ঢাকা ১২:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

রণকৌশল পাল্টে দেবে চীনের ‘নতুন হাইড্রোজেন’ বোমা

  • আপডেট সময় : ০৭:৫১:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : বিশ্বের সামরিক শক্তির ভারসাম্যে বড় রকমের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিল চীন। দেশটির গবেষকরা সফলভাবে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন নতুন এক হাইড্রোজেন বোমার। এটি কিন্তু সেই পুরোনো পারমাণবিক হাইড্রোজেন বোমা নয়, এর নতুনত্ব হলো এটি ‘নন-নিউক্লিয়ার’ বা অ-পারমাণবিক। এই অভিনব অস্ত্রটি তৈরি করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় শিপবিল্ডিং কর্পোরেশন (সিএসএসসি)। বোমাটিতে বিশেষ ম্যাগনেসিয়ামের মিশ্রণে তৈরি সলিড হাইড্রোজেন ব্যবহার করা হয়। যা আগুনকে দীর্ঘ সময় ধরে জ্বলতে সহায্য করে। এটি প্রচলিত বিস্ফোরকের চেয়ে প্রায় ১৫ গুণ বেশি সময় ধরে প্রচ- তাপ ছড়াতে পারে। বিস্ফোরণের সময় এটি প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোজেন গ্যাস ছাড়ে, যা বাতাসের সঙ্গে মিশে এক বিশাল আগুনের গোলা তৈরি করে। চীন যে বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে যদিও তার ওজন ছিল মাত্র ২ কেজি! তারপরেও এই বিস্ফোরণে সৃষ্ট আগুনের তাপমাত্রা পৌঁছায় এক হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি। যার ফলে বলা হচ্ছে সাধারণ বিস্ফোরকের তুলনায় এটি অনেক বেশি ধ্বংস ক্ষমতা সম্পন্ন। এই বোমাটি অ্যালুমিনিয়ামের মত ধাতু গুলোকে সহজে গলিয়ে ফেলতে পারে। যার কারণে সুনির্দিষ্ট সামরিক সরঞ্জামের বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরকের ব্যবহার বিপুল সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।

সিএসএসসি-এর প্রধান গবেষক ওয়াং জুয়েফেং জানান, হাইড্রোজেন গ্যাস খুব সহজে দাহ্য, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রচ- গতিতে আগুন ছড়িয়ে দেয়। সাধারণ অবস্থায় আমাদের চারপাশে একটা নির্দিষ্ট বায়ুচাপ থাকে। বিস্ফোরণ হলে হঠাৎ করে ওই জায়গায় খুব বেশি চাপ তৈরি হয়। এই অতিরিক্ত চাপের সর্বোচ্চ পরিমাণকে বলে ‘পিক ওভার প্রেশার’। বিস্ফোরণের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা অনেকটাই নির্ভর করে এই চাপের ওপর। পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই বোমা দুটি মিটারের দূরত্বে ৪২৮.৪৩ কিলোপাসক্যালস (চাপ মাপার একক) পিক ওভার প্রশার সৃষ্টি করতে পারে— যা সাধারণ বিস্ফোরণের প্রায় ৪০ শতাংশ। তবে, সাধারণ বিস্ফোরণের তুলনায় এর তাপগত ধ্বংসক্ষমতা অনেক বেশি, যা সরাসরি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবকাঠামো গলিয়ে ফেলতে সক্ষম। এই বোমার বিশেষত্ব হলো বিস্ফোরণের পর প্রচ- তাপ অনেকক্ষণ ধরে থাকে এবং আশপাশে বড় এলাকা ধ্বংস না করেই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম। ফলে চীন এখন খুব নিখুঁতভাবে নির্দিষ্ট, কৌশলগত ভাবে মূল্যবান লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারবে। এর সাহায্যে শত্রুরা যাতে কৌশলগত রাস্তাগুলো ব্যবহার করতে না পারে, সে লক্ষ্যে রাস্তা গলিয়ে বা ধ্বংস করে দেওয়া যাবে। আবার চাইলে নির্দিষ্টভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র বা যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোও টার্গেট করে ধ্বংস করা সম্ভব। এই অস্ত্র শুধু চীনের সামরিক শক্তির বড় অর্জনই নয়, বরং শক্তি-ভিত্তিক অস্ত্র তৈরিতে তাদের অগ্রযাত্রার প্রতিক। তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রণকৌশল পাল্টে দেবে চীনের ‘নতুন হাইড্রোজেন’ বোমা

