ঢাকা ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

রাজধানীতে ঈদ জামাত শেষে আনন্দমিছিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

  • আপডেট সময় : ০২:২৫:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫
  • ৬১ বার পড়া হয়েছে

জামাতের পর বের হয় বর্ণাঢ্য ঈদ আনন্দমিছিল -ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আয়োজনে রাজধানীর শেরে-বাংলানগর পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরের বৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের জামাত শুরু হয়। জামাতে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।

জামাতের পর সবাইকে নিয়ে বের হয় বর্ণাঢ্য আনন্দমিছিল। মিছিলটি এই মাঠ থেকে শুরু হয়ে আগারগাঁও সড়ক ধরে বিজয়সরণী-মনিপুরিপাড়া-খামারবাড়ি দিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে সেমাই ও মিষ্টি দিয়ে আগত সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়।

শেরে-বাংলানগরে পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরের বৃহৎ জামাত  -ছবি: সংগৃহীত

ডিএনসিসির কর্মকর্তারা জানান, ঈদের জামাতের জন্য পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে প্রায় ৪৬ হাজার বর্গফুট আয়তনের প্যান্ডেল করা হয়। প্যান্ডেলের বাইরেও নামাজ আদায়ের জন্য কার্পেট ও নামাজের বিছানা রাখা হয়। জামাত শুরুর আধঘণ্টা আগে সকাল আটটার দিকে নির্ধারিত প্যান্ডেল মুসল্লিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এর পরে যাঁরা আসেন, তাঁরা খোলা মাঠে নামাজে অংশ নেন।

জামাত শেষে বাণিজ্য মেলার পুরোনো মাঠ থেকে শুরু হয় ঈদ আনন্দমিছিল। ব্যান্ডদলের বাদ্যবাজনার তালে তালে নেচে-গেয়ে হইহল্লোড় করে আনন্দমুখর পরিবেশে মানুষ অংশগ্রহণ করেন এই মিছিলে।

ঈদের শুভেচ্ছা ও সচেতনতার বার্তা-সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানুষ ‘ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক’ বলে আনন্দধ্বনি তোলেন। মিছিলের অগ্রভাগে দুই সারিতে ছিল আটটি সুসজ্জিত ঘোড়া। আরও ছিল ১৫টি ঘোড়ার গাড়ি, মোগল ও সুলতানি আমলের ইতিহাস-সংবলিত ১০টি পাপেট শো। আনন্দমিছিল থেকে ন্যায্য ঢাকা শহর গড়ার বার্তা দেওয়া হয়। মিছিলটি খামারবাড়ি মোড় হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে এসে শেষ হয়।

রাজধানীতে ঈদ জামাত শেষে আনন্দমিছিল- ছবি সংগৃহীত

আনন্দমিছিল শেষে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। উন্মুক্ত মঞ্চে জাসাসের শিল্পীরা ঈদের দর্শকপ্রিয় গান ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গানটি পরিবেশন করেন। এরপর ‘বন্ধু তিন দিন তোর বাড়িত গেলাম, দেখা পাইলাম না’, ‘আমার গরুর গাড়িতে বউ সাজিয়ে’র মতো জনপ্রিয় গানগুলো শিল্পীরা পরিবেশন করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এ সময় সাধারণ মানুষদের সেমাই ও মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।

মিছিলের অগ্রভাগে দুই সারিতে সুসজ্জিত ঘোড়া ছিল -ছবি: সংগৃহীত

আনন্দমিছিলে বিভিন্ন ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা অংশগ্রহণ করেছেন জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘ঈদের আনন্দ সকলের। ঈদের যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল, ঈদের নামাজের পর ঘরে ঢুকে যাওয়া এবং শুধু নিজেদের পরিবারকে সময় দেওয়া, সেটার পরিবর্তন দরকার। কারণ, ঈদ মানেই জমায়েত, সমাজের সঙ্গে, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগই নেওয়া হয়েছে।’

মিছিলে অংশ নেওয়া এক শিশু -ছবি: সংগৃহীত

এই জামাত ও আনন্দমিছিলে অংশ নেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে তিনি গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণ করেন।

জামাত ও আনন্দমিছিলে অংশ নেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া -ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, এবারের ঈদটাকে সত্যিকার অর্থেই ঈদ ঈদ মনে হচ্ছে। ঢাকার যে ঐতিহ্যবাহী ঈদ মিছিল, সেটা হয়তো কয়েক শ বছর পর আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে। আগামী দিনে প্রতিবছর এভাবেই নগরবাসী এক হয়ে ঈদ উদ্যাপন করবে। এখন থেকে ঈদ উৎসব হবে আনন্দময়। ঘরে বসে টিভি দেখে সময় কাটাতে হবে না। সবাই একসঙ্গে ঈদ মিছিল করবে, মেলা উপভোগ করবে, সবাই একসঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেবে।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রাজধানীতে ঈদ জামাত শেষে আনন্দমিছিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

