ঢাকা ১০:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে হত্যা

রবিনের স্বীকারোক্তি, রিমান্ডে আরেকজন

  • আপডেট সময় : ০৯:৩৫:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

তারেক রহমান রবিন

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার তারেক রহমান রবিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আর হত্যা মামলায় টিটন গাজী নামের আরেক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এসআই মো. মনিরের আবেদনে শনিবার (১২ জুলাই) ঢাকার মহানগর হাকিম হাসিব উল্লাহ গিয়াস রবিনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই বিচারক টিটন গাজীর রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন। প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা রবিন ও টিটনকে আদালতে হাজির করেন। দুই দিনের রিমান্ড শেষে রবিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এসআই মনির। রবিন এই ঘটনায় পুলিশের করা অস্ত্র মামলার আসামি। আর টিটন গাজীকে সাত দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেন আরেক তদন্ত কর্মকর্তা একই থানার ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দিন।

টিটন গাজী

গত বুধবার (৯ জুলাই) বিকালে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে প্রকাশ্যে কংক্রিট বোল্ডার দিয়ে শরীর ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয় ভাঙারি ও পুরনো তারের ব্যবসায়ী মো. সোহাগ ওরফে লাল চাঁদকে। এরপর এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনায় তার বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আর পুলিশ দায়ের করেছে অস্ত্র মামলা। এই ঘটনায় পুলিশ ও র‌্যাব চারজনকে গ্রেফতার করেছে, তাদের মধ্যে দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পাঠায় আদালত। তারা হলেন, মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিন। দুজনের মধ্যে রবিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের পাঁচজনকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে বিএনপি।

নিহত মো. সোহাগ

এদিকে এই হত্যাকাণ্ডকে ‘দুঃখজনক’ বর্ণনা করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এইটার জন্য আমরা অলরেডি পাঁচজনরে আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। শুক্রবার র‌্যাব দুইজন ধরছে, ডিএমপি দুইজন ধরছে, আজকে একজন ধরছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, ওই হত্যাকাণ্ডে যাদের অংশ নিতে দেখা গেছে, এবং নেপথ্যে যাদের নাম আসছে, তারা সবাই পূর্ব পরিচিত। একসময় তাদের কয়েকজন সোহাগের ব্যবসার সহযোগী ছিলেন। ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধে এমন ভয়ঙ্করভাবে কাউকে হত্যা করা হতে পারে, তা পরিচিতজনদের ধারণারও বাইরে। ওই এলাকার একজন বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ব্যবসায়ী বলছেন, পুরনো তারের ব্যবসার একটি বড় সিন্ডিকেট সেখানে রয়েছে, যার নিয়ন্ত্রণ করতেন সোহাগ। গ্রেফতার মহিন তার দলবল নিয়ে ওই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই চেষ্টায় তারা সোহাগের গোডাউনে তালা মেরে দেয়। তাদের মধ্যে এটা নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়। জড়িতদের কয়েকজন স্থানীয় যুবদলের রাজনীতিতে জড়িত। সোহাগও এক সময় যুবদল করতেন।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে হত্যা

রবিনের স্বীকারোক্তি, রিমান্ডে আরেকজন

আপডেট সময় : ০৯:৩৫:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার তারেক রহমান রবিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আর হত্যা মামলায় টিটন গাজী নামের আরেক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এসআই মো. মনিরের আবেদনে শনিবার (১২ জুলাই) ঢাকার মহানগর হাকিম হাসিব উল্লাহ গিয়াস রবিনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই বিচারক টিটন গাজীর রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন। প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা রবিন ও টিটনকে আদালতে হাজির করেন। দুই দিনের রিমান্ড শেষে রবিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এসআই মনির। রবিন এই ঘটনায় পুলিশের করা অস্ত্র মামলার আসামি। আর টিটন গাজীকে সাত দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেন আরেক তদন্ত কর্মকর্তা একই থানার ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দিন।

টিটন গাজী

গত বুধবার (৯ জুলাই) বিকালে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে প্রকাশ্যে কংক্রিট বোল্ডার দিয়ে শরীর ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয় ভাঙারি ও পুরনো তারের ব্যবসায়ী মো. সোহাগ ওরফে লাল চাঁদকে। এরপর এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনায় তার বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আর পুলিশ দায়ের করেছে অস্ত্র মামলা। এই ঘটনায় পুলিশ ও র‌্যাব চারজনকে গ্রেফতার করেছে, তাদের মধ্যে দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পাঠায় আদালত। তারা হলেন, মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিন। দুজনের মধ্যে রবিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের পাঁচজনকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে বিএনপি।

নিহত মো. সোহাগ

এদিকে এই হত্যাকাণ্ডকে ‘দুঃখজনক’ বর্ণনা করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এইটার জন্য আমরা অলরেডি পাঁচজনরে আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। শুক্রবার র‌্যাব দুইজন ধরছে, ডিএমপি দুইজন ধরছে, আজকে একজন ধরছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, ওই হত্যাকাণ্ডে যাদের অংশ নিতে দেখা গেছে, এবং নেপথ্যে যাদের নাম আসছে, তারা সবাই পূর্ব পরিচিত। একসময় তাদের কয়েকজন সোহাগের ব্যবসার সহযোগী ছিলেন। ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধে এমন ভয়ঙ্করভাবে কাউকে হত্যা করা হতে পারে, তা পরিচিতজনদের ধারণারও বাইরে। ওই এলাকার একজন বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ব্যবসায়ী বলছেন, পুরনো তারের ব্যবসার একটি বড় সিন্ডিকেট সেখানে রয়েছে, যার নিয়ন্ত্রণ করতেন সোহাগ। গ্রেফতার মহিন তার দলবল নিয়ে ওই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই চেষ্টায় তারা সোহাগের গোডাউনে তালা মেরে দেয়। তাদের মধ্যে এটা নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়। জড়িতদের কয়েকজন স্থানীয় যুবদলের রাজনীতিতে জড়িত। সোহাগও এক সময় যুবদল করতেন।