স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকা জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যবিষয়ক দাতব্যপ্রতিষ্ঠান ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্যানুসারে, রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বা ‘সার্কুলেটরি সিস্টেম’ হৃদযন্ত্র থেকে রক্ত পাঠায় ফুসফুসে, সেখানে রক্ত অক্সিজেন সমৃদ্ধ হয়। সেই রক্ত পরে রক্তনালির মাধ্যমে পুরো শরীরে ছড়ায়। পুরো শরীরে অক্সিজেন ছড়িয়ে রক্তের অক্সিজেন ফুরিয়ে গেলে তা আবার হৃদযন্ত্রে ফিরে আসে এবং একটি চক্র পূর্ণ হয়। অর্থাৎ শরীরের প্রতিটি অঙ্গ, পেশির জন্য রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া সুস্থ থাকা জরুরি।
যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ
নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘স্ট্যাটেন আইলান্ড ইউনিভার্সিটি হসপিটাল’য়ের ‘ভাস্কুলার সার্জারি’ বিভাগের প্রধান সহযোগী কুলদিপ সিং ‘ইট দিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “হৃদযন্ত্র আর রক্তনালী মিলে তৈরি হয় ‘সার্কুলেটরি সিস্টেম’। এর কাজ হল শরীরের সবখানে পুষ্টি উপাদান ও অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহ করা এবং শরীর থেকে বর্জ্য অপসারণ করা।”
রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে না হওয়ার ঝুঁকি
ডা. সিং বলেন, “পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালন না হলে শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ও অক্সিজেন পাবে না। পাশাপাশি পেশি ও কোষে শরীরের বর্জ্য জমে থাকবে। এই দুয়ে মিলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হবে। আর ‘সার্কুলেটরি সিস্টেম’ শিরা ও ধমনি দুই মিলে গঠিত আর তাদের পুরোপুরি কর্মক্ষম থাকতে হবে।” শিরা কিংবা ধমনির মধ্যে যেকোনো একদিন বন্ধ থাকলেই পুরো রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যেমন- ধমনি যদি আটকে যায় হবে পেশিতে পর্যাপ্ত রক্ত পৌঁছাবে না, ফলে নড়াচড়ায় ব্যথা অনুভূত হতে পারে। হাঁটার সময় পায়ের রক্তনালী আটকে থাকার কারণে যে ব্যথা হয় তাকে চিকিৎসা শাস্ত্রে বলা হয় ‘পেরিফেরাল আর্টারিয়াল ডিজিজ (পিএডি)। সময় মতো এর চিকিৎসা না করলে সেখান থেকে আলসার বা ক্ষত হতে পারে। রক্তনালী আটকে গেলে রক্ত হৃদযন্ত্রের ফিরে আসতে পারে না, ফলে পা ও ‘ভেরিকোজ ভেইন’গুলো ফুলে উঠে, ত্বকের রং বদলে যায়, ক্ষত তৈরি হতে পারে পায়ের গোড়ালিতে।
লক্ষণ
- ডা. সিং বলেন, “হাঁটার সময় পায়ে ব্যথা হওয়ার লক্ষণ হতে পারে ‘আর্টারিয়াল ব্লকেজ’য়ের। এক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।”
- একইভাবে বুক ও পেটেও ব্যথা হতে পারে। সবই আসলে ইঙ্গিত দেয় যে রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থায় গোলমাল হয়েছে।
- পা ফুলে গেলে বুঝতে হবে ‘ভেনাস সিস্টেম’ কিংবা ‘লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম’য়ে গ-গোল বেঁধেছে।
- হাতে দুর্বলতা দেখা দেওয়া, কথা বলতে অসুবিধা হওয়া ইত্যাদিও একই সমস্যার পূর্বাভাস।
করণীয়
এই ধরনের ব্যথা বা লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্র দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন ডা. সিং। না হলে বড় বিপদে পড়ার সম্ভাবনা থেকেই যাবে।