স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : মধু অন্যান্য খাবারে ব্যবহার করে স্বাস্থ্যকর উপায়ে মিষ্টি করা যায়। মিষ্টি খাবারের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার পরিবেশনেও মধু ব্যবহার করা হয়। আর সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তের শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে মধু সহায়তা করে। ‘নিউট্রিশন রিভিউজ’ সাময়িকীতে প্রকাশিত টরেন্টো ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা সমীক্ষায় ‘কার্ডিওমেটাবলিক’ ঝুঁকির কারণগুলোর ওপর মধু কী প্রভাব ফেলতে পারে সে সম্পর্কে জানা যায়।
মধু ও কার্ডিওমেটাবলিক স্বাস্থ্য
একটি পদ্ধতিগত পর্যালোচনা এবং মেটা-বিশ্লেষণের জন্য গবেষকরা ১৮টি নিয়ন্ত্রিত দলের ওপর দুই মাস ধরে পর্যবেক্ষণ চালান। সেখানে ১,১০০ জনের বেশি অংশগ্রহণকারী ছিল। গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, ‘কার্ডিওমেটাবলিক’ স্বাস্থ্যের ওপর মধু ইতিবাচক প্রভাব রাখে। যেমন- রক্তের শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা। অংশগ্রহণকারীরা সাধারণত প্রতিদিন প্রায় দুই টেবিল-চামচ মধু খেয়েছিল। লক্ষ্য করা গেছে, তারা কাঁচা এবং একটা নির্দিষ্ট ফুলের মধু খেয়েছিল যা স্বাস্থ্যের জন্য নানাভাবে উপকারী। অন্যদিকে প্রক্রিয়াজাত মধু দেহের জন্য খুব একটা উপকারী নয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞান-বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ইউরেকঅ্যালার্ট’য়ে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টেমার্টি ফ্যাকাল্টি অফ মেডিসিন’য়ের পুষ্টি বিজ্ঞানের গবেষণা সহযোগী এবং গবেষণার জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌসিফ খান বলেন, “এর ফলাফল ছিল অবাক করার মতো। কারণ মধুতে প্রায় ৮০ ভাগই চিনি।” তিনি আরও বলেন, “মধু সাধারণত ও জটিল শর্করা, প্রোটিন, জৈব অ্যাসিড এবং অনান্য বায়োঅ্যাক্টিভ যৌগের জটিল সংমিশ্রণ যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।” এই গবেষণার ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ এবং ‘লিভিং ফিট’য়ের প্রদায়ক ক্যাথরিন হের্ভাসিও ‘ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “মধু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা কার্ডিওমেটাবলিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।” তিনি আরও বলেন, ‘এতে আছে ফ্লাভানয়েড ও ফেনোলিক যৌগ। ফ্লাভানয়েড প্রদাহরোধী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা রক্তের জমাট বদ্ধতা কমায় এবং ফেনোলিক যৌগ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। কারণ এটা অক্সিডেটিভ চাপ কমাতে সহায়তা করে।”
যে ধরনের মধু সেরা
খাঁটি এবং একটি ফুল থেকে সংগ্রহ করা মধুর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে হার্ভেসিও বলেন, “খাঁটি মধু প্রক্রিয়াজাত করা হয় না। তাই এতে পুষ্টি উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বজায় থাকে।” মধু নির্দিষ্ট উৎস থেকে হলে তা কার্ডিওমেটাবলিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কাজ করে এমন কোনো উল্লেখযোগ্য গবেষণার কথা জানা যায়নি। তবে প্রাকৃতিক ও খাঁটি মধু খাওয়া শরীররে জন্য সবচেয়ে ভালো বলে জানান এই পুষ্টিবিদ। তিনি পরামর্শ দেন, “দুয়েক টেবিল-চামচ খাঁটি মধু খাওয়া পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে। মধু আসলে ওষুধি খাবার এবং প্রাচীনকাল থেকেই জনপ্রিয়।” এ ছাড়া এটা কেবল কার্ডিওমেটাবলিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে না বরং এর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল যৌগ ক্ষত সারাতে পাশাপাশি ঠান্ডা ও কাশি উপশমে সহায়তা করে।
রক্তের শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে মধু
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