আন্তর্জাতিক ডেস্ক :এক মাস হলো রুশ আগ্রাসনের, তবুও অবিচল ইউক্রেন। এখনও সক্রিয় রয়েছে সরকার, রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিক শহরে লড়ছে অসংখ্য সেনা। ভীতি, ক্ষত, শোক নিয়ে হলেও প্রবল প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। সম্প্রতি কিয়েভের উপকণ্ঠে একটি শহর থেকে রুশ বাহিনীকে তাড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে ইউক্রেনীয় সেনারা। ত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী যখন ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে তখন অনেকেই ভেবেছিলেন কিয়েভের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার উৎখাত করা সম্ভব। তবে বুধবার যখন এই আগ্রাসনের এক মাস পূর্ণ হয়েছে তখন রুশ বাহিনী কার্যত থমকে আছে। অসংখ্য রুশ সেনার প্রাণহানির পরও অবিলম্বে এই যুদ্ধ অবসানের কোনো ইঙ্গিত দৃশ্যত নেই। অন্যদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব টের পেতে শুরু করেছে মস্কো। রাশিয়ার ওপর নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইউক্রেনকে আরও সামরিক সহযোগিতা দেওয়া নিয়ে এই সপ্তাহে ব্রাসেলস এবং ওয়ারশোতে বৈঠকে বসবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার গুরুত্বপূর্ণ মিত্ররা। উক্রেন যুদ্ধের জেরে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্য সরবরাহ নিয়ে আশঙ্কা, নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায় চীন-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আর্থিক এবং ভূরাজনৈতিক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। বরামহীনভাবে সহায়তা কামনা করে চলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বুধবার জাপানের পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি দাবি করেন, চার সপ্তাহের যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের পাশাপাশি ইউক্রেনের ১২১ শিশু নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণ তাদের খুন হয়ে যাওয়া স্বজন, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের কবর দেওয়ারও সুযোগ পাচ্ছে না, ভবনের ধ্বংসস্তুপ এবং রাস্তার পাশে কবর দিতে হচ্ছে।’ শ্চিমাদের সরবরাহ করা অস্ত্রে ইউক্রেনীয় বাহিনীর অতর্কিত হামলায় বারবার পিছু হটার পর রুশ বাহিনী এখন দূরে থেকে গোলাবর্ষণ শুরু করেছে। কৌশলগত বড় বড় লক্ষ্য এখনও পূরণ করতে পারেনি রাশিয়া। রাজধানী কিয়েভে বারবার আক্রমণ চালানো হয়েছে কিন্তু দখল তো দূরের কথা, শহরটি ঘিরে ফেলতে পারেনি রুশ বাহিনী। ুধবারও শহরটিতে গোলাবর্ষণ এবং গুলির শব্দ শোনা যায়। শহরের পশ্চিমাংশ থেকে আকাশে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি উপকণ্ঠ দখলে নিয়ে উভয় পক্ষই মরিয়া হয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধের সবচেয়ে ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছে দক্ষিণের বন্দরনগরী মারিউপোল। কয়েক সপ্তাহ অবরুদ্ধ করে রাখার পাশাপাশি শহরটি ব্যাপক গোলাবর্ষণের শিকার হয়েছে। এখন পর্যন্ত শহরটির পতন প্রতিহত করে নিজিদের নিয়ন্ত্রণ টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এর ফলে ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়ার সঙ্গে স্থল করিডোর স্থাপনের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে রুশ বাহিনীর।
জনপ্রিয় সংবাদ