ঢাকা ১১:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে সোশ্যাল মিডিয়াই এখন সংবাদের প্রধান উৎস

  • আপডেট সময় : ০৬:৫৫:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া ও ভিডিও নেটওয়ার্কগুলো এখন যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান সংবাদ উৎসে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি এখন প্রথাগত টিভি চ্যানেল ও সংবাদ ওয়েবসাইটকেও ছাড়িয়ে গেছে। এক গবেষণায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

রয়টার্স ইনস্টিটিউটের মতে, ৫৪ শতাংশ মানুষ এখন ফেসবুক, এক্স এবং ইউটিউবের মতো নেটওয়ার্ক থেকে সংবাদ পান—যা টিভি (৫০%) এবং সংবাদ সাইট ও অ্যাপ (৪৮%) এর চেয়ে বেশি। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সোশ্যাল মিডিয়া ও ব্যক্তিনির্ভর সংবাদের উত্থান শুধু যুক্তরাষ্ট্রে সীমাবদ্ধ নয়। তবে এখানে পরিবর্তনগুলো দ্রুততর এবং অন্য দেশের তুলনায় অধিক প্রভাব ফেলছে।’

পডকাস্টার জো রোগান ছিলেন সবচেয়ে বেশি দেখা সংবাদ ব্যক্তিত্ব। এখানে প্রায় এক চতুর্থাংশ (২২%) মানুষ বলেছেন, তারা গত সপ্তাহে তার কোনো সংবাদ বা বিশ্লেষণ দেখেছেন।

প্রতিবেদনের লেখক নিক নিউম্যান বলেন, ‘সোশ্যাল ভিডিও ও ব্যক্তিনির্ভর সংবাদের উত্থান প্রথাগত প্রকাশকদের জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
প্রতিষ্ঠানটি আরো জানিয়েছে, কিছু রাজনীতিবিদ এখন মূলধারার সাংবাদিকদের পরিবর্তে সহানুভূতিশীল অনলাইন হোস্টদের সময় দিচ্ছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের নানা দেশের জনতাবাদী রাজনীতিবিদরা এখন প্রথাগত সাংবাদিকতাকে বাইপাস করে বন্ধুপ্রতিম পক্ষপাতদুষ্ট মিডিয়া, ‘ব্যক্তিত্ব’, ও ‘ইনফ্লুয়েন্সারদের’ ওপর নির্ভর করছেন। কারণ এরা প্রায়ই বিশেষ প্রবেশাধিকার পান কিন্তু কঠিন প্রশ্ন করেন না এবং অনেক সময় মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত। যদিও এ অনলাইন ব্যক্তিত্ব ও ইনফ্লুয়েন্সাররা জনপ্রিয়, তথাপি বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ (৪৭%) তাদের ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্যের অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেছেন—যা রাজনীতিবিদদের সঙ্গে প্রায় সমান।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সংবাদ পাওয়ার ক্ষেত্রে এক্স-এর ব্যবহার অনেক দেশেই স্থিতিশীল। তবে তা দিন দিন বাড়ছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এক্সের সবচেয়ে বড় উত্থান লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইলন মাস্ক এক্সের দায়িত্ব নেওয়ার পর, অনেক বেশি ডানপন্থি মানুষ, বিশেষত তরুণ পুরুষেরা এই নেটওয়ার্কে আসছেন। আর কিছু প্রগতিশীল দর্শক সেটি ত্যাগ করছেন বা কম ব্যবহার করছেন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ডানপন্থি হিসেবে আত্মপরিচয় দেওয়া ব্যবহারকারীর সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। যুক্তরাজ্যে ডানপন্থি এক্স ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তবে থ্রেডস, ব্লুস্কাই এবং মাস্টোডনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী নেটওয়ার্কগুলো বিশ্বব্যাপী খুব একটা প্রভাব ফেলছে না। সংবাদ ব্যবহারে তাদের নাগাল মাত্র ২ শতাংশ বা তারও কম।

এছাড়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, টিকটক সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল সোশ্যাল ও ভিডিও নেটওয়ার্ক, যা বর্তমানে বিশ্বের ১৭% মানুষ সংবাদ পাওয়ার জন্য ব্যবহার করেন। গত বছরের তুলনায় এর ৪ শতাংশ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এআই চ্যাটবট দিয়ে সংবাদ পাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এটি ২৫ বছরের নিচের বয়সীদের মধ্যে সাধারণ জনসংখ্যার চেয়ে দুই গুণ বেশি জনপ্রিয়। তবে অধিকাংশ মানুষ মনে করেন এআই সংবাদকে কম স্বচ্ছ, কম নির্ভুল এবং কম বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে। ৪৮টি দেশে প্রায় এক লাখ মানুষকে এই জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সূত্র: বিবিসি

