ঢাকা ০৪:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

যেসব খেলাধুলা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটায়

  • আপডেট সময় : ১১:৪৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ অগাস্ট ২০২২
  • ২৭ বার পড়া হয়েছে

ডা. সেলিনা সুলতানা : শিশুদের জন্য খেলাধুলা খুবই জরুরি। শিশুর বিকাশে সাহায্য করে খেলাধুলা। বিশেষ করে শিশুর জন্য দরকার স্বাধীন খেলাধুলা। উদাহরণের মধ্যে আছে- ছবি আঁকা, রং করা, পেইন্টিং, কাটিং ও আঁঠালো আর্ট দিয়ে জোড়া লাগানো, মেক-বিলিভ গেমস বা প্রিটেনড প্লে বা ড্রেসআপ খেলা। খেলার মাঠের সরঞ্জামে খেলা, আরোহণ বা ক্লাইম্বিং, দোলনা, চারপাশে দৌড়ানো।
ফ্রি প্লে বা স্বাধীন খেলাধুলা শিশুদেরকে স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা বিকাশ করতে সাহায্য করে। শিশুদের আগ্রহ ঠিক কোন বিষয়ে বেশি তা আবিষ্কারের সুযোগ প্রদান করে খেলাধুলা। ফ্রী প্লে বা স্বাধীন খেলাধুলা ভাষার বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক্ষেত্রে শিশুরা একসঙ্গে েেখার ফাঁকে নিজের মধ্যে যোগাযোগের পরিধি বাড়ায়। পাশাপাশি তারা একে অপরকে এমন শব্দ ও বাক্যাংশ শেখায় যা তার অভিভাবকেরাও করতে পারেন না। খেলাভিত্তিক শিক্ষা একটি শিশুর সামাজিক ও মানসিক দক্ষতার বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দু’ধরনের খেলার ব্যবস্থা আছে- প্রাপ্তবয়স্কদের-নির্দেশিত খেলা ও শিশু-নির্দেশিত খেলা। দুটিই শিশুর বিকাশের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাপ্তবয়স্ক-নির্দেশিত খেলার মধ্যে আছে- শিশুদের সঙ্গে স্পঞ্জ পেইন্টিং, বাগানে খেলা, বোর্ড গেমস খেলা, মৃৎশিল্পের ক্লাস বা আর্টক্লাসে নিয়ে যাওয়া, লুকোচুরি খেলা কিংবা একসঙ্গে রান্না করা ইত্যাদি। খেলা একটি সৃজনশীল কার্যকলাপ। শিশুরা প্রতিনিয়ত নিজেদের বিনোদনের জন্য নতুন নতুন গেম ও ক্রিয়াকলাপ নিয়ে চিন্তা করে। উদাহরণস্বরূপ, শিশুরা গল্প ও ঘটনা তৈরি করে নিজেদের মতো ও সেগুলো এমনভাবে কাজ করে যেন বাস্তবে তা ঘটছে।
নির্মাণের খেলনা দিয়ে খেলার সময়, একটি বিল্ডিং এর নকশা তৈরি সৃজনশীলতা নিয়ে আসে। সব ধরনের খেলাই সৃজনশীল অভিব্যক্তির বিকাশ ঘটায়। আপনি কীভাবে আপনার ছোট শিশুকে সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করতে পারেন তা অবশ্যই জানতে হবে। একটি শিশুর সামাজিক দক্ষতা শেখার প্রথম উপায় হলো তাদের পিতামাতার সঙ্গে যোগাযোগ। এরপর ভাই-বোন বা বন্ধুদের সঙ্গে খেলার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ গড়ে ওঠে।
স্বাধীনভাবে খেলা চলাকালীন, শিশুরা অনেক সামাজিক দক্ষতা শেখে যেমন- অন্যদের সহযোগিতা করা, অন্য বন্ধুদের সঙ্গে খেলা, ভাবের আদান প্রদান, বন্ধুদের নিয়ে আলোচনা, নিয়ম মেনে চলতে শেখা ইত্যাদি। এর পাশাপাশি অন্যদের নিয়ে চিন্তা করা কিংবা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখা ও বোঝা, ন্যায্য ও স্বাধীনভাবে মনমালিন্য সমাধান করা, নিজেদের বন্ধুদের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করা, অন্য বন্ধুদের নেতৃত্ব অনুসরণ করে, সহানুভূতিশীল আচরণ, সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য আচরণ ও সবার সঙ্গে কার্যকরভাবে যোগাযোগ রক্ষা করাও শেখে শিশুরা। জীবনের শুরুতে পরিকল্পনা দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীন খেলাধুলা বা ফ্রি প্লে একটি শিশুকে যৌক্তিকভাবে ও একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে একটি কাজ শুরু করার জন্য কীভাবে পরিকল্পনা করতে হয় তা জানতে সাহায্য করে।
