ঢাকা ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে অপরাধ করলে ছাড় নেই: পুলিশ কমিশনার

  • আপডেট সময় : ০২:৫৪:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার নতুন পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, রাজনৈতিক দলের কাজ নিয়ে পুলিশের মাথাব্যথা নেই, কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ‘ফৌজদারি’ অপরাধ করলে কোনো ‘ছাড় দেওয়া হবে না’।
ঢাকা মহানগর পুলিশের নেতৃত্বে আসার পর গতকাল সোমবার প্রথমবারের মত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চরণ করেন গোলাম ফারুক। পুলিশ কমিশনারের দায়িত্বে মোহা. শফিকুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত গোলাম ফারুক গত রোববার দায়িত্ব বুঝে নেন। সোমবার ডিএমপির সেন্টারে ‘কমিশনার’স মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তার সঙ্গে ছিলেন। রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে পুলিশের অবস্থানের পাশাপাশি সাইবার অপরাধ দমনে কলাকৌশল নির্ধারণ, মাদক নির্মূলে করণীয় এবং ঢাকা শহরের যানজট প্রসঙ্গও পুলিশ কমিশনারের কথায় আসে। তিনি বলেন, “জানমালের নিরাপত্তা দেখাই পুলিশের কাজ। রাজনৈতিক অনুষ্ঠানতো বিএনপি করছে। কিন্তু এই কর্মসূচির নামে ফৌজদারি অপরাধ করলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অনুষ্ঠান ‘সাইবার নিয়ন্ত্রণে’ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন পুলিশ কমিশনার গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, “কমিশনার হয়ে অপরাধ দমনে যে বিষয়টি নিয়ে আমার কাজ করতে ইচ্ছা করছে, সেটা সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ। এই সাইবার ওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অপরাধ জগতে অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণে আসবে।”
রাজধানীর থানাগুলোকে ‘গণমুখী’ করার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে গোলাম ফারুক বলেন, “সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে থানায় এখন ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা দিয়ে দিয়ে মনিটরিং হচ্ছে। সেবাদানে যে কোনো টাকাপয়সার লেনদেন হচ্ছে না, সেটি মনিটরিং করা হয়।” “প্রতিটি থানার ওসিকে তার নিজ এলাকার মসজিদে গিয়ে বলতে বলা হয়েছে, থানায় সেবা নিতে টাকার প্রয়োজন নেই।” মাদক নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কমিশনারের ভাষ্য, “মাদকে চাহিদা ও সরবরাহ দুটি ধাপ রয়েছে। আমি পাঁচটি জেলায় পুলিশ সুপার থাকা অবস্থায় মাদক নিয়ন্ত্রণে চাহিদা নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। এতে দেখা গেছে চাহিদা কমে গেলে সরবরাহ লাইন কমে যায়।”

ডিএমপির প্রতিটি বিভাগ যাতে সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়ার কথা বলেন গোলাম ফারুক, পাশাপাশি জনগণের সহযোগিতাও চান। দেশে ২০০৪-০৫ সাল থেকে জঙ্গিবাদ শুরু হয়েছে মন্তব্য করে পুলিশ কমিশনার বলেন, “নানা কারণে এখনো জঙ্গিবাদী চর্চা পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না। বন্ধ করতে হলে সাইবার ওয়ার্ল্ড ভালোভাবে মনিটর করতে হবে। “
রাজধানীতে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের চলমান কাজ আরও গতিশীল করতে পুলিশ প্রশাসন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান কমিশনার গোলাম ফারুক। এ কাজে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, “জনগণের সহযোগিতা পেলে উই উইল মেক ঢাকা বেটার অ্যান্ড সেফার।” ‘মিট দ্য প্রেসে’ সাংবাদিকদের প্রশ্নে উঠে আসে ‘যানজট’ প্রসঙ্গও। ঢাকা শহর ‘অপরিকল্পিতভাবে’ গড়ে উঠেছে মন্তব্য করে নতুন কমিশনার গোলাম ফারুক বলেন, “ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনের সময় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি; সেই পরিকল্পনা নিয়ে আবার কাজ করব। তবে এ মুহূর্তে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কারণে যানজট হচ্ছে।”
দ্বাদশ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা গোলাম ফারুক পুলিশে যোগ দেন ১৯৯১ সালে। ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ঝালকাঠি, ঠাকুরগাঁও জেলায় তিনি পুলিশ সুপার ছিলেন। সারদা পুলিশ অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ এবং চট্টগ্রাম, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হিসাবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬৪ সালের ১ অক্টোবর টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ঘাটানদি গ্রামে খন্দকার গোলাম ফারুকের জন্ম। সে হিসেবে ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর পর্যন্ত তার চাকরির মেয়াদ রয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহাল ও সীমানা পুনর্নির্ধারণে সব দল একমত

রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে অপরাধ করলে ছাড় নেই: পুলিশ কমিশনার

আপডেট সময় : ০২:৫৪:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার নতুন পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, রাজনৈতিক দলের কাজ নিয়ে পুলিশের মাথাব্যথা নেই, কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ‘ফৌজদারি’ অপরাধ করলে কোনো ‘ছাড় দেওয়া হবে না’।
ঢাকা মহানগর পুলিশের নেতৃত্বে আসার পর গতকাল সোমবার প্রথমবারের মত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চরণ করেন গোলাম ফারুক। পুলিশ কমিশনারের দায়িত্বে মোহা. শফিকুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত গোলাম ফারুক গত রোববার দায়িত্ব বুঝে নেন। সোমবার ডিএমপির সেন্টারে ‘কমিশনার’স মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তার সঙ্গে ছিলেন। রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে পুলিশের অবস্থানের পাশাপাশি সাইবার অপরাধ দমনে কলাকৌশল নির্ধারণ, মাদক নির্মূলে করণীয় এবং ঢাকা শহরের যানজট প্রসঙ্গও পুলিশ কমিশনারের কথায় আসে। তিনি বলেন, “জানমালের নিরাপত্তা দেখাই পুলিশের কাজ। রাজনৈতিক অনুষ্ঠানতো বিএনপি করছে। কিন্তু এই কর্মসূচির নামে ফৌজদারি অপরাধ করলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অনুষ্ঠান ‘সাইবার নিয়ন্ত্রণে’ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন পুলিশ কমিশনার গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, “কমিশনার হয়ে অপরাধ দমনে যে বিষয়টি নিয়ে আমার কাজ করতে ইচ্ছা করছে, সেটা সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ। এই সাইবার ওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অপরাধ জগতে অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণে আসবে।”
রাজধানীর থানাগুলোকে ‘গণমুখী’ করার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে গোলাম ফারুক বলেন, “সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে থানায় এখন ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা দিয়ে দিয়ে মনিটরিং হচ্ছে। সেবাদানে যে কোনো টাকাপয়সার লেনদেন হচ্ছে না, সেটি মনিটরিং করা হয়।” “প্রতিটি থানার ওসিকে তার নিজ এলাকার মসজিদে গিয়ে বলতে বলা হয়েছে, থানায় সেবা নিতে টাকার প্রয়োজন নেই।” মাদক নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কমিশনারের ভাষ্য, “মাদকে চাহিদা ও সরবরাহ দুটি ধাপ রয়েছে। আমি পাঁচটি জেলায় পুলিশ সুপার থাকা অবস্থায় মাদক নিয়ন্ত্রণে চাহিদা নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। এতে দেখা গেছে চাহিদা কমে গেলে সরবরাহ লাইন কমে যায়।”

ডিএমপির প্রতিটি বিভাগ যাতে সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়ার কথা বলেন গোলাম ফারুক, পাশাপাশি জনগণের সহযোগিতাও চান। দেশে ২০০৪-০৫ সাল থেকে জঙ্গিবাদ শুরু হয়েছে মন্তব্য করে পুলিশ কমিশনার বলেন, “নানা কারণে এখনো জঙ্গিবাদী চর্চা পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না। বন্ধ করতে হলে সাইবার ওয়ার্ল্ড ভালোভাবে মনিটর করতে হবে। “
রাজধানীতে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের চলমান কাজ আরও গতিশীল করতে পুলিশ প্রশাসন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান কমিশনার গোলাম ফারুক। এ কাজে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, “জনগণের সহযোগিতা পেলে উই উইল মেক ঢাকা বেটার অ্যান্ড সেফার।” ‘মিট দ্য প্রেসে’ সাংবাদিকদের প্রশ্নে উঠে আসে ‘যানজট’ প্রসঙ্গও। ঢাকা শহর ‘অপরিকল্পিতভাবে’ গড়ে উঠেছে মন্তব্য করে নতুন কমিশনার গোলাম ফারুক বলেন, “ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনের সময় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি; সেই পরিকল্পনা নিয়ে আবার কাজ করব। তবে এ মুহূর্তে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কারণে যানজট হচ্ছে।”
দ্বাদশ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা গোলাম ফারুক পুলিশে যোগ দেন ১৯৯১ সালে। ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ঝালকাঠি, ঠাকুরগাঁও জেলায় তিনি পুলিশ সুপার ছিলেন। সারদা পুলিশ অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ এবং চট্টগ্রাম, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হিসাবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬৪ সালের ১ অক্টোবর টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ঘাটানদি গ্রামে খন্দকার গোলাম ফারুকের জন্ম। সে হিসেবে ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর পর্যন্ত তার চাকরির মেয়াদ রয়েছে।