ঢাকা ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

‘রবীন্দ্রনাথ কালো ছিলেন’, মন্তব্য ভারতীয় প্রতিমন্ত্রীর

  • আপডেট সময় : ০১:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগাস্ট ২০২১
  • ৪২ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনাহূত এক কারণে ফের ভারতীয় গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন।
এবার দেশটির কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের এক বিতর্কিত মন্তব্য তাকে শিরোনামে নিয়ে এসেছে ।
বুধবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিজেপি নেতা সুভাষ বলেছেন, “নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথের গায়ের রঙ ছিল কালো, এ কারণে কবির মা কবিকে ভিন্ন চোখে দেখতেন।”
প্রতিমন্ত্রীর এ বক্তব্য ভারতজুড়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজের হাতে গড়া। বুধবার সেখানে গিয়ে সুভাষ গায়ের রং ‘কালো’ হওয়ায় কবিকে মায়ের ‘বৈষম্যের’ শিকার হতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
“পরিবারের অন্যদের তুলনায় তার গায়ের রঙ ছিল কালো, ফর্সার মধ্যে অনেকবেশি লালচে ভাব ছিল। কালো গাত্রবর্ণের জন্য ঠাকুরের মা এবং অন্য আত্মীয়দের মধ্যে কয়েকজন তাকে কোলেও নিতেন না,” দাবি করেন সুভাষ।
“দুই ধরনের ফর্সা লোক হয়। একদল খুবই ফর্সা, হলদে রঙয়ের; অন্যরাও ফর্সা, তবে তাদের মধ্যে লালচে ভাব থাকে। কবিগুরু ছিলেন দ্বিতীয় গোত্রের,” ভারতের কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই।
পশ্চিমবঙ্গের বোলপুর জেলার শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সুভাষের এ মন্তব্য রবীন্দ্রভক্ত এবং বিশেষজ্ঞদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিরোধী রাজনীতিবিদরা প্রতিমন্ত্রীকে ‘অশিক্ষিত’ বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছেন।
সুভাষ যে অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ও তার পরিবারকে নিয়ে এ মন্তব্য করেছেন, সেখানে বিশ্ব ভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা উপার্চর্যেরও সমালোচনা করেছেন।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজেপির অনেক নেতার উপস্থিতিতে উপাচার্যের সমালোচনা করেছেন বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত ম-ল।
“বিশ্বভারতীর উপাচার্য পাগল। বাড়িতে তাকে ইনজেকশন দিতে হয়। এই পাগল উপাচার্য বিশ্বভারতীর সংস্কৃতি নষ্ট করে দিচ্ছে। বিশ্বভারতীর রাজনীতিকরণ আগে দেখিনি। এবার বিশ্বভারতীর মধ্যে আমিও অনুষ্ঠান করব,” বলেছেন তিনি।
শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেছেন, “তাঁর (রবীন্দ্রনাথ) বাড়িতে সবাই ফর্সা ছিলেন, উনি একটু কম ফর্সা ছিলেন। কালো মানে কি? পরিপ্রেক্ষিত না বুঝে একটা কথা বলে দিলেন।
“ঠাকুরবাড়িতে কাউকে কোলে নেওয়া হত না। ওভাবে কোলে করে আদর করার প্রথা ছিল না। দাসদাসীদের কাছে থাকতেন, মা একটু আদর করতেন। শিক্ষামন্ত্রীর মুখে এই কথাগুলি শুনে খুব হাসি পাচ্ছে। কাদের হাতে আমরা ক্ষমতা অর্পণ করে বসে আছি!”
বিজেপি অবশ্য এ প্রসঙ্গে সুভাষের পাশেই আছে। তারা বলছে, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্যকে ভুলভাবে তুলে ধরা হচ্ছে।
আর যার মন্তব্যে এই তোলপাড় তিনি বলছেন, “রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বিতর্কে জড়ানো উচিত নয়। আমি যা বলেছি তার রেকর্ড আগে নিতে হবে। আমাকে কেউ বললে তাকে আমি লিঙ্ক দিয়ে দেব।
“আমি রবীন্দ্রনাথের সম্মান আরও বাড়াতে চেয়েছি,” বলেছেন সুভাষ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি

‘রবীন্দ্রনাথ কালো ছিলেন’, মন্তব্য ভারতীয় প্রতিমন্ত্রীর

আপডেট সময় : ০১:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগাস্ট ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনাহূত এক কারণে ফের ভারতীয় গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন।
এবার দেশটির কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের এক বিতর্কিত মন্তব্য তাকে শিরোনামে নিয়ে এসেছে ।
বুধবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিজেপি নেতা সুভাষ বলেছেন, “নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথের গায়ের রঙ ছিল কালো, এ কারণে কবির মা কবিকে ভিন্ন চোখে দেখতেন।”
প্রতিমন্ত্রীর এ বক্তব্য ভারতজুড়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজের হাতে গড়া। বুধবার সেখানে গিয়ে সুভাষ গায়ের রং ‘কালো’ হওয়ায় কবিকে মায়ের ‘বৈষম্যের’ শিকার হতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
“পরিবারের অন্যদের তুলনায় তার গায়ের রঙ ছিল কালো, ফর্সার মধ্যে অনেকবেশি লালচে ভাব ছিল। কালো গাত্রবর্ণের জন্য ঠাকুরের মা এবং অন্য আত্মীয়দের মধ্যে কয়েকজন তাকে কোলেও নিতেন না,” দাবি করেন সুভাষ।
“দুই ধরনের ফর্সা লোক হয়। একদল খুবই ফর্সা, হলদে রঙয়ের; অন্যরাও ফর্সা, তবে তাদের মধ্যে লালচে ভাব থাকে। কবিগুরু ছিলেন দ্বিতীয় গোত্রের,” ভারতের কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই।
পশ্চিমবঙ্গের বোলপুর জেলার শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সুভাষের এ মন্তব্য রবীন্দ্রভক্ত এবং বিশেষজ্ঞদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিরোধী রাজনীতিবিদরা প্রতিমন্ত্রীকে ‘অশিক্ষিত’ বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছেন।
সুভাষ যে অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ও তার পরিবারকে নিয়ে এ মন্তব্য করেছেন, সেখানে বিশ্ব ভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা উপার্চর্যেরও সমালোচনা করেছেন।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজেপির অনেক নেতার উপস্থিতিতে উপাচার্যের সমালোচনা করেছেন বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত ম-ল।
“বিশ্বভারতীর উপাচার্য পাগল। বাড়িতে তাকে ইনজেকশন দিতে হয়। এই পাগল উপাচার্য বিশ্বভারতীর সংস্কৃতি নষ্ট করে দিচ্ছে। বিশ্বভারতীর রাজনীতিকরণ আগে দেখিনি। এবার বিশ্বভারতীর মধ্যে আমিও অনুষ্ঠান করব,” বলেছেন তিনি।
শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেছেন, “তাঁর (রবীন্দ্রনাথ) বাড়িতে সবাই ফর্সা ছিলেন, উনি একটু কম ফর্সা ছিলেন। কালো মানে কি? পরিপ্রেক্ষিত না বুঝে একটা কথা বলে দিলেন।
“ঠাকুরবাড়িতে কাউকে কোলে নেওয়া হত না। ওভাবে কোলে করে আদর করার প্রথা ছিল না। দাসদাসীদের কাছে থাকতেন, মা একটু আদর করতেন। শিক্ষামন্ত্রীর মুখে এই কথাগুলি শুনে খুব হাসি পাচ্ছে। কাদের হাতে আমরা ক্ষমতা অর্পণ করে বসে আছি!”
বিজেপি অবশ্য এ প্রসঙ্গে সুভাষের পাশেই আছে। তারা বলছে, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্যকে ভুলভাবে তুলে ধরা হচ্ছে।
আর যার মন্তব্যে এই তোলপাড় তিনি বলছেন, “রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বিতর্কে জড়ানো উচিত নয়। আমি যা বলেছি তার রেকর্ড আগে নিতে হবে। আমাকে কেউ বললে তাকে আমি লিঙ্ক দিয়ে দেব।
“আমি রবীন্দ্রনাথের সম্মান আরও বাড়াতে চেয়েছি,” বলেছেন সুভাষ।