খেলার সময় শিশু একটি বাড়ি তৈরির আগে পরিকল্পনা করে বা একটি পৃষ্ঠায় একটি ছবি কোথায় আটকানো হবে তা বোঝার চেষ্টা করে। এসবই শিশুর পরিকল্পনা করার ক্ষমতা বিকাশ করে। পরিকল্পনা এমন একটি দক্ষতা যার জন্য যতœশীল চিন্তাভাবনা ও বিবেচনার প্রয়োজন হয়। শিশু খেলা বা কাজ শুরু করার আগে পছন্দসই ফলাফল সম্পর্কে চিন্তা করতে শেখে ও কীভাবে কাজটি সম্পাদন করা যায় সে সম্পর্কে চিন্তা করতে সময় নেয়। শিশুদের গ্রসমোটর ও সূক্ষ্ম মোটর দক্ষতাগুলো মূলত স্বাধীন খেলার মাধ্যমে বিকশিত হয়। পড়তে ও লিখতে উন্নত মোটর দক্ষতার প্রয়োজন। শরীরের বড় পেশীগুলো খেলার মাধ্যমে বিকশিত হয় যেমন- হাঁটা ও দৌড়ানো, ক্লাইম্বিং বা আরোহণ, ঝুলানো, লাফানো, ক্রলিং, ঠেলাঠেলি, টানাটানি, ধরাধরি, বল বা অন্য কিছু নিক্ষেপ করা। আবার শরীরের ছোট পেশীগুলোও খেলার মাধ্যমে বিকশিত হয় যেমন- ব্লক বা নির্মাণ খেলার খেলনা দিয়ে বিল্ডিং, ছবি আঁকা ও সেগুলো কাটা, থ্রেডিং ও লেসিং। সাম্প্রতিক সময়ে স্ক্রিন টাইম বেড়ে যাওয়ায় শিশুর খেলার সময় কমে গেছে। তবে সব শিশুকেই স্বাধীনভাবে খেলার সুযোগ করে দিতে হবে। স্বাধীন খেলাধুলা বা ফ্রি-প্লে খেলার সময় প্রতিটি শিশু একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। তবে খেলার সময় সে কোন সমস্যার কী সমাধান করবে তা সে নিজেই বেছে নেয়। ফলে তার বিকাশ ঘটে ভালোভাবে। যখন শিশুরা প্রতিদিন খেলার জন্য অবসর সময় কাটাতে অভ্যস্ত হয়, তখন তাদের মধ্যে স্বাধীনতা বোধ তৈরি হয়।
অভিভাবক হিসাবে আমাদের কর্তব্য শিশুদের প্রতিটি খেলায় উপস্থিত না থাকা। তাহলে শিশু আপনার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে না। শিশুকে খেলার দিক থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিন। টানেলের মধ্যে দিয়ে আরোহণ করে, চারপাশে দৌড়ে, মুভমেন্ট গেম খেলে, মধ্যরেখা অতিক্রম করার মতো স্বাধীন খেলার মাধ্যমে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটতে পারে। অন্যদিকে মানসিকভাবে দুর্বল শিশুরা প্রায়শই কোনো খেলার সময় অন্য শিশুদের সঙ্গে ধাক্কা খায়। যদি শিশুদের স্পাসিয়াল সেন্স ঠিকমতো বিকাশ না ঘটে, তবে পরবর্তী সময়ে শব্দ ও অক্ষর লিখতে সমস্যা হয়। একটি অক্ষর খাতার পেইজের মার্জিন এর ভেতরে না বাইরে থাকবে সেটা সে বুঝতে পারে না। এজন্য শিশুর বিকাশের মূলে রয়েছে ‘খেলাধুলা’। যদি স্বাধীন খেলাধুলা হয়, সেটা আরও ভালো। শিশুরা খেলার মাধ্যমে বিশ্ব সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ করে ও শেখে। খেলার মধ্য দিয়েই তারা চারপাশের পরিবেশের সন্ধান করে, তা থেকে শব্দভা-ার তৈরি করে ও তাদের আবেগ প্রকাশ করে। অবশ্যই আমাদের উৎসাহ দিতে হবে ফ্রি প্লে বা স্বাধীন খেলাধুলার প্রতি।
লেখক: কনসালটেন্ট: নিউরোডেভলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার এবং চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পেডিয়াট্রিক ডিপার্টমেন্ট, বেটার লাইফ হসপিটাল; প্রাক্তন অটিজম বিশেষজ্ঞ: ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যেসব খেলাধুলা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটায়

আপডেট সময় : ১১:৪৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ অগাস্ট ২০২২

ডা. সেলিনা সুলতানা : শিশুদের জন্য খেলাধুলা খুবই জরুরি। শিশুর বিকাশে সাহায্য করে খেলাধুলা। বিশেষ করে শিশুর জন্য দরকার স্বাধীন খেলাধুলা। উদাহরণের মধ্যে আছে- ছবি আঁকা, রং করা, পেইন্টিং, কাটিং ও আঁঠালো আর্ট দিয়ে জোড়া লাগানো, মেক-বিলিভ গেমস বা প্রিটেনড প্লে বা ড্রেসআপ খেলা। খেলার মাঠের সরঞ্জামে খেলা, আরোহণ বা ক্লাইম্বিং, দোলনা, চারপাশে দৌড়ানো।
ফ্রি প্লে বা স্বাধীন খেলাধুলা শিশুদেরকে স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা বিকাশ করতে সাহায্য করে। শিশুদের আগ্রহ ঠিক কোন বিষয়ে বেশি তা আবিষ্কারের সুযোগ প্রদান করে খেলাধুলা। ফ্রী প্লে বা স্বাধীন খেলাধুলা ভাষার বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক্ষেত্রে শিশুরা একসঙ্গে েেখার ফাঁকে নিজের মধ্যে যোগাযোগের পরিধি বাড়ায়। পাশাপাশি তারা একে অপরকে এমন শব্দ ও বাক্যাংশ শেখায় যা তার অভিভাবকেরাও করতে পারেন না। খেলাভিত্তিক শিক্ষা একটি শিশুর সামাজিক ও মানসিক দক্ষতার বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দু’ধরনের খেলার ব্যবস্থা আছে- প্রাপ্তবয়স্কদের-নির্দেশিত খেলা ও শিশু-নির্দেশিত খেলা। দুটিই শিশুর বিকাশের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাপ্তবয়স্ক-নির্দেশিত খেলার মধ্যে আছে- শিশুদের সঙ্গে স্পঞ্জ পেইন্টিং, বাগানে খেলা, বোর্ড গেমস খেলা, মৃৎশিল্পের ক্লাস বা আর্টক্লাসে নিয়ে যাওয়া, লুকোচুরি খেলা কিংবা একসঙ্গে রান্না করা ইত্যাদি। খেলা একটি সৃজনশীল কার্যকলাপ। শিশুরা প্রতিনিয়ত নিজেদের বিনোদনের জন্য নতুন নতুন গেম ও ক্রিয়াকলাপ নিয়ে চিন্তা করে। উদাহরণস্বরূপ, শিশুরা গল্প ও ঘটনা তৈরি করে নিজেদের মতো ও সেগুলো এমনভাবে কাজ করে যেন বাস্তবে তা ঘটছে।
নির্মাণের খেলনা দিয়ে খেলার সময়, একটি বিল্ডিং এর নকশা তৈরি সৃজনশীলতা নিয়ে আসে। সব ধরনের খেলাই সৃজনশীল অভিব্যক্তির বিকাশ ঘটায়। আপনি কীভাবে আপনার ছোট শিশুকে সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করতে পারেন তা অবশ্যই জানতে হবে। একটি শিশুর সামাজিক দক্ষতা শেখার প্রথম উপায় হলো তাদের পিতামাতার সঙ্গে যোগাযোগ। এরপর ভাই-বোন বা বন্ধুদের সঙ্গে খেলার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ গড়ে ওঠে।
স্বাধীনভাবে খেলা চলাকালীন, শিশুরা অনেক সামাজিক দক্ষতা শেখে যেমন- অন্যদের সহযোগিতা করা, অন্য বন্ধুদের সঙ্গে খেলা, ভাবের আদান প্রদান, বন্ধুদের নিয়ে আলোচনা, নিয়ম মেনে চলতে শেখা ইত্যাদি। এর পাশাপাশি অন্যদের নিয়ে চিন্তা করা কিংবা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখা ও বোঝা, ন্যায্য ও স্বাধীনভাবে মনমালিন্য সমাধান করা, নিজেদের বন্ধুদের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করা, অন্য বন্ধুদের নেতৃত্ব অনুসরণ করে, সহানুভূতিশীল আচরণ, সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য আচরণ ও সবার সঙ্গে কার্যকরভাবে যোগাযোগ রক্ষা করাও শেখে শিশুরা। জীবনের শুরুতে পরিকল্পনা দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীন খেলাধুলা বা ফ্রি প্লে একটি শিশুকে যৌক্তিকভাবে ও একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে একটি কাজ শুরু করার জন্য কীভাবে পরিকল্পনা করতে হয় তা জানতে সাহায্য করে।
খেলার সময় শিশু একটি বাড়ি তৈরির আগে পরিকল্পনা করে বা একটি পৃষ্ঠায় একটি ছবি কোথায় আটকানো হবে তা বোঝার চেষ্টা করে। এসবই শিশুর পরিকল্পনা করার ক্ষমতা বিকাশ করে। পরিকল্পনা এমন একটি দক্ষতা যার জন্য যতœশীল চিন্তাভাবনা ও বিবেচনার প্রয়োজন হয়। শিশু খেলা বা কাজ শুরু করার আগে পছন্দসই ফলাফল সম্পর্কে চিন্তা করতে শেখে ও কীভাবে কাজটি সম্পাদন করা যায় সে সম্পর্কে চিন্তা করতে সময় নেয়। শিশুদের গ্রসমোটর ও সূক্ষ্ম মোটর দক্ষতাগুলো মূলত স্বাধীন খেলার মাধ্যমে বিকশিত হয়। পড়তে ও লিখতে উন্নত মোটর দক্ষতার প্রয়োজন। শরীরের বড় পেশীগুলো খেলার মাধ্যমে বিকশিত হয় যেমন- হাঁটা ও দৌড়ানো, ক্লাইম্বিং বা আরোহণ, ঝুলানো, লাফানো, ক্রলিং, ঠেলাঠেলি, টানাটানি, ধরাধরি, বল বা অন্য কিছু নিক্ষেপ করা। আবার শরীরের ছোট পেশীগুলোও খেলার মাধ্যমে বিকশিত হয় যেমন- ব্লক বা নির্মাণ খেলার খেলনা দিয়ে বিল্ডিং, ছবি আঁকা ও সেগুলো কাটা, থ্রেডিং ও লেসিং। সাম্প্রতিক সময়ে স্ক্রিন টাইম বেড়ে যাওয়ায় শিশুর খেলার সময় কমে গেছে। তবে সব শিশুকেই স্বাধীনভাবে খেলার সুযোগ করে দিতে হবে। স্বাধীন খেলাধুলা বা ফ্রি-প্লে খেলার সময় প্রতিটি শিশু একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। তবে খেলার সময় সে কোন সমস্যার কী সমাধান করবে তা সে নিজেই বেছে নেয়। ফলে তার বিকাশ ঘটে ভালোভাবে। যখন শিশুরা প্রতিদিন খেলার জন্য অবসর সময় কাটাতে অভ্যস্ত হয়, তখন তাদের মধ্যে স্বাধীনতা বোধ তৈরি হয়।
অভিভাবক হিসাবে আমাদের কর্তব্য শিশুদের প্রতিটি খেলায় উপস্থিত না থাকা। তাহলে শিশু আপনার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে না। শিশুকে খেলার দিক থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিন। টানেলের মধ্যে দিয়ে আরোহণ করে, চারপাশে দৌড়ে, মুভমেন্ট গেম খেলে, মধ্যরেখা অতিক্রম করার মতো স্বাধীন খেলার মাধ্যমে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটতে পারে। অন্যদিকে মানসিকভাবে দুর্বল শিশুরা প্রায়শই কোনো খেলার সময় অন্য শিশুদের সঙ্গে ধাক্কা খায়। যদি শিশুদের স্পাসিয়াল সেন্স ঠিকমতো বিকাশ না ঘটে, তবে পরবর্তী সময়ে শব্দ ও অক্ষর লিখতে সমস্যা হয়। একটি অক্ষর খাতার পেইজের মার্জিন এর ভেতরে না বাইরে থাকবে সেটা সে বুঝতে পারে না। এজন্য শিশুর বিকাশের মূলে রয়েছে ‘খেলাধুলা’। যদি স্বাধীন খেলাধুলা হয়, সেটা আরও ভালো। শিশুরা খেলার মাধ্যমে বিশ্ব সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ করে ও শেখে। খেলার মধ্য দিয়েই তারা চারপাশের পরিবেশের সন্ধান করে, তা থেকে শব্দভা-ার তৈরি করে ও তাদের আবেগ প্রকাশ করে। অবশ্যই আমাদের উৎসাহ দিতে হবে ফ্রি প্লে বা স্বাধীন খেলাধুলার প্রতি।
লেখক: কনসালটেন্ট: নিউরোডেভলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার এবং চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পেডিয়াট্রিক ডিপার্টমেন্ট, বেটার লাইফ হসপিটাল; প্রাক্তন অটিজম বিশেষজ্ঞ: ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল।