ঢাকা ১২:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, সেগুলোও প্রকাশ করা হবে: আলী রীয়াজ

  • আপডেট সময় : ০৯:০৯:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি পিআইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা জানানোর পাশাপাশি যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়নি, তাও ‘স্বচ্ছতার স্বার্থে’ প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

রোববার (২৫ মে) কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, দলগতভাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে যেমন ঐকমত্য হয়েছে, কিছু মৌলিক বিষয়ে তা সম্ভব হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক আদর্শিক অবস্থানের কারণে মতপার্থক্য থাকবে, সব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না, এটা হচ্ছে বাস্তব।

তিনি বলেন, আমরা নাগরিক সমাজের চিন্তাভাবনাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে আজ এখানে আপনাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং এই আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রমের ব্যাপারে আপনাদের পরামর্শ নেবো।
আলী রীয়াজ বলেন, যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে, এগুলো জানাব। আর আমরা যেসব বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা যায়নি সেগুলোও আমরা জানাব। কারণ হচ্ছে স্বচ্ছতার জন্য এবং জনগণের পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহযোগিতা করার জন্য। আমরা মনে করি সেটা খুবই জরুরি। সেই বিবেচনা থেকেই আমরা এখন পর্যন্ত অগ্রসর হচ্ছি এবং সেক্ষেত্রে আপনাদের পরামর্শ আমাদেরকে সাহায্য করবে।

আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশন চেষ্টা করবে যে জাতীয় সনদ তৈরি হচ্ছে তার পাশাপাশি যে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে সেখানে যেন এই মতামতগুলো থাকে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি যে জাতীয় ঐকমত্য গঠনে কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা যথেষ্ট নয়, নাগরিক সমাজের মধ্যেও এ বিষয়ে এক ধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা দরকার। তাই নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ সংস্কার কর্মসূচি থেকে বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হওয়ার পর ছয় মাস সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, সেই ছয় মাসের প্রায় মাঝামাঝি সময়ে আমরা উপস্থিত। এই সময়ে আমরা বিভিন্নভাবেই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করা ছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আমরা তার সংক্ষেপ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে যোগাযোগ করেছি। দলগুলো তাদের মতামত দিয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তিনি বলেন, আমরা একটা মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। অমিত সম্ভাবনা তৈরি করেছি, কিন্তু যে কোন সম্ভাবনা যেমন চ্যালেঞ্জ তৈরি করে, এই পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলো অত্যন্ত কঠিন। কেননা চেষ্টা হচ্ছে রাষ্ট্র কাঠামোর কিছু প্রাতিষ্ঠানিকৃ সেটা খুব সহজ হওয়ার কথা নয়। আমাদের প্রত্যাশা যে সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যেৃ এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের যে সুযোগ, সেই সুযোগকে আমরা গ্রহণ করতে পারব।

বিগত দিনে মানুষের যে আত্মদান, সেই ‘রক্তের কাছে দায়বদ্ধতার’ কথা তুলে ধরে কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, আমরা আশা করি, সকলেই তাদের নিজস্ব জায়গা থেকে এই কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো যতটা অর্জন করা সম্ভব, সেজন্য সক্রিয় থাকবেন। আশা করি আপনাদের মতামত আমাদেরকে সহযোগিতা করবে।
আলী রীয়াজ ছাড়াও ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার এ আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন আ ন ম মুনীরুজ্জামান, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, সামিনা লুতফা, ওয়ারেসুল করিম, আশরাফুন নাহার মিষ্টি, চৌধুরী সামিউল হক, মির্জা হাসান, ইলিরা দেওয়ান, সাইদা সুলতানা রাজিয়া, বাসুদেব ধর, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, বিচারপতি এম এ মতিন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘ক্ষমতায় থাকতে’ ইউনূস মৌলবাদীদের ‘একখানে করেছেন’: গয়েশ্বর

যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, সেগুলোও প্রকাশ করা হবে: আলী রীয়াজ

আপডেট সময় : ০৯:০৯:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা জানানোর পাশাপাশি যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়নি, তাও ‘স্বচ্ছতার স্বার্থে’ প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

রোববার (২৫ মে) কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, দলগতভাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে যেমন ঐকমত্য হয়েছে, কিছু মৌলিক বিষয়ে তা সম্ভব হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক আদর্শিক অবস্থানের কারণে মতপার্থক্য থাকবে, সব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না, এটা হচ্ছে বাস্তব।

তিনি বলেন, আমরা নাগরিক সমাজের চিন্তাভাবনাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে আজ এখানে আপনাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং এই আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রমের ব্যাপারে আপনাদের পরামর্শ নেবো।
আলী রীয়াজ বলেন, যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে, এগুলো জানাব। আর আমরা যেসব বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা যায়নি সেগুলোও আমরা জানাব। কারণ হচ্ছে স্বচ্ছতার জন্য এবং জনগণের পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহযোগিতা করার জন্য। আমরা মনে করি সেটা খুবই জরুরি। সেই বিবেচনা থেকেই আমরা এখন পর্যন্ত অগ্রসর হচ্ছি এবং সেক্ষেত্রে আপনাদের পরামর্শ আমাদেরকে সাহায্য করবে।

আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশন চেষ্টা করবে যে জাতীয় সনদ তৈরি হচ্ছে তার পাশাপাশি যে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে সেখানে যেন এই মতামতগুলো থাকে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি যে জাতীয় ঐকমত্য গঠনে কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা যথেষ্ট নয়, নাগরিক সমাজের মধ্যেও এ বিষয়ে এক ধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা দরকার। তাই নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ সংস্কার কর্মসূচি থেকে বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হওয়ার পর ছয় মাস সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, সেই ছয় মাসের প্রায় মাঝামাঝি সময়ে আমরা উপস্থিত। এই সময়ে আমরা বিভিন্নভাবেই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করা ছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আমরা তার সংক্ষেপ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে যোগাযোগ করেছি। দলগুলো তাদের মতামত দিয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তিনি বলেন, আমরা একটা মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। অমিত সম্ভাবনা তৈরি করেছি, কিন্তু যে কোন সম্ভাবনা যেমন চ্যালেঞ্জ তৈরি করে, এই পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলো অত্যন্ত কঠিন। কেননা চেষ্টা হচ্ছে রাষ্ট্র কাঠামোর কিছু প্রাতিষ্ঠানিকৃ সেটা খুব সহজ হওয়ার কথা নয়। আমাদের প্রত্যাশা যে সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যেৃ এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের যে সুযোগ, সেই সুযোগকে আমরা গ্রহণ করতে পারব।

বিগত দিনে মানুষের যে আত্মদান, সেই ‘রক্তের কাছে দায়বদ্ধতার’ কথা তুলে ধরে কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, আমরা আশা করি, সকলেই তাদের নিজস্ব জায়গা থেকে এই কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো যতটা অর্জন করা সম্ভব, সেজন্য সক্রিয় থাকবেন। আশা করি আপনাদের মতামত আমাদেরকে সহযোগিতা করবে।
আলী রীয়াজ ছাড়াও ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার এ আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন আ ন ম মুনীরুজ্জামান, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, সামিনা লুতফা, ওয়ারেসুল করিম, আশরাফুন নাহার মিষ্টি, চৌধুরী সামিউল হক, মির্জা হাসান, ইলিরা দেওয়ান, সাইদা সুলতানা রাজিয়া, বাসুদেব ধর, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, বিচারপতি এম এ মতিন।