ঢাকা ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

যুদ্ধ শেষ, ইসরায়েল সফরকালে গাজা পরিদর্শনের আগ্রহ প্রকাশ ট্রাম্পের

  • আপডেট সময় : ০৫:৩০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

ইসরায়েলি বিমানবন্দরে নামার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প- ছবি রয়টার্স

প্রত্যাশা ডেস্ক: গাজা যুদ্ধ শেষ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ইসরায়েল সফর করছেন। সোমবার (১৩ অক্টোবর) ট্রাম্পের সরকারি উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ান তেল আবিবের উপকণ্ঠে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। বিমানবন্দরে নামার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ট্রাম্প। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি গাজা পরিদর্শন করতে চাই।’ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

এর আগে ট্রাম্প বলেন গাজা যুদ্ধ শেষ হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। রোববার (১২ অক্টোবর) ইসরায়েলগামী বিমানে ওঠার আগে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এয়ারফোর্স ওয়ানে করে তিনি ওয়াশিংটন থেকে ইসরায়েল যান। রওনা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘এ যুদ্ধ শেষ, আপনারা এটা বুঝতে পারছেন।’ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

সোমবার ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন ট্রাম্প। এদিন বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তার স্ত্রী সারা, যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার এবং তার স্ত্রী ও ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প। এর আগে, সাংবাদিকরা ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি গাজা পরিদর্শন করতে চাইবেন কি না?
সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, তিনি এটি করতে পারলে ‘গর্বিত’ হবেন। ট্রাম্প বলেন, তিনি গাজা সফর করতে চান। অন্তত একবার নিজের পা সেখানে রাখতে চান। যদিও গাজা সম্পর্কে তিনি এতটাই জানেন যে সেখানে না গিয়েও জায়গাটিকে ভালোভাবে চেনেন বলে উল্লেখ করেছেন।

ট্রাম্প আরো বলেছেন, গাজা ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা বা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া ধীরে ও ধৈর্যের সঙ্গে এগোতে হবে। তিনি মনে করেন, আগামী কয়েক দশকে (অর্থাৎ দীর্ঘ সময়ে) এখানে (গাজা) বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন বা ‘অলৌকিক’ অগ্রগতি ঘটবে, তবে সেটা সময়সাপেক্ষ। তবে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, যদি খুব তাড়াহুড়ো করে বা দ্রুত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তা উল্টো ফল দিতে পারে। তাই ‘সঠিক গতি’ বা পরিকল্পিতভাবে অগ্রসর হওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সোমবার ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে ভাষণ দেবেন এবং জিম্মিদের কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ট্রাম্প। এরপর গাজা শান্তি সম্মেলনে যোগ দিতে মিসরের অবকাযাপনকেন্দ্র শারম এল-শেখের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। ওই সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারসহ প্রায় ২০ বিশ্বনেতা উপস্থিত থাকবেন।

আমি শান্তি স্থাপনে পারদর্শী: পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত সংঘাতে দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার আগ্রহ দেখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১৩ অক্টোবর) তিনি বলেছেন, ‘আমি শান্তি স্থাপনে পারদর্শী।’

গত শনিবার (১১ অক্টোবর) গভীর রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তীব্র গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, কাবুলের হামলার জবাবে ইসলামাবাদ পাল্টা ব্যবস্থা নিলে ২৩ পাকিস্তানি সেনা এবং দুই শতাধিক তালেবান ও সংশ্লিষ্ট যোদ্ধা নিহত হন।

দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে ফেরার পর থেকে ট্রাম্প বারবার দাবি করে আসছেন, তিনি আটটি যুদ্ধের সমাধান করেছেন, যা তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য করে তোলে। পর্যবেক্ষকরা অবশ্য তার এ দাবিকে ‘অতিরঞ্জিত’ বলে মনে করছেন।

সোমবার ওয়াশিংটন থেকে ইসরায়েলগামী প্লেনে ওঠার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। এসময় তিনি নিজেই পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে চলমান সংঘাতের প্রসঙ্গ তোলেন। এক সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞেস করেন, গাজায় শান্তিচুক্তি সম্পাদনের জন্য ট্রাম্পকে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় পক্ষই কৃতিত্ব দিচ্ছে-এটি তার উত্তরাধিকারে কীভাবে প্রভাব ফেলবে?

