ঢাকা ০৩:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রমজানের প্রভাব নিত্যপণ্যের বাজারে

  • আপডেট সময় : ১২:৪২:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ সংবাদদাতা : রমজান শুরু হতে দুই মাস বাকি। তবুও পণ্যের বাজারে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। নতুন করে বেড়েছে ডিম, আদা, রসুন, ছোলা, মসুর ডাল, জিরা ও মসলাসহ কয়েকটি পণ্যের দাম। এরমধ্যে গত এক মাসে কাঁচা মরিচের কেজিতে দাম বেড়েছে ১২২ শতাংশেরও বেশি। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত এক মাসে দেশি রসুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ৩৫ দশমিক ৭১ শতাংশ। গত এক মাসে ডিমের দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আর জিরার দাম বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮২ শতাংশ।
টিসিবির তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের এই সময়ে দেশি শুকনো মরিচের দাম ছিল ১৬০ টাকা কেজি। এখন সেই একই মরিচ কিনতে হচ্ছে ৪২০ টাকা কেজি দরে। টিসিবির হিসাবে এই পণ্যটির দাম বেড়েছে ১৩২ শতাংশের বেশি। একইভাবে দেশি রসুনের দাম বেড়েছে ১২৭ দশমিক ২৭ শতাংশ। বর্তমানে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এই রসুন। গত বছরের এই সময়ে ৪০ টাকায় এই রসুন পাওয়া যেতো। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, আদার দাম বেড়েছে ১১১ দশমিক ১১ শতাংশ। আদার কেজি এখন ২৮০ টাকা। একই পরিমাণ আদা গত বছরের এই সময়ে ৬০ টাকায় পাওয়া যেতো। এ ছাড়া গত এক বছরে অন্তত ৩৫ ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে ‘ডাবল ডিজিট’ হারে। এ ছাড়া শীতের ভরা মৌসুমে প্রায় সব ধরনের সবজির দামও চড়া।
বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আদার কেজি এক মাসের ব্যবধানে বেড়ে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। গত এক সপ্তাহে চায়না আদার দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৪০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগে ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে এক মাস আগে দাম ছিল আরও কম। তখন কেজি বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১৬০ টাকায়। সেই হারে দেশি আদার দাম কিছুটা কম; ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। এ মানের আদার কেজি এক মাস আগে কেনা গেছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।
এছাড়া সপ্তাহখানেক আগে আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা দরে। আর দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে কেনা গেছে ১০০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে।
জানা গেছে, কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে জিরা ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা এবং দারুচিনি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকার ছোট এলাচের কেজি দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, সব ধরনের ডালের দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ছোলার কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা। বাজারে প্রতিকেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। পাঁচ দিন আগে কেনা যেতো ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। এছাড়া এক সপ্তাহে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডালের দাম এখন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার বাজারে কাতল মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, পাবদা ৪৫০ টাকা, মলা ৩৬০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, শিং মাছ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাঙাশ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ২৬০ টাকা, বোয়াল ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, টেংরা ছোট ৫০০ আর বড় ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, রুই ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ এবং গলদা চিংড়ি ৭০০ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে শীতের ভরা মৌসুমেও সবজির দাম চড়া। সরবরাহ প্রচুর, তবু সব সবজিতেই অতিরিক্ত ১০ থেকে ২০ টাকা গুনতে হচ্ছে। এক কেজি বেগুন কিনতে লাগছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। মুলার কেজি এখনও ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। কাঁচামরিচের দাম মাঝে ক’দিন কমে আবার বেড়েছে। কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। ১৫ থেকে ২০ দিন আগে শিমের কেজি ৩০ টাকার নিচে নেমেছিল। এখন বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় পৌঁছেছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০, শসা ৫০ থেকে ৬০, টমেটো ৩০ থেকে ৫০, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এদিকে কিছু দিন স্বস্তিতে পার হওয়ার পর আবারও বেড়েছে ডিমের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে হালিতে ডিমের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।
গরুর মাংস আগের মতোই ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে খাসির মাংস ৯০০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি প্রতিকেজি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়, লেয়ার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় এবং ব্রয়লারের কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রমজানের প্রভাব নিত্যপণ্যের বাজারে

