ঢাকা ০৮:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা: স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

  • আপডেট সময় : ০৫:৫২:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে মো. রুবেল নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বলা হয়, ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পাঁচগাঁও বটতলায় ভাড়া বাসায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্ত্রী রিয়াকে হত্যা করেন রুবেল। এরপর মরদেহ ঘরের মেঝেতে ফেলে রেখে দরজায় তালা দেন। তাদের শিশুকন্যাকে তার খালা হাজেরার কাছে দিয়ে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

মামলার বাদী রিয়ার বাবা মোতালেব বলেছেন, হাজেরার ফোন পেয়ে বাড়িতে গিয়ে তিনি মেয়ের মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। পুলিশ ঘটনাস্থলেই সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মর্গে পাঠায়। পরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ মামলাটির তদন্ত শুরু করে।

তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জুলফিকার আলী সরকার ঘটনাস্থলের মানচিত্র অঙ্কন, আলামত জব্দ এবং সুরতহাল, ময়নাতদন্ত, ভিসেরা রিপোর্ট পর্যালোচনা করে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। তদন্তকালে রুবেল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তি দেন। মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত।

রায়ে বিচারক বলেন, ‘সাক্ষ্য–প্রমাণ ও আলামত পর্যালোচনায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। অভিযুক্তের দাবি, ভিকটিম আত্মহত্যা করেছেন এবং তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। ডিফেন্সে কোনোভাবেই টেকেনি।’

আদালত সূত্রে জানা যায়, রুবেলকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১১(ক) ধারায় মৃত্যুদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। অর্থদণ্ড আদায়ের জন্য তার স্থাবর–অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রির নির্দেশ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে সেই অর্থ তুলে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়।

রায় কার্যকরের জন্য আসামিকে সাজা পরোয়ানায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য তিন কার্যদিবসের মধ্যে মামলার নথি সুপ্রিম কোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এসি/আপ্র/০১/১২/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা: স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

আপডেট সময় : ০৫:৫২:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে মো. রুবেল নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বলা হয়, ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পাঁচগাঁও বটতলায় ভাড়া বাসায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্ত্রী রিয়াকে হত্যা করেন রুবেল। এরপর মরদেহ ঘরের মেঝেতে ফেলে রেখে দরজায় তালা দেন। তাদের শিশুকন্যাকে তার খালা হাজেরার কাছে দিয়ে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

মামলার বাদী রিয়ার বাবা মোতালেব বলেছেন, হাজেরার ফোন পেয়ে বাড়িতে গিয়ে তিনি মেয়ের মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। পুলিশ ঘটনাস্থলেই সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মর্গে পাঠায়। পরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ মামলাটির তদন্ত শুরু করে।

তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জুলফিকার আলী সরকার ঘটনাস্থলের মানচিত্র অঙ্কন, আলামত জব্দ এবং সুরতহাল, ময়নাতদন্ত, ভিসেরা রিপোর্ট পর্যালোচনা করে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। তদন্তকালে রুবেল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তি দেন। মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত।

রায়ে বিচারক বলেন, ‘সাক্ষ্য–প্রমাণ ও আলামত পর্যালোচনায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। অভিযুক্তের দাবি, ভিকটিম আত্মহত্যা করেছেন এবং তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। ডিফেন্সে কোনোভাবেই টেকেনি।’

আদালত সূত্রে জানা যায়, রুবেলকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১১(ক) ধারায় মৃত্যুদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। অর্থদণ্ড আদায়ের জন্য তার স্থাবর–অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রির নির্দেশ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে সেই অর্থ তুলে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়।

রায় কার্যকরের জন্য আসামিকে সাজা পরোয়ানায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য তিন কার্যদিবসের মধ্যে মামলার নথি সুপ্রিম কোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এসি/আপ্র/০১/১২/২০২৫