ঢাকা ০৫:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যুক্তিবিদ্যা

  • আপডেট সময় : ১০:২৭:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১
  • ১৫৯ বার পড়া হয়েছে

শেখ সজীব আহমেদ : আহমাদ শখ করে অর্থনীতি না নিয়ে যুক্তিবিদ্যা সাবজেক্টটিই বেছে নিল।এই সাবজেক্টটি বেছে নেওয়ার কারণ হলো আহমাদ একটু কথা কম বলে।কথা কম বলার কারণ হলো সে গুছিয়ে কথা বলতে পারে না।হয়ত যুক্তিবিদ্যা নিলে,যুক্তিভাবে কথা বলতে পারবে।এছাড়া আহমাদের উকিল হওয়ার ইচ্ছে আছে।এই সাবজেক্টটি নিলে হয়ত ভালোভাবে কথা বলতে পারবে,ভালোভাবে উকালতি করতে পারবে।তাই এই সাবজেক্টটি বেছে নিল।আহমাদ অন্যান্য সাবজেক্টের চেয়ে এই সাবজেক্টটিই বেশি পড়ে।কারণ,তার পড়তেও খুব ভালো লাগে।পরীক্ষার কেন্দ্রে
যুক্তিবিদ্যার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে চলে গেল।
পরীক্ষা দেওয়ার ঘন্টাও শুরু হলো।
প্রশ্নগুলো দেখেও খুব খুশি।কারণ,সব প্রশ্ন কমন পড়েছে।আহমাদ প্রথমেই প্রশ্নগুলো পড়ে নিল।
তারপর লেখা শুরু করল।তার পাশের কিছু পরীক্ষার্থী নকলও করতেছে।
আহমাদ নিজের মতো করে লিখেই যাচ্ছে।তারা নকল দিতে চাইলে আহমাদ না করে দিল এবং বলল,’এত সহজ সাবজেক্টে কেউ নকল করে নাকি?’
পরের দিন দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা দিল।ভালোই লেখল।যতটা প্রশ্নের উত্তর চেয়েছে ততটাই উত্তর লিখে দিল।অন্যান্য সাবজেক্টে ফেল আসলেও এই সাবজেক্টে ফেল আসবে না আহমাদের ধারনা।কারণ,অন্যান্য সাবজেক্ট তার মনের মতো লিখতে পারেনি।
যখন পরীক্ষা রেজাল্ট আসলো,অনলাইনে চেক করে দেখে যুক্তিবিদ্যা বাদে সব সাবজেক্টেই পাশ করেছে।আহমাদ মন খারাপ করে ফেলল।এতো ভালো করে পরীক্ষা দিয়েও ফেল!ইংরেজিতে ফেল আসলেও তার কোনো দুঃখ ছিল না।কারণ,আহমাদ ইংরেজি পরীক্ষায় কী লিখছে তা নিজেও জানে না।
ফেল করার পরের বছরে রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি বলে এর পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার রেজিস্ট্রেশন করে ফেল করা সাবজেক্টটি পরীক্ষা দিতে গেল।
এবারও ভালোই পরীক্ষা দিল।
এবার পাশ আসবে নিশ্চিত।যখন অনলাইনে রেজাল্ট চেক করে দেখতে পেল এবারও ফেল।
গতবারের মতো এবারও বোর্ড চ্যালেঞ্জ করল।কিন্তু কোনো কাজ হলো না।
আহমাদ মনটি খারাপ করে ভাবতে লাগল।
‘কী করা যায়?একটি সাবজেক্টের কারণে জীবনটা
নষ্ট হয়ে যাবে?আমার উকিল হওয়া স্বপ্ন পূরণ হবে না?নাকি আত্মহত্যার পথ বেছে নেব?
আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়।এতো সহজ সাবজেক্টে দু-দুবার পরীক্ষা দিয়ে ফেল এটা তো
মেনে নেওয়া যায় না।খুবই লজ্জাজনক!
তৃতীয়বার পরীক্ষা দিলে ইজ্জতই থাকবে না।
সবাই হয়ত আদু ভাই বলে ডাক দিবে।
পড়াশোনা বাদ।’
তারপর সে,নিজে নিজেকেই শান্তনা দিতে থাকে।
এই যুক্তিবিদ্যা সাবজেক্টের কারণেই আহমাদের আর পড়াশোনা করা হলো না।
তারপর আহমাদ জীবিকা নির্বাহের জন্য দূরপ্রবাসে চলে আসে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যুক্তিবিদ্যা

আপডেট সময় : ১০:২৭:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১

শেখ সজীব আহমেদ : আহমাদ শখ করে অর্থনীতি না নিয়ে যুক্তিবিদ্যা সাবজেক্টটিই বেছে নিল।এই সাবজেক্টটি বেছে নেওয়ার কারণ হলো আহমাদ একটু কথা কম বলে।কথা কম বলার কারণ হলো সে গুছিয়ে কথা বলতে পারে না।হয়ত যুক্তিবিদ্যা নিলে,যুক্তিভাবে কথা বলতে পারবে।এছাড়া আহমাদের উকিল হওয়ার ইচ্ছে আছে।এই সাবজেক্টটি নিলে হয়ত ভালোভাবে কথা বলতে পারবে,ভালোভাবে উকালতি করতে পারবে।তাই এই সাবজেক্টটি বেছে নিল।আহমাদ অন্যান্য সাবজেক্টের চেয়ে এই সাবজেক্টটিই বেশি পড়ে।কারণ,তার পড়তেও খুব ভালো লাগে।পরীক্ষার কেন্দ্রে
যুক্তিবিদ্যার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে চলে গেল।
পরীক্ষা দেওয়ার ঘন্টাও শুরু হলো।
প্রশ্নগুলো দেখেও খুব খুশি।কারণ,সব প্রশ্ন কমন পড়েছে।আহমাদ প্রথমেই প্রশ্নগুলো পড়ে নিল।
তারপর লেখা শুরু করল।তার পাশের কিছু পরীক্ষার্থী নকলও করতেছে।
আহমাদ নিজের মতো করে লিখেই যাচ্ছে।তারা নকল দিতে চাইলে আহমাদ না করে দিল এবং বলল,’এত সহজ সাবজেক্টে কেউ নকল করে নাকি?’
পরের দিন দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা দিল।ভালোই লেখল।যতটা প্রশ্নের উত্তর চেয়েছে ততটাই উত্তর লিখে দিল।অন্যান্য সাবজেক্টে ফেল আসলেও এই সাবজেক্টে ফেল আসবে না আহমাদের ধারনা।কারণ,অন্যান্য সাবজেক্ট তার মনের মতো লিখতে পারেনি।
যখন পরীক্ষা রেজাল্ট আসলো,অনলাইনে চেক করে দেখে যুক্তিবিদ্যা বাদে সব সাবজেক্টেই পাশ করেছে।আহমাদ মন খারাপ করে ফেলল।এতো ভালো করে পরীক্ষা দিয়েও ফেল!ইংরেজিতে ফেল আসলেও তার কোনো দুঃখ ছিল না।কারণ,আহমাদ ইংরেজি পরীক্ষায় কী লিখছে তা নিজেও জানে না।
ফেল করার পরের বছরে রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি বলে এর পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার রেজিস্ট্রেশন করে ফেল করা সাবজেক্টটি পরীক্ষা দিতে গেল।
এবারও ভালোই পরীক্ষা দিল।
এবার পাশ আসবে নিশ্চিত।যখন অনলাইনে রেজাল্ট চেক করে দেখতে পেল এবারও ফেল।
গতবারের মতো এবারও বোর্ড চ্যালেঞ্জ করল।কিন্তু কোনো কাজ হলো না।
আহমাদ মনটি খারাপ করে ভাবতে লাগল।
‘কী করা যায়?একটি সাবজেক্টের কারণে জীবনটা
নষ্ট হয়ে যাবে?আমার উকিল হওয়া স্বপ্ন পূরণ হবে না?নাকি আত্মহত্যার পথ বেছে নেব?
আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়।এতো সহজ সাবজেক্টে দু-দুবার পরীক্ষা দিয়ে ফেল এটা তো
মেনে নেওয়া যায় না।খুবই লজ্জাজনক!
তৃতীয়বার পরীক্ষা দিলে ইজ্জতই থাকবে না।
সবাই হয়ত আদু ভাই বলে ডাক দিবে।
পড়াশোনা বাদ।’
তারপর সে,নিজে নিজেকেই শান্তনা দিতে থাকে।
এই যুক্তিবিদ্যা সাবজেক্টের কারণেই আহমাদের আর পড়াশোনা করা হলো না।
তারপর আহমাদ জীবিকা নির্বাহের জন্য দূরপ্রবাসে চলে আসে।