আপডেট সময় : ১২:৪২:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৩

বিশেষ সংবাদদাতা : রমজান শুরু হতে দুই মাস বাকি। তবুও পণ্যের বাজারে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। নতুন করে বেড়েছে ডিম, আদা, রসুন, ছোলা, মসুর ডাল, জিরা ও মসলাসহ কয়েকটি পণ্যের দাম। এরমধ্যে গত এক মাসে কাঁচা মরিচের কেজিতে দাম বেড়েছে ১২২ শতাংশেরও বেশি। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত এক মাসে দেশি রসুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ৩৫ দশমিক ৭১ শতাংশ। গত এক মাসে ডিমের দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আর জিরার দাম বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮২ শতাংশ।
টিসিবির তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের এই সময়ে দেশি শুকনো মরিচের দাম ছিল ১৬০ টাকা কেজি। এখন সেই একই মরিচ কিনতে হচ্ছে ৪২০ টাকা কেজি দরে। টিসিবির হিসাবে এই পণ্যটির দাম বেড়েছে ১৩২ শতাংশের বেশি। একইভাবে দেশি রসুনের দাম বেড়েছে ১২৭ দশমিক ২৭ শতাংশ। বর্তমানে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এই রসুন। গত বছরের এই সময়ে ৪০ টাকায় এই রসুন পাওয়া যেতো। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, আদার দাম বেড়েছে ১১১ দশমিক ১১ শতাংশ। আদার কেজি এখন ২৮০ টাকা। একই পরিমাণ আদা গত বছরের এই সময়ে ৬০ টাকায় পাওয়া যেতো। এ ছাড়া গত এক বছরে অন্তত ৩৫ ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে ‘ডাবল ডিজিট’ হারে। এ ছাড়া শীতের ভরা মৌসুমে প্রায় সব ধরনের সবজির দামও চড়া।
বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আদার কেজি এক মাসের ব্যবধানে বেড়ে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। গত এক সপ্তাহে চায়না আদার দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৪০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগে ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে এক মাস আগে দাম ছিল আরও কম। তখন কেজি বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১৬০ টাকায়। সেই হারে দেশি আদার দাম কিছুটা কম; ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। এ মানের আদার কেজি এক মাস আগে কেনা গেছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।
এছাড়া সপ্তাহখানেক আগে আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা দরে। আর দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে কেনা গেছে ১০০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে।
জানা গেছে, কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে জিরা ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা এবং দারুচিনি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকার ছোট এলাচের কেজি দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, সব ধরনের ডালের দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ছোলার কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা। বাজারে প্রতিকেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। পাঁচ দিন আগে কেনা যেতো ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। এছাড়া এক সপ্তাহে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডালের দাম এখন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার বাজারে কাতল মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, পাবদা ৪৫০ টাকা, মলা ৩৬০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, শিং মাছ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাঙাশ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ২৬০ টাকা, বোয়াল ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, টেংরা ছোট ৫০০ আর বড় ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, রুই ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ এবং গলদা চিংড়ি ৭০০ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে শীতের ভরা মৌসুমেও সবজির দাম চড়া। সরবরাহ প্রচুর, তবু সব সবজিতেই অতিরিক্ত ১০ থেকে ২০ টাকা গুনতে হচ্ছে। এক কেজি বেগুন কিনতে লাগছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। মুলার কেজি এখনও ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। কাঁচামরিচের দাম মাঝে ক’দিন কমে আবার বেড়েছে। কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। ১৫ থেকে ২০ দিন আগে শিমের কেজি ৩০ টাকার নিচে নেমেছিল। এখন বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় পৌঁছেছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০, শসা ৫০ থেকে ৬০, টমেটো ৩০ থেকে ৫০, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এদিকে কিছু দিন স্বস্তিতে পার হওয়ার পর আবারও বেড়েছে ডিমের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে হালিতে ডিমের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।
গরুর মাংস আগের মতোই ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে খাসির মাংস ৯০০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি প্রতিকেজি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়, লেয়ার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় এবং ব্রয়লারের কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।