নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানের একমাত্র উপায় হিসেবে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগ হচ্ছে একমাত্র সমস্যার সমাধান।’
গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিদেশি গণমাধ্যমের বাংলাদেশি প্রতিনিধিদের সংগঠন ওভারসিজ করসপন্ডেন্স অফ বাংলাদেশ (ওক্যাব) আয়োজিত ‘মিট দ্যা ওক্যাব’ অনুষ্ঠানে ফখরুল এ মন্তব্য করেন। বিএনপি মহাসচিবের কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারতের একটা প্রচ্ছন্ন ভূমিকা রয়েছে, ভারতের কাছে বিএনপি কী প্রত্যাশা করে? এর জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কার্যকর ভূমিকা আশা করি।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সংলাপের কোনো সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগ নিতে হবে। নইলে রাজপথে সমাধান হবে।’
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের মিল প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির যে অবস্থা, আমাদেরও তেমন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ, বিদ্যুৎ গ্যাস, এসবের সঙ্গে বাংলাদেশের মিল রয়েছে। এ কারণে আমরা শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির মিলের কথা বলেছি।’
ফখরুল বলেন, ‘প্রকাশ্যে জনসভার মাধ্যমেই আমরা ঘোষণা দিয়েছি নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না।’ সংকট নিরসনে সংলাপ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যেকোনো রাজনৈতিক সংকটের সময় সরকারকে উদ্যোগ নিতে হয়। এই সরকার যদি দেশে কোনো বিশৃঙ্খলা দেখতে না চায়, যদি সহাবস্থান দেখতে চায় তাহলে অবশ্যই সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের ব্যবস্থা করতে হবে, যেটা আমরা করেছিলাম।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলছি জাতীয় ঐক্য গঠন করার জন্য। যতগুলো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছি সেখানে একটি বিষয়ে একমত হয়েছি যে, আমরা দুর্বার আন্দোলনে যাব।’
হরতাল প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা ২০১৪ সাল থেকেই আন্দোলন করছি। আমরা সমগ্র বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলাম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। আন্দোলনেই বলে দেবে আন্দোলনের ধারা কোন দিকে যাবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখন আওয়ামী লীগ সরকার পুরোপুরিভাবে একটি গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে। একদিকে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে বিভিন্ন খাতে ফেল করছে, ব্যর্থ হচ্ছে জনগণের সমস্যা সমাধান করতে। দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বি হয়ে গেছে। এই বিষয়গুলোতে সরকার এমনিতেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ সময় দেখা গেছে জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তন হয়। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী এবার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন ঘটাবো।’