ঢাকা ০৯:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাকসুতে সমন্বয়কদের ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্যে’ ভাঙন, সরে গেলেন ৩ জন

  • আপডেট সময় : ০৯:২৭:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সাবেক তিন সমন্বয়কের নেতৃত্বে গঠিত ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মতানৈক্য এবং ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে প্যানেল থেকে সরে গেছেন এজিএস প্রার্থীসহ তিনজন।
জুলাই আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মেহেদী সজীব, সালাহউদ্দিন আম্মার এবং আকিল বিন তালেবের নেতৃত্বে এই প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছিল গত ১০ সেপ্টেম্বর।

কেন্দ্রীয় সংসদের ২৩টি পদের মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে মেহেদী, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে আম্মার এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে তালেবকে প্রার্থী করে ১৮টিতে মনোনয়ন দিয়েছিল এই প্যানেল। এর মধ্যে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্যানেল থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন শীর্ষ তিন পদের একজন আকিল বিন তালেব।

এ বিষয়ে আইন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তালেব বলেন, সাম্প্রতিক নানা বাস্তবতায় এবং ব্যক্তিগত কিছু কারণে আমি ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেল থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। কোনো রাজনৈতিক কারণে নয়, বরং আমি মনে করছি আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রচারণা চালালে ভালো করবো। তালেব আরো বলেন, এখন মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তবে এখন আমার পক্ষে এক সঙ্গে এজিএস এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি পদে প্রচারণা চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমি কেবল সিনেট সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এর আগে একই প্যানেল থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সংসদে মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক ফাহির আমিন এবং সহ মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রার্থী এম শামিম। ফাহির আমিন ১২ সেপ্টেম্বর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ব্যক্তিগত ও পারিপার্শ্বিক কারণে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং প্যানেল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

সহ মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রার্থী এবং আমার দেশ পত্রিকার রাজশাহী প্রতিনিধি এম শামিম প্যানেলের পাশাপাশি নির্বাচন থেকেও সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ১৭ সেপ্টেম্বর। এ বিষয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকতার নিরপেক্ষতা রক্ষার স্বার্থে এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার গুঞ্জন থাকায় আপাতত প্যানেল-নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।

এদিকে আগে থেকেই এই প্যানেলের অনেকেরই ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে- এমন প্রচার রয়েছে ক্যাম্পাসে। যদিও ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে নিজেদের প্যানেল ঘোষণা করেছে। তার আগ থেকেই ক্যাম্পাসে ‘ডামি প্যানেল’ বা ‘ছায়া দল’ বিষয়টি নিয়ে জোর আলোচনা চলছিল। ফলে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ সেই ডামি বা ছায়া দল কি-না সেই প্রশ্ন উঠেছিল।

প্যানেলে সহ-সভাপতি (ভিপি) ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি প্রার্থী মেহেদী সজীব জুলাই বিপ্লব ও নানা দাবি দাওয়ায় ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ হলেও রাকসু নির্বাচনে নিয়ে প্রচারে তেমন নেই। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সালাউদ্দিন আম্মারের সঙ্গে শিবির সংশ্লিষ্টতার গুঞ্জন রয়েছে অনেকদিন থেকেই। এরই মাঝে তাদের নেতৃত্বের প্যানেল ভেঙে যাওয়ায় রাকসু নির্বাচনে শিবিরের ভোট বাড়বে বলে মন্তব্য করছেন বিভিন্ন সংগঠনের প্রার্থীসহ অনেকেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বতন্ত্র সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী বলেন, এসব ‘এ’ টিম ‘বি’ টিমের খেলায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। আমরা যারা সাধারণ প্রার্থী আছি তারা যেন প্রচার না চালাতে পারি সেটির একটা ইস্যুও হতে পারে এই পদত্যাগ। আর নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে প্রার্থীতা থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা উনি কীভাবে দেন? মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় কেন উনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি?

‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মেহেদী সজীব বলেন, যখন আমরা প্যানেলটি সাজাই, তখন কারও সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ হয়নি। পরবর্তীতে অনেকেই ব্যক্তিগত কারণে প্যানেল থেকে সরে গেছেন। তবে যারা সরে গেছেন, তাদের সিদ্ধান্তে প্যানেলের কার্যক্রম বা শক্তিতে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে আমরা আশা করি।

শিবিরের প্যানেলকে জিতিয়ে দিতে নিজেও প্রচার বন্ধ রেখেছেন কি-না প্রশ্নের উত্তরে সজীব বলেন, অন্য কাউকে জিতানো আমাদের কাজ না। আমার শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেভাবে নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারছি না। তবে আমাদের প্যানেলের বাকি সদস্যরা প্রচার চালাচ্ছেন।

