ফারজানা কাশেমী : সমরেশ মজুমদারের কালজয়ী সৃষ্টি দীপাবলি। সেই দীপাবলি সময়ের রুক্ষতা রুখে দিয়েছিল। জীবনে ভালো থাকার আয়োজনে সচেষ্ট ছিল। দুর্ভাগ্যের ললাটের বিধি বাম নামান্তরে পরাজিত হয়নি। ছোট দীপাবলি ক্ষুদ্র পায়ে বধু বেশ গ্রহন করলেও নিজকে পৈচাশিকতা থেকে সুরক্ষিত করেছিল। নিয়তির নির্মমতায় ছোট দীপাবলি বিধবা তকমা গ্রহন করেছিল। সেই দীপাবলি আরো গ্রহন করেছিল বিধবা প্রথার নিষ্ঠুর নিয়ম।
দীপাবলি বিধবা রীতির নিষ্ঠুর প্রথা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল। তবুও অদম্য দীপাবলি। নিজের সচেষ্ট উদ্যম, পরিশ্রম আর চেষ্টায় জীবনের বহমান ধারায় অগ্রসর হয়েছিল দীপাবলি। বাল্যবিধবা দীপাবলির নিয়তির ভাঙ্গন কালক্রমে বহমান ছিল।
দীপাবলির আঁকড়ে ধরা ,পরম মমতায় আগলে রাখা বাবা নামের মানুষ টি দীপাবলিকে ছেড়ে যায়। শুন্যতার তেপান্তরে দিপাবলীর নির্বাসন হয়। দীপাবলির একাকী অসহায়ত্বে কাছের মানুষ হওয়া বন্ধু দমকা হাওয়ায় নিশ্চিহ্ন হয়। দীপাবলি শুধুই ছায়াহীন হয়।ছায়াকর অদৃশ্য তুল্য হয় দীপাবলির জীবনে। অসীম শুন্যতায় বিশ্বাস,অনুভূতি আর আবেগে হেঁটে যাওয়ার সহযাত্রী হারা হয় গল্পের দীপাবলির। টানাপোড়নের নিয়মে জীবন যুদ্ধে বেঁচে যায় দীপাবলি। হার মানে না দীপাবলি। এই হার না মানা দীপাবলি শুধুই টিকে থাকার আর মেকি সফলতায় জয়ী হয়। অনুভূতির রুদ্ধ দুয়ারে প্রলয়ে নিঃশেষ হয়। গল্পের আয়োজনে দীপাবলি ঘর বাধে নিছক নিয়মে। সমাজের বেধে দেওয়া কঠোর নিয়মে দীপাবলির সংসার হয়। যে সংসারে অনুপ্রবেশ শুধুই অসহ্য, অসহনীয় কঠিন বাস্তবতা।
এরকম হাজারো দীপাবলি বেঁচে থাকার আয়োজনে পূর্নতা পায় শুধুই বেঁচে থাকার নিয়মে। যে নিয়মের বাস্তবতায় দীপাবলি হেরে যায়, হারিয়ে ফেলে ভালবাসা। অন্তহীনতায় দীপাবলিদের দিনপঞ্জি রচিত হয়। নিষ্ঠুরতায় পরাজিতা দীপাবলিদের নামকরণ হয় হার না মানা সফলতম মানুষ। দীপাবলিদের হেরে যাওয়া, হারিয়ে ফেলা, ফেলা আসা ভালোলাগা, আবেগে, অনুরনের কথা শুধু ঈশ্বর জানেন। কেন জানি দীপাবলিদের অজানা পথে পা বাড়ানোর ব্যথায় ঈশ্বর নিশ্চুপ থাকেন।
রঙহীন দীপাবলি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