প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের ‘সিন্ধ প্রদেশ আবারো ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে’ এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ। তিনি বলেছেন, রাজনাথ সিংকে ‘দ্বিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ’ করতে হবে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ বলেন, সিন্ধ পাকিস্তানের অবিচ্ছেদ্য ও অবিচ্ছিন্ন অংশ। সিন্ধ পাকিস্তানের ছিল, আছে ও থাকবে।
ভারতীয় মন্ত্রীর ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের’ জবাবে মুরাদ আলি শাহ বলেন, রাজনাথ সিং ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞ। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টিরও আগে ১৯৩৬ সালে সিন্ধ বোম্বে প্রেসিডেন্সি থেকে পৃথক হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, সিন্ধের মানুষ বহুদিন ধরেই তাদের স্বায়ত্তশাসন, মর্যাদা ও রাজনৈতিক পরিচয়কে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। মুখ্যমন্ত্রী আরো মন্তব্য করেন যে, ভারতীয় মন্ত্রীকে নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিভাজন নিয়ে চিন্তা করা উচিত, অন্যের বিষয়ে দিবাস্বপ্ন দেখার বদলে।
এর আগে ভারতীয় গণমাধ্যম রাজনাথ সিংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, আজ সিন্ধ ভারতের অংশ না হলেও, সভ্যতার দিক থেকে সিন্ধ সবসময়ই ভারতের অংশ থাকবে। আর ভূমির ব্যাপারে বলতে গেলে সীমান্ত পরিবর্তন হতে পারে। কে জানে, আগামীকাল আবারো সিন্ধ ভারতে ফিরে আসতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আরো জানায়, সিং দাবি করেছেন যে তার প্রজন্মের সিন্ধি হিন্দুরা কখনোই সিন্ধের পাকিস্তানে যুক্ত হওয়াকে মন থেকে মেনে নেননি। এদিকে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এফও) গত রোববার (২৩ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে ভারতীয় মন্ত্রীর বক্তব্যের কঠোর নিন্দা জানায়। বিবৃতিকে তারা বিভ্রান্তিকর, ইতিহাস-বিকৃতিমূলক ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে।
এফও জানায়, রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্য বিস্তারবাদী হিন্দুত্ব মানসিকতার প্রতিফলন, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে, স্বীকৃত সীমান্তকে চ্যালেঞ্জ জানায় ও সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অখণ্ডতাকে ক্ষুণ্ন করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতকে উসকানিমূলক বক্তব্য বন্ধ করতে আহ্বান জানায় ও নিজেদের নাগরিকদের, বিশেষ করে, নিপীড়নের শিকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগী হতে বলে। তারা ধর্মীয় বিদ্বেষনির্ভর সহিংসতার দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার গুরুত্ব তুলে ধরে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো উল্লেখ করে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বহুদিন ধরে চলমান অসন্তোষ, পরিচয়ভিত্তিক বৈষম্য ও রাষ্ট্র-সমর্থিত সহিংসতার দিকেও ভারত সরকারকে নজর দিতে হবে। কাশ্মির নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে এফও জানায়, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ও কাশ্মীরিদের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মির বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে ভারতকে ‘বিশ্বাসযোগ্য উদ্যোগ’ নিতে হবে। পাকিস্তান ন্যায়বিচার ও আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ সমাধানে অটল থাকলেও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকবে।
সূত্র: জিও নিউজ
সানা/ওআ/আপ্র/২৫/১১/২০২৫





