সানা/কেএমএএ/আপ্র/২০/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রাকসুতে সমন্বয়কদের ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্যে’ ভাঙন, সরে গেলেন ৩ জন

আপডেট সময় : ০৯:২৭:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সাবেক তিন সমন্বয়কের নেতৃত্বে গঠিত ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মতানৈক্য এবং ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে প্যানেল থেকে সরে গেছেন এজিএস প্রার্থীসহ তিনজন।
জুলাই আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মেহেদী সজীব, সালাহউদ্দিন আম্মার এবং আকিল বিন তালেবের নেতৃত্বে এই প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছিল গত ১০ সেপ্টেম্বর।

কেন্দ্রীয় সংসদের ২৩টি পদের মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে মেহেদী, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে আম্মার এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে তালেবকে প্রার্থী করে ১৮টিতে মনোনয়ন দিয়েছিল এই প্যানেল। এর মধ্যে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্যানেল থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন শীর্ষ তিন পদের একজন আকিল বিন তালেব।

এ বিষয়ে আইন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তালেব বলেন, সাম্প্রতিক নানা বাস্তবতায় এবং ব্যক্তিগত কিছু কারণে আমি ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেল থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। কোনো রাজনৈতিক কারণে নয়, বরং আমি মনে করছি আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রচারণা চালালে ভালো করবো। তালেব আরো বলেন, এখন মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তবে এখন আমার পক্ষে এক সঙ্গে এজিএস এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি পদে প্রচারণা চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমি কেবল সিনেট সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এর আগে একই প্যানেল থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সংসদে মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক ফাহির আমিন এবং সহ মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রার্থী এম শামিম। ফাহির আমিন ১২ সেপ্টেম্বর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ব্যক্তিগত ও পারিপার্শ্বিক কারণে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং প্যানেল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

সহ মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রার্থী এবং আমার দেশ পত্রিকার রাজশাহী প্রতিনিধি এম শামিম প্যানেলের পাশাপাশি নির্বাচন থেকেও সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ১৭ সেপ্টেম্বর। এ বিষয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকতার নিরপেক্ষতা রক্ষার স্বার্থে এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার গুঞ্জন থাকায় আপাতত প্যানেল-নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।

এদিকে আগে থেকেই এই প্যানেলের অনেকেরই ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে- এমন প্রচার রয়েছে ক্যাম্পাসে। যদিও ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে নিজেদের প্যানেল ঘোষণা করেছে। তার আগ থেকেই ক্যাম্পাসে ‘ডামি প্যানেল’ বা ‘ছায়া দল’ বিষয়টি নিয়ে জোর আলোচনা চলছিল। ফলে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ সেই ডামি বা ছায়া দল কি-না সেই প্রশ্ন উঠেছিল।

প্যানেলে সহ-সভাপতি (ভিপি) ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি প্রার্থী মেহেদী সজীব জুলাই বিপ্লব ও নানা দাবি দাওয়ায় ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ হলেও রাকসু নির্বাচনে নিয়ে প্রচারে তেমন নেই। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সালাউদ্দিন আম্মারের সঙ্গে শিবির সংশ্লিষ্টতার গুঞ্জন রয়েছে অনেকদিন থেকেই। এরই মাঝে তাদের নেতৃত্বের প্যানেল ভেঙে যাওয়ায় রাকসু নির্বাচনে শিবিরের ভোট বাড়বে বলে মন্তব্য করছেন বিভিন্ন সংগঠনের প্রার্থীসহ অনেকেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বতন্ত্র সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী বলেন, এসব ‘এ’ টিম ‘বি’ টিমের খেলায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। আমরা যারা সাধারণ প্রার্থী আছি তারা যেন প্রচার না চালাতে পারি সেটির একটা ইস্যুও হতে পারে এই পদত্যাগ। আর নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে প্রার্থীতা থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা উনি কীভাবে দেন? মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় কেন উনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি?

‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মেহেদী সজীব বলেন, যখন আমরা প্যানেলটি সাজাই, তখন কারও সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ হয়নি। পরবর্তীতে অনেকেই ব্যক্তিগত কারণে প্যানেল থেকে সরে গেছেন। তবে যারা সরে গেছেন, তাদের সিদ্ধান্তে প্যানেলের কার্যক্রম বা শক্তিতে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে আমরা আশা করি।

শিবিরের প্যানেলকে জিতিয়ে দিতে নিজেও প্রচার বন্ধ রেখেছেন কি-না প্রশ্নের উত্তরে সজীব বলেন, অন্য কাউকে জিতানো আমাদের কাজ না। আমার শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেভাবে নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারছি না। তবে আমাদের প্যানেলের বাকি সদস্যরা প্রচার চালাচ্ছেন।

সানা/কেএমএএ/আপ্র/২০/০৯/২০২৫