আপডেট সময় : ০৭:৫১:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : বিশ্বের সামরিক শক্তির ভারসাম্যে বড় রকমের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিল চীন। দেশটির গবেষকরা সফলভাবে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন নতুন এক হাইড্রোজেন বোমার। এটি কিন্তু সেই পুরোনো পারমাণবিক হাইড্রোজেন বোমা নয়, এর নতুনত্ব হলো এটি ‘নন-নিউক্লিয়ার’ বা অ-পারমাণবিক। এই অভিনব অস্ত্রটি তৈরি করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় শিপবিল্ডিং কর্পোরেশন (সিএসএসসি)। বোমাটিতে বিশেষ ম্যাগনেসিয়ামের মিশ্রণে তৈরি সলিড হাইড্রোজেন ব্যবহার করা হয়। যা আগুনকে দীর্ঘ সময় ধরে জ্বলতে সহায্য করে। এটি প্রচলিত বিস্ফোরকের চেয়ে প্রায় ১৫ গুণ বেশি সময় ধরে প্রচ- তাপ ছড়াতে পারে। বিস্ফোরণের সময় এটি প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোজেন গ্যাস ছাড়ে, যা বাতাসের সঙ্গে মিশে এক বিশাল আগুনের গোলা তৈরি করে। চীন যে বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে যদিও তার ওজন ছিল মাত্র ২ কেজি! তারপরেও এই বিস্ফোরণে সৃষ্ট আগুনের তাপমাত্রা পৌঁছায় এক হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি। যার ফলে বলা হচ্ছে সাধারণ বিস্ফোরকের তুলনায় এটি অনেক বেশি ধ্বংস ক্ষমতা সম্পন্ন। এই বোমাটি অ্যালুমিনিয়ামের মত ধাতু গুলোকে সহজে গলিয়ে ফেলতে পারে। যার কারণে সুনির্দিষ্ট সামরিক সরঞ্জামের বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরকের ব্যবহার বিপুল সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।

সিএসএসসি-এর প্রধান গবেষক ওয়াং জুয়েফেং জানান, হাইড্রোজেন গ্যাস খুব সহজে দাহ্য, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রচ- গতিতে আগুন ছড়িয়ে দেয়। সাধারণ অবস্থায় আমাদের চারপাশে একটা নির্দিষ্ট বায়ুচাপ থাকে। বিস্ফোরণ হলে হঠাৎ করে ওই জায়গায় খুব বেশি চাপ তৈরি হয়। এই অতিরিক্ত চাপের সর্বোচ্চ পরিমাণকে বলে ‘পিক ওভার প্রেশার’। বিস্ফোরণের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা অনেকটাই নির্ভর করে এই চাপের ওপর। পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই বোমা দুটি মিটারের দূরত্বে ৪২৮.৪৩ কিলোপাসক্যালস (চাপ মাপার একক) পিক ওভার প্রশার সৃষ্টি করতে পারে— যা সাধারণ বিস্ফোরণের প্রায় ৪০ শতাংশ। তবে, সাধারণ বিস্ফোরণের তুলনায় এর তাপগত ধ্বংসক্ষমতা অনেক বেশি, যা সরাসরি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবকাঠামো গলিয়ে ফেলতে সক্ষম। এই বোমার বিশেষত্ব হলো বিস্ফোরণের পর প্রচ- তাপ অনেকক্ষণ ধরে থাকে এবং আশপাশে বড় এলাকা ধ্বংস না করেই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম। ফলে চীন এখন খুব নিখুঁতভাবে নির্দিষ্ট, কৌশলগত ভাবে মূল্যবান লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারবে। এর সাহায্যে শত্রুরা যাতে কৌশলগত রাস্তাগুলো ব্যবহার করতে না পারে, সে লক্ষ্যে রাস্তা গলিয়ে বা ধ্বংস করে দেওয়া যাবে। আবার চাইলে নির্দিষ্টভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র বা যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোও টার্গেট করে ধ্বংস করা সম্ভব। এই অস্ত্র শুধু চীনের সামরিক শক্তির বড় অর্জনই নয়, বরং শক্তি-ভিত্তিক অস্ত্র তৈরিতে তাদের অগ্রযাত্রার প্রতিক। তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া