ঢাকা ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

রক্তচাপের ওষুধে বাড়তে পারে বিষণ্নতা: গবেষণা

  • আপডেট সময় : ০৭:২৩:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে

Sad woman crying while holding hands with her psychotherapist at doctor's office.

প্রত্যাশা ডেস্ক: রক্তচাপের বিভিন্ন সাধারণ ওষুধ সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বাড়তে পারে বিষণ্নতার ঝুঁকি- এমনই তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। ‘উপসালা ইউনিভার্সিটি’র নতুন এক সমীক্ষায় গবেষকরা বলছেন, হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের ‘বিটা ব্লকার’ নামের যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে তা কেবল যে স্বাভাবিক হার্টওয়ালা ব্যক্তিদের জন্য অপ্রয়োজনীয়, তাই নয়, বরং তাদের বিষন্নতার ঝুঁকিও বাড়িয়ে তুলতে পারে এই ওষুধ। বিটা ব্লকার বা β-ব্লকার হচ্ছে এমন এক ধরনের ওষুধ, যা হার্টের অস্বাভাবিক স্পন্দন নিয়ন্ত্রণে ও প্রথমবার হার্ট অ্যাটাকের পর হার্টকে পুনরায় অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে রক্ষায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসাতেও ব্যবহার হয় এই ওষুধ। হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের সাধারণত বিটা ব্লকার ওষুধ দেওয়ার কারণ তাদের হার্টের উপর অ্যাড্রিনালিন হরমোনের বিভিন্ন প্রভাব ব্লক করতে সাহায্য করে এই ওষুধ, যা সহায়তা করে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখতে ও রক্তচাপ কমাতে। তবে হার্ট অ্যাটাকের পরেও যাদের হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক আছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে এ ওষুধের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সাম্প্রতিক এই গবেষণায়। ভবিষ্যতে তাদের বেঁচে থাকা বা পুনরায় হার্ট অ্যাটাক ঠেকানোর ক্ষেত্রে এই চিকিৎসা পদ্ধতি কার্যকর নয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ’ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নাল: অ্যাকিউট কার্ডিওভাসকুলার কেয়ার’-এ। গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট ফেইলিওর নেই এমন রোগীদের বিটা ব্লকার ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা দিলে তাদের বিষন্নতার বিভিন্ন লক্ষণ খানিকটা বেড়ে যেতে পারে।
“স্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন ও হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের জীবন বাঁচাতে কার্যকর নয় এ ধরনের ওষুধ,” বলেছেন ‘উপসালা ইউনিভার্সিটি’র কার্ডিয়াক সাইকোলজি বিভাগের পিএইচডি শিক্ষার্থী ও এ গবেষণার প্রধান লেখক ফিলিপ লেইসনার। “এর বদলে, হৃদরোগে আক্রান্তদের মেজাজ পরিবর্তন ও বিষণ্নতা’সহ অপ্রয়োজনীয় নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে বিটা ব্লকার।”
আগের বিভিন্ন গবেষণা ও ক্লিনিকাল অভিজ্ঞতায় ইঙ্গিত মিলেছে, বিষন্নতা, ঘুমের স্বল্পতা ও দুঃস্বপ্নের মতো নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে বিভিন্ন বিটা ব্লকার। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে সুইডেনে হওয়া গবেষণায় দেখা গেছে, রোগীদের মধ্যে পুনরায় হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতে ও মৃত্যুর আশঙ্কা কমানোয় ‘সাহায্য করে না’ বিটা ব্লকার। তাই এ ওষুধের বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে আরও গবেষণা করেছেন ‘উপসালা ইউনিভার্সিটি’র গবেষণা দলটি। ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রয়েছে এমন ৮০৬ জন হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে নিয়ে পরীক্ষা করেন গবেষকরা। তাদের মধ্যে অর্ধেক রোগীকে বিটা ব্লকার ওষুধ দিলেও বাকি অর্ধেককে এ ওষুধ দেননি চিকিৎসকরা। গবেষণায় উঠে এসেছে, যেসব রোগীরা বিটা ব্লকার ওষুধ নেন তাদের মধ্যে বিষন্নতার বিভিন্ন লক্ষণ আরও তীব্র ও জোরালো। লেইসনার বলেন, এ ধরনের ক্ষেত্রে হার্টের সরাসরি কোনো উপকার না করলেও বিষন্নতার ঝুঁকি বাড়ানো’সহ দেহে নানা অপ্রয়োজনীয় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে বিটা ব্লকার। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও জলবায়ু সপ্তাহের পাশাপাশি সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে ‘২০২৪ এমআইটি সলভ চ্যালেঞ্জ’ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জাপানে ৭.৬ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা

রক্তচাপের ওষুধে বাড়তে পারে বিষণ্নতা: গবেষণা

আপডেট সময় : ০৭:২৩:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক: রক্তচাপের বিভিন্ন সাধারণ ওষুধ সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বাড়তে পারে বিষণ্নতার ঝুঁকি- এমনই তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। ‘উপসালা ইউনিভার্সিটি’র নতুন এক সমীক্ষায় গবেষকরা বলছেন, হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের ‘বিটা ব্লকার’ নামের যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে তা কেবল যে স্বাভাবিক হার্টওয়ালা ব্যক্তিদের জন্য অপ্রয়োজনীয়, তাই নয়, বরং তাদের বিষন্নতার ঝুঁকিও বাড়িয়ে তুলতে পারে এই ওষুধ। বিটা ব্লকার বা β-ব্লকার হচ্ছে এমন এক ধরনের ওষুধ, যা হার্টের অস্বাভাবিক স্পন্দন নিয়ন্ত্রণে ও প্রথমবার হার্ট অ্যাটাকের পর হার্টকে পুনরায় অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে রক্ষায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসাতেও ব্যবহার হয় এই ওষুধ। হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের সাধারণত বিটা ব্লকার ওষুধ দেওয়ার কারণ তাদের হার্টের উপর অ্যাড্রিনালিন হরমোনের বিভিন্ন প্রভাব ব্লক করতে সাহায্য করে এই ওষুধ, যা সহায়তা করে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখতে ও রক্তচাপ কমাতে। তবে হার্ট অ্যাটাকের পরেও যাদের হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক আছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে এ ওষুধের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সাম্প্রতিক এই গবেষণায়। ভবিষ্যতে তাদের বেঁচে থাকা বা পুনরায় হার্ট অ্যাটাক ঠেকানোর ক্ষেত্রে এই চিকিৎসা পদ্ধতি কার্যকর নয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ’ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নাল: অ্যাকিউট কার্ডিওভাসকুলার কেয়ার’-এ। গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট ফেইলিওর নেই এমন রোগীদের বিটা ব্লকার ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা দিলে তাদের বিষন্নতার বিভিন্ন লক্ষণ খানিকটা বেড়ে যেতে পারে।
“স্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন ও হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের জীবন বাঁচাতে কার্যকর নয় এ ধরনের ওষুধ,” বলেছেন ‘উপসালা ইউনিভার্সিটি’র কার্ডিয়াক সাইকোলজি বিভাগের পিএইচডি শিক্ষার্থী ও এ গবেষণার প্রধান লেখক ফিলিপ লেইসনার। “এর বদলে, হৃদরোগে আক্রান্তদের মেজাজ পরিবর্তন ও বিষণ্নতা’সহ অপ্রয়োজনীয় নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে বিটা ব্লকার।”
আগের বিভিন্ন গবেষণা ও ক্লিনিকাল অভিজ্ঞতায় ইঙ্গিত মিলেছে, বিষন্নতা, ঘুমের স্বল্পতা ও দুঃস্বপ্নের মতো নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে বিভিন্ন বিটা ব্লকার। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে সুইডেনে হওয়া গবেষণায় দেখা গেছে, রোগীদের মধ্যে পুনরায় হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতে ও মৃত্যুর আশঙ্কা কমানোয় ‘সাহায্য করে না’ বিটা ব্লকার। তাই এ ওষুধের বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে আরও গবেষণা করেছেন ‘উপসালা ইউনিভার্সিটি’র গবেষণা দলটি। ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রয়েছে এমন ৮০৬ জন হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে নিয়ে পরীক্ষা করেন গবেষকরা। তাদের মধ্যে অর্ধেক রোগীকে বিটা ব্লকার ওষুধ দিলেও বাকি অর্ধেককে এ ওষুধ দেননি চিকিৎসকরা। গবেষণায় উঠে এসেছে, যেসব রোগীরা বিটা ব্লকার ওষুধ নেন তাদের মধ্যে বিষন্নতার বিভিন্ন লক্ষণ আরও তীব্র ও জোরালো। লেইসনার বলেন, এ ধরনের ক্ষেত্রে হার্টের সরাসরি কোনো উপকার না করলেও বিষন্নতার ঝুঁকি বাড়ানো’সহ দেহে নানা অপ্রয়োজনীয় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে বিটা ব্লকার। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও জলবায়ু সপ্তাহের পাশাপাশি সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে ‘২০২৪ এমআইটি সলভ চ্যালেঞ্জ’ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