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যুক্তরাষ্ট্রে সোশ্যাল মিডিয়াই এখন সংবাদের প্রধান উৎস

আপডেট সময় : ০৬:৫৫:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া ও ভিডিও নেটওয়ার্কগুলো এখন যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান সংবাদ উৎসে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি এখন প্রথাগত টিভি চ্যানেল ও সংবাদ ওয়েবসাইটকেও ছাড়িয়ে গেছে। এক গবেষণায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

রয়টার্স ইনস্টিটিউটের মতে, ৫৪ শতাংশ মানুষ এখন ফেসবুক, এক্স এবং ইউটিউবের মতো নেটওয়ার্ক থেকে সংবাদ পান—যা টিভি (৫০%) এবং সংবাদ সাইট ও অ্যাপ (৪৮%) এর চেয়ে বেশি। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সোশ্যাল মিডিয়া ও ব্যক্তিনির্ভর সংবাদের উত্থান শুধু যুক্তরাষ্ট্রে সীমাবদ্ধ নয়। তবে এখানে পরিবর্তনগুলো দ্রুততর এবং অন্য দেশের তুলনায় অধিক প্রভাব ফেলছে।’

পডকাস্টার জো রোগান ছিলেন সবচেয়ে বেশি দেখা সংবাদ ব্যক্তিত্ব। এখানে প্রায় এক চতুর্থাংশ (২২%) মানুষ বলেছেন, তারা গত সপ্তাহে তার কোনো সংবাদ বা বিশ্লেষণ দেখেছেন।

প্রতিবেদনের লেখক নিক নিউম্যান বলেন, ‘সোশ্যাল ভিডিও ও ব্যক্তিনির্ভর সংবাদের উত্থান প্রথাগত প্রকাশকদের জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
প্রতিষ্ঠানটি আরো জানিয়েছে, কিছু রাজনীতিবিদ এখন মূলধারার সাংবাদিকদের পরিবর্তে সহানুভূতিশীল অনলাইন হোস্টদের সময় দিচ্ছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের নানা দেশের জনতাবাদী রাজনীতিবিদরা এখন প্রথাগত সাংবাদিকতাকে বাইপাস করে বন্ধুপ্রতিম পক্ষপাতদুষ্ট মিডিয়া, ‘ব্যক্তিত্ব’, ও ‘ইনফ্লুয়েন্সারদের’ ওপর নির্ভর করছেন। কারণ এরা প্রায়ই বিশেষ প্রবেশাধিকার পান কিন্তু কঠিন প্রশ্ন করেন না এবং অনেক সময় মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত। যদিও এ অনলাইন ব্যক্তিত্ব ও ইনফ্লুয়েন্সাররা জনপ্রিয়, তথাপি বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ (৪৭%) তাদের ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্যের অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেছেন—যা রাজনীতিবিদদের সঙ্গে প্রায় সমান।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সংবাদ পাওয়ার ক্ষেত্রে এক্স-এর ব্যবহার অনেক দেশেই স্থিতিশীল। তবে তা দিন দিন বাড়ছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এক্সের সবচেয়ে বড় উত্থান লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইলন মাস্ক এক্সের দায়িত্ব নেওয়ার পর, অনেক বেশি ডানপন্থি মানুষ, বিশেষত তরুণ পুরুষেরা এই নেটওয়ার্কে আসছেন। আর কিছু প্রগতিশীল দর্শক সেটি ত্যাগ করছেন বা কম ব্যবহার করছেন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ডানপন্থি হিসেবে আত্মপরিচয় দেওয়া ব্যবহারকারীর সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। যুক্তরাজ্যে ডানপন্থি এক্স ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তবে থ্রেডস, ব্লুস্কাই এবং মাস্টোডনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী নেটওয়ার্কগুলো বিশ্বব্যাপী খুব একটা প্রভাব ফেলছে না। সংবাদ ব্যবহারে তাদের নাগাল মাত্র ২ শতাংশ বা তারও কম।

এছাড়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, টিকটক সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল সোশ্যাল ও ভিডিও নেটওয়ার্ক, যা বর্তমানে বিশ্বের ১৭% মানুষ সংবাদ পাওয়ার জন্য ব্যবহার করেন। গত বছরের তুলনায় এর ৪ শতাংশ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এআই চ্যাটবট দিয়ে সংবাদ পাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এটি ২৫ বছরের নিচের বয়সীদের মধ্যে সাধারণ জনসংখ্যার চেয়ে দুই গুণ বেশি জনপ্রিয়। তবে অধিকাংশ মানুষ মনে করেন এআই সংবাদকে কম স্বচ্ছ, কম নির্ভুল এবং কম বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে। ৪৮টি দেশে প্রায় এক লাখ মানুষকে এই জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সূত্র: বিবিসি