জবাবে ট্রাম্প বলেন, এটি অষ্টম যুদ্ধ, যা আমি সমাধান করেছি। এখন শুনছি, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। আমি বলেছি, ‘আমি দেশে ফিরে সেটাও দেখবো।’ আমি আরেকটি সমাধান করতে যাচ্ছি। কারণ যুদ্ধ মিটিয়ে শান্তি স্থাপনে আমি দক্ষ এবং এটি করা আমার জন্য সম্মানের বিষয়। আমি লাখো মানুষের প্রাণ বাঁচাই।

ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদোর নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, নোবেল কমিটিকে সুবিচার করতে হবে। এটা ২০২৪ সালের জন্য ছিলৃ তবে অনেকে বলছেন, ২০২৫ সালে ঘটে যাওয়া এবং সম্পন্ন হওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় তারা ব্যতিক্রম করতে পারতেন। কিন্তু আমি এটা নোবেলের জন্য করিনি, করেছি প্রাণ বাঁচানোর জন্য। তিনি আরো বলেন, ভাবুন ভারত-পাকিস্তান নিয়ে-দশকের পর দশক ধরে চলা কয়েকটি যুদ্ধ ছিল। একটির বয়স ৩১ বছর, একটির ৩২ বছর, আরেকটি ৩৭ বছর। আমি প্রতিটিই মূলত একদিনের মধ্যেই শেষ করেছি। এটা মন্দ নয়। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি কয়েকটি যুদ্ধ শুধু শুল্কনীতি প্রয়োগ করেই শেষ করেছেন।

‘ভারত ও পাকিস্তানকে আমি বলেছিলাম, তোমরা যদি যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করো, আমি তোমাদের দুই দেশের ওপরই ১০০, ১৫০ বা ২০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করবো। ফলাফল? ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধ মিটে যায়। শুল্ক না থাকলে এটি কখনোই সম্ভব হতো না,’ বলেন তিনি।

ট্রাম্প এর আগেও দাবি করেছেন, তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত মে মাসের সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছেন। কয়েক দশকের মধ্যে এটি ছিল দুই দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত, যা ভারতশাসিত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর শুরু হয়। ভারত দাবি করেছিল, হামলাটির পেছনে পাকিস্তানের সমর্থন ছিল। ইসলামাবাদ অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে।

চার দিনব্যাপী সংঘাতে দুই পক্ষই যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, গোলন্দাজ অস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে। এতে বহু প্রাণহানি ঘটে। পরে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। পাকিস্তান দাবি করে, সংঘাতের সময় তারা ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে ফরাসি তৈরি রাফালও ছিল। তবে ভারত ‘কিছু ক্ষতি’ স্বীকার করলেও ছয়টি যুদ্ধবিমান হারানোর কথা অস্বীকার করে। সূত্র: ডন, এএফপি, রয়টার্স

সানা/আপ্র/১৩/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

যুদ্ধ শেষ, ইসরায়েল সফরকালে গাজা পরিদর্শনের আগ্রহ প্রকাশ ট্রাম্পের

আপডেট সময় : ০৫:৩০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: গাজা যুদ্ধ শেষ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ইসরায়েল সফর করছেন। সোমবার (১৩ অক্টোবর) ট্রাম্পের সরকারি উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ান তেল আবিবের উপকণ্ঠে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। বিমানবন্দরে নামার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ট্রাম্প। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি গাজা পরিদর্শন করতে চাই।’ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

এর আগে ট্রাম্প বলেন গাজা যুদ্ধ শেষ হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। রোববার (১২ অক্টোবর) ইসরায়েলগামী বিমানে ওঠার আগে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এয়ারফোর্স ওয়ানে করে তিনি ওয়াশিংটন থেকে ইসরায়েল যান। রওনা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘এ যুদ্ধ শেষ, আপনারা এটা বুঝতে পারছেন।’ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

সোমবার ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন ট্রাম্প। এদিন বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তার স্ত্রী সারা, যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার এবং তার স্ত্রী ও ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প। এর আগে, সাংবাদিকরা ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি গাজা পরিদর্শন করতে চাইবেন কি না?
সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, তিনি এটি করতে পারলে ‘গর্বিত’ হবেন। ট্রাম্প বলেন, তিনি গাজা সফর করতে চান। অন্তত একবার নিজের পা সেখানে রাখতে চান। যদিও গাজা সম্পর্কে তিনি এতটাই জানেন যে সেখানে না গিয়েও জায়গাটিকে ভালোভাবে চেনেন বলে উল্লেখ করেছেন।

ট্রাম্প আরো বলেছেন, গাজা ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা বা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া ধীরে ও ধৈর্যের সঙ্গে এগোতে হবে। তিনি মনে করেন, আগামী কয়েক দশকে (অর্থাৎ দীর্ঘ সময়ে) এখানে (গাজা) বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন বা ‘অলৌকিক’ অগ্রগতি ঘটবে, তবে সেটা সময়সাপেক্ষ। তবে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, যদি খুব তাড়াহুড়ো করে বা দ্রুত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তা উল্টো ফল দিতে পারে। তাই ‘সঠিক গতি’ বা পরিকল্পিতভাবে অগ্রসর হওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সোমবার ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে ভাষণ দেবেন এবং জিম্মিদের কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ট্রাম্প। এরপর গাজা শান্তি সম্মেলনে যোগ দিতে মিসরের অবকাযাপনকেন্দ্র শারম এল-শেখের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। ওই সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারসহ প্রায় ২০ বিশ্বনেতা উপস্থিত থাকবেন।

আমি শান্তি স্থাপনে পারদর্শী: পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত সংঘাতে দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার আগ্রহ দেখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১৩ অক্টোবর) তিনি বলেছেন, ‘আমি শান্তি স্থাপনে পারদর্শী।’

গত শনিবার (১১ অক্টোবর) গভীর রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তীব্র গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, কাবুলের হামলার জবাবে ইসলামাবাদ পাল্টা ব্যবস্থা নিলে ২৩ পাকিস্তানি সেনা এবং দুই শতাধিক তালেবান ও সংশ্লিষ্ট যোদ্ধা নিহত হন।

দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে ফেরার পর থেকে ট্রাম্প বারবার দাবি করে আসছেন, তিনি আটটি যুদ্ধের সমাধান করেছেন, যা তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য করে তোলে। পর্যবেক্ষকরা অবশ্য তার এ দাবিকে ‘অতিরঞ্জিত’ বলে মনে করছেন।

সোমবার ওয়াশিংটন থেকে ইসরায়েলগামী প্লেনে ওঠার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। এসময় তিনি নিজেই পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে চলমান সংঘাতের প্রসঙ্গ তোলেন। এক সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞেস করেন, গাজায় শান্তিচুক্তি সম্পাদনের জন্য ট্রাম্পকে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় পক্ষই কৃতিত্ব দিচ্ছে-এটি তার উত্তরাধিকারে কীভাবে প্রভাব ফেলবে?

জবাবে ট্রাম্প বলেন, এটি অষ্টম যুদ্ধ, যা আমি সমাধান করেছি। এখন শুনছি, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। আমি বলেছি, ‘আমি দেশে ফিরে সেটাও দেখবো।’ আমি আরেকটি সমাধান করতে যাচ্ছি। কারণ যুদ্ধ মিটিয়ে শান্তি স্থাপনে আমি দক্ষ এবং এটি করা আমার জন্য সম্মানের বিষয়। আমি লাখো মানুষের প্রাণ বাঁচাই।

ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদোর নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, নোবেল কমিটিকে সুবিচার করতে হবে। এটা ২০২৪ সালের জন্য ছিলৃ তবে অনেকে বলছেন, ২০২৫ সালে ঘটে যাওয়া এবং সম্পন্ন হওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় তারা ব্যতিক্রম করতে পারতেন। কিন্তু আমি এটা নোবেলের জন্য করিনি, করেছি প্রাণ বাঁচানোর জন্য। তিনি আরো বলেন, ভাবুন ভারত-পাকিস্তান নিয়ে-দশকের পর দশক ধরে চলা কয়েকটি যুদ্ধ ছিল। একটির বয়স ৩১ বছর, একটির ৩২ বছর, আরেকটি ৩৭ বছর। আমি প্রতিটিই মূলত একদিনের মধ্যেই শেষ করেছি। এটা মন্দ নয়। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি কয়েকটি যুদ্ধ শুধু শুল্কনীতি প্রয়োগ করেই শেষ করেছেন।

‘ভারত ও পাকিস্তানকে আমি বলেছিলাম, তোমরা যদি যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করো, আমি তোমাদের দুই দেশের ওপরই ১০০, ১৫০ বা ২০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করবো। ফলাফল? ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধ মিটে যায়। শুল্ক না থাকলে এটি কখনোই সম্ভব হতো না,’ বলেন তিনি।

ট্রাম্প এর আগেও দাবি করেছেন, তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত মে মাসের সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছেন। কয়েক দশকের মধ্যে এটি ছিল দুই দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত, যা ভারতশাসিত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর শুরু হয়। ভারত দাবি করেছিল, হামলাটির পেছনে পাকিস্তানের সমর্থন ছিল। ইসলামাবাদ অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে।

চার দিনব্যাপী সংঘাতে দুই পক্ষই যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, গোলন্দাজ অস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে। এতে বহু প্রাণহানি ঘটে। পরে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। পাকিস্তান দাবি করে, সংঘাতের সময় তারা ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে ফরাসি তৈরি রাফালও ছিল। তবে ভারত ‘কিছু ক্ষতি’ স্বীকার করলেও ছয়টি যুদ্ধবিমান হারানোর কথা অস্বীকার করে। সূত্র: ডন, এএফপি, রয়টার্স

সানা/আপ্র/১৩/১০/২০২৫