯ রান লাগে ক্যাপিটালসের। পাওয়েলের ব্যাট তখন ঝলসে ওঠে। মহামূল্য একটি ক্যামিও খেলেন দাসুন শানাকা। ১ রানে জীবন পেয়ে লঙ্কান অলরাউন্ডার করেন ১০ বলে ২১ রান। ৩৮ বলে ৬৩ করে পাওয়েল যখন আউট হন, তখন ক্যাপিটালসের লাগে দুই ওভারে ২৪ রান। ভাইপার্সের বোলিং আক্রমণের মূল অস্ত্র মোহাম্মদ আমির আসেন তখন বোলিংয়ে। তিন ওভারে স্রেফ ২০ রান দিয়ে তখন তার দুই উইকেট। কিন্তু পাকিস্তানি পেসারকেই গুঁড়িয়ে তিনটি চারসহ ওভারে ১৫ রান নিয়ে দলকে জয়ের কিনারায় নিয়ে যান রাজা। শেষ ওভারে ৯ রানের সমীকরণে প্রথম বলে ছক্কা ও পরের বলে বাউন্ডারিতে তিনি শেষ করে দেন ম্যাচ।

পাওয়েল আউট হওয়ার পর ৮ বলে ২৫ রান তোলে ক্যাপিটালস, সবটুকুই করেন রাজা একাই। এই টুর্নামেন্টের বেশির ভাগটায় ক্যাপিটালসের অধিনায়ক ছিলেন রাজাই। কিন্তু সেরা ছন্দে ছিলেন না তিনি। বিগ ব্যাশ শেষে এখানে ফিরে শেষ চার ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেন স্যাম বিলিংস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেষের নায়ক রাজাই। দলের উৎসবের মধ্যমনিও তিনিই।