নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, রমনার বটমূলের আয়োজনের পর বিকালে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে হয়ে গেল কনসার্ট ও ব্যতিক্রমী ড্রোন শো।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সোমবার বিকাল ৩টায় কনসার্ট শুরু হয় বান্দরবানের ‘বেসিক গিটার লার্নিং স্কুল’ এর পরিবেশনা দিয়ে। এরপর ‘আর এন আর’ সংগীত পরিবেশন করে। সমবেত কণ্ঠে শিল্পীরা শোনান ‘এসো হে বৈশাখ’ গান।
কনসার্টে একক সংগীত পরিবেশন করেন মিঠুন চক্র। ‘দেওরা’ গানসহ আরো একটি পালা গেয়ে শোনান ইসলামউদ্দিন পালাকার। গারো জাতিগোষ্ঠীর ব্যান্ড ‘এফ মাইনর’ সংগীত পরিবেশন করে। ‘চলো নীরালায়’ গানসহ তিনটি একক সংগীত পরিবেশন করেন আতিয়া আনিশা। এরপর রাকিব, সাগর দেওয়ান, আরজ আলী ওস্তাদ গান পরিবেশন করেন।
এ ছাড়া আহমেদ হাসান সানি গেয়ে শোনান ‘মাঝে মাঝে তুমি এলে’, ‘মানুষ কেন এরকম’ ও ‘গল্প না’ গান। জুলাই আন্দোলনের গানসহ তিনটি গান করেন পারশা। এরপর গান পরিবেশন করে ‘অ্যাশেজ’ ব্যান্ড।
কনসার্টের পর সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয় ড্রোন শো, যার শুরুর মোটিফ জুলাই অভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে সাজানো হয়। ১৪ মিনিটের সেই প্রদর্শনীতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের অকুতোভয় আত্মাহুতি, নারী জাগরণ, দেশীয় সংস্কৃতি ও ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি তুলে ধরা হয়।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এ আয়োজনে কারিগরি সহায়তা করেছে ঢাকায় চীন দূতাবাস। ২ হাজার ৬০০ ড্রোন ব্যবহার করে মোট ১২টি মোটিফ ফুটিয়ে তোলা হয় শো-তে।
‘ড্রোন শো’ পরিচালনায় চীনের বিশেষজ্ঞ ছয়জনের দল গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাজ শুরু করে। ১৩ চীনা পাইলট বা ড্রোন পরিচালনায় অভিজ্ঞরা এই শো পরিচালনা করেন।
কনসার্ট ও ড্রোন শো ঘিরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মানুষের ঢল নামে। বিকালের অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সচিব মো. মফিদুর রহমান, বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির সচিব ও মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন উপস্থিত ছিলেন।
আকাশে আবু সাঈদ-মুগ্ধ, লাখো জনতার চোখে জল টলমল: বাংলা নববর্ষ উদযাপনে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে বর্ণাঢ্য ‘ড্রোন শো’ সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয়। এ ড্রোন শোতে ১৯৭১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়কালকে তুলে ধরা হয় বিভিন্ন প্রতিকৃতির মাধ্যমে। দেখানো হয় ‘২৪-এর বীর’, পায়রার খাঁচা ভাঙা থিম, ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনা এবং বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্বের শুভেচ্ছা বার্তা।
উপস্থিত লক্ষাধিক জনতা মুগ্ধ হয়ে দেখেছেন বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো আবু সাঈদ, পানির বোতল হাতে শহীদ মুগ্ধকে। এ ছাড়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রিকশায় দাঁড়িয়ে সালাম, জুলাই আন্দোলনের প্রসঙ্গ ও গণ-অভ্যুত্থান থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার প্রতিবাদও শোতে স্থান পেয়েছে প্রতীকীভাবে।