প্রত্যাশা ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের নিউ অরলেন্স শহরে বর্ষবরণ উদযাপন করা মানুষের ভিড়ের মধ্যে দ্রুতগতিতে গাড়ি তুলে দেয়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩৫ জনের মতো। স্থানীয় সময় বুধবার রাত সোয়া ৩ টার দিকে ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টার পার্টি এলাকার বুরবোন স্ট্রিটে এক ব্যক্তি ভিড়ের মধ্যে পিকআপ ট্রাক চালিয়ে দিলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানায়, চালক ব্যারিকেড ভেঙে জনতার ভিড়ের মধ্যে প্রচণ্ড গতিতে পিকআপ তুলে দেয় এবং ট্রাক থেকে নেমে গুলি করা শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানকার পুলিশও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। পুলিশ সঙ্গে গোলাগুলি চলাকালে সন্দেহভাজন ব্যক্তি নিহত হন। আহতদের মধ্যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা সন্দেহভাজন ব্যক্তির গুলিতে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে এফবিআই। তবে তারা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন।
এফবিআই আরও বলছে, হামলায় জড়িত ওই পিক আপের ভেতর থেকে ইসলামিক স্টেটের পতাকা পাওয়া গেছে। হামলাকারীর কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় মতবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে কী-না বা তিনি কোনো ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের’ সঙ্গে জড়িত কী-না, তা তদন্ত করা হচ্ছে। মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর থেকে জানা গেছে, ওই পিকআপটি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র এবং পাইপ বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। লুইজিয়ানা স্টেট পুলিশের বরাতে এপি জানায়, এগুলো কুলারের ভেতরে লুকানো ছিল এবং রিমোট দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য তারের সাথে সংযুক্ত ছিল। সেখান থেকে একটি রিমোট কন্ট্রোলও পাওয়া যায়। পরে সেগুলো নিষ্কিয় করা হয়।
কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে, জব্বার একা এই হামলা চালিয়েছেন নাকি কেউ তাকে সহায়তা করেছে। সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের ধারণা হামলাকারী একা ছিলেন না। যদিও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এখনো সেই সহযোগীদের বিষয়ে কোনো প্রমাণ প্রকাশ করেনি। জানা গেছে, নিউ অরলিন্স হামলায় জড়িত সন্দেহভাজন সামসুদ্দিন জব্বার টেক্সাসের হিউস্টনে বাস করতেন। তিনি জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার ইনফরমেশন সিস্টেমে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। মার্কিন সেনাবাহিনীতে ২০০৭ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত মানব সম্পদ ও আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি চাকরিচ্যুত হওয়ার আগে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত আফগানিস্তানে মোতায়েন ছিলেন। ২০২০ সালে আর্মি রিজার্ভ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সামসুদ্দিন জব্বার এর আগে টেক্সাসে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। ২০০২ সালে চুরি এবং ২০০৫ সালে লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর জন্য তিনি জরিমানা ও প্রোবেশন