আপডেট সময় : ০২:২৫:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আয়োজনে রাজধানীর শেরে-বাংলানগর পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরের বৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের জামাত শুরু হয়। জামাতে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।

জামাতের পর সবাইকে নিয়ে বের হয় বর্ণাঢ্য আনন্দমিছিল। মিছিলটি এই মাঠ থেকে শুরু হয়ে আগারগাঁও সড়ক ধরে বিজয়সরণী-মনিপুরিপাড়া-খামারবাড়ি দিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে সেমাই ও মিষ্টি দিয়ে আগত সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়।

শেরে-বাংলানগরে পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরের বৃহৎ জামাত  -ছবি: সংগৃহীত

ডিএনসিসির কর্মকর্তারা জানান, ঈদের জামাতের জন্য পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে প্রায় ৪৬ হাজার বর্গফুট আয়তনের প্যান্ডেল করা হয়। প্যান্ডেলের বাইরেও নামাজ আদায়ের জন্য কার্পেট ও নামাজের বিছানা রাখা হয়। জামাত শুরুর আধঘণ্টা আগে সকাল আটটার দিকে নির্ধারিত প্যান্ডেল মুসল্লিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এর পরে যাঁরা আসেন, তাঁরা খোলা মাঠে নামাজে অংশ নেন।

জামাত শেষে বাণিজ্য মেলার পুরোনো মাঠ থেকে শুরু হয় ঈদ আনন্দমিছিল। ব্যান্ডদলের বাদ্যবাজনার তালে তালে নেচে-গেয়ে হইহল্লোড় করে আনন্দমুখর পরিবেশে মানুষ অংশগ্রহণ করেন এই মিছিলে।

ঈদের শুভেচ্ছা ও সচেতনতার বার্তা-সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানুষ ‘ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক’ বলে আনন্দধ্বনি তোলেন। মিছিলের অগ্রভাগে দুই সারিতে ছিল আটটি সুসজ্জিত ঘোড়া। আরও ছিল ১৫টি ঘোড়ার গাড়ি, মোগল ও সুলতানি আমলের ইতিহাস-সংবলিত ১০টি পাপেট শো। আনন্দমিছিল থেকে ন্যায্য ঢাকা শহর গড়ার বার্তা দেওয়া হয়। মিছিলটি খামারবাড়ি মোড় হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে এসে শেষ হয়।

রাজধানীতে ঈদ জামাত শেষে আনন্দমিছিল- ছবি সংগৃহীত

আনন্দমিছিল শেষে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। উন্মুক্ত মঞ্চে জাসাসের শিল্পীরা ঈদের দর্শকপ্রিয় গান ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গানটি পরিবেশন করেন। এরপর ‘বন্ধু তিন দিন তোর বাড়িত গেলাম, দেখা পাইলাম না’, ‘আমার গরুর গাড়িতে বউ সাজিয়ে’র মতো জনপ্রিয় গানগুলো শিল্পীরা পরিবেশন করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এ সময় সাধারণ মানুষদের সেমাই ও মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।

মিছিলের অগ্রভাগে দুই সারিতে সুসজ্জিত ঘোড়া ছিল -ছবি: সংগৃহীত

আনন্দমিছিলে বিভিন্ন ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা অংশগ্রহণ করেছেন জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘ঈদের আনন্দ সকলের। ঈদের যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল, ঈদের নামাজের পর ঘরে ঢুকে যাওয়া এবং শুধু নিজেদের পরিবারকে সময় দেওয়া, সেটার পরিবর্তন দরকার। কারণ, ঈদ মানেই জমায়েত, সমাজের সঙ্গে, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগই নেওয়া হয়েছে।’

মিছিলে অংশ নেওয়া এক শিশু -ছবি: সংগৃহীত

এই জামাত ও আনন্দমিছিলে অংশ নেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে তিনি গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণ করেন।

জামাত ও আনন্দমিছিলে অংশ নেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া -ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, এবারের ঈদটাকে সত্যিকার অর্থেই ঈদ ঈদ মনে হচ্ছে। ঢাকার যে ঐতিহ্যবাহী ঈদ মিছিল, সেটা হয়তো কয়েক শ বছর পর আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে। আগামী দিনে প্রতিবছর এভাবেই নগরবাসী এক হয়ে ঈদ উদ্যাপন করবে। এখন থেকে ঈদ উৎসব হবে আনন্দময়। ঘরে বসে টিভি দেখে সময় কাটাতে হবে না। সবাই একসঙ্গে ঈদ মিছিল করবে, মেলা উপভোগ করবে, সবাই একসঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেবে।