নাজমুল হক, রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন কুমারপাড়া এলাকার এক কলেজশিক্ষক আনিসুজ্জামান মিলুর (৬০) বিরুদ্ধে আড়ালে মাদক ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। তিনি তানোর মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয় সূত্র ও একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জানা গেছে, আনিসুজ্জামান মিলু বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়েছেন বর্তমানে বিএনপিসহ এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীর ছত্রচ্ছায়ায় এখনো প্রভাব দেখিয়ে মাদকের রমরমা বাণিজ্য করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া পারিবারিক অবস্থানের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ মাদক কারবারে জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, তিনি প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য। তার বড় ভাই দেশের একজন উচ্চ আদালতের বিচারক হওয়ায় প্রথম দিকে কেউ তাকে সহজে সন্দেহ করেননি।
জানা গেছে, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও তার ভাইদের সহযোগী নেতাকর্মীদের ইয়াবা সাপ্লায়ার হিসেবে কাজ করতেন এই মিলু। তবে পরিবারের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, মাদকসেবনের কারণে মিলুর সঙ্গে তার বড় ভাইয়ের সম্পর্ক বহু বছর ধরেই বিচ্ছিন্ন।
একাধিক সূত্র জানায়, প্রায় এক বছর আগে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) এর অভিযানে আনিসুজ্জামান মিলু গ্রেপ্তার হন। মামলায় ৫ হাজার পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের অভিযোগ আনা হয়। তিনি ওই মামলায় প্রায় সাত মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, আনিসুজ্জামান মিলু বর্তমানে তিনি ওয়ারেন্টের আসামি হয়েও বোয়ালিয়া থানা পুলিশের নাকের ডগাই চালিয়ে যাচ্ছেন রমরমা মাদক ব্যবসা অথচ পুলিশ প্রসাশন যেনো দেখেও না দেখার ভান।
তানোর মহিলা কলেজের এক শিক্ষক বলেন, উনি নিয়মিত ক্লাস নেন না। অন্য একজন শিক্ষক তার ক্লাস নেন, কিন্তু বেতন উনি নিয়মিত তুলে নেন। প্রিন্সিপালের সহযোগিতায় তিনি এমন অনিয়ন করে পার পেয়ে যায়। এর আগেও সাংবাদিকরা ছিল প্রিন্সিপাল বলেছিলেন তিনি ছুটিতে আছে প্রতিবার একই কথা বলে ছুটির কোন কাগজ দেখাতে পারে না।
সহকারী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান নিয়মিত কলেজ করেন না। কিন্তু বেতন নিয়মিত পান- এমন অভিযোগ স্বিকার করে তানোর মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জানান, তার চাকরি আর মাত্র ২ মাস বহাল আছে। এরপর তিনি অবসরে যাবেন। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
এ বিষয়ে মোঃ সিদ্দিকুর রহমান তানোর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে একাধিকবার ফোন করে পাওয়া যায়নি।
কুমারপাড়া এলাকার প্রতিবেশী এক নারী জানান, রাত-বিরাতে মিলুর বাসায় বিভিন্ন লোকজনের যাতায়াত থাকে। আগে ভাবতাম ছাত্ররা পড়তে আসে, কিন্তু এখন যেসব মানুষের আনাগোনা দেখি তাতে মনে হচ্ছে ভিন্ন কিছু। এসব নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
বিষয়টি নিয়ে বোয়ালিয়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, যদি আদালত থেকে ওয়ারেন্ট জারি থাকে, তাহলে হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী দ্রুত গ্রেফতারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার অবস্থানও নজরদারিতে রাখা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আনিসুজ্জামান মিলুর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও সাড়া দেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো জবাব দেননি।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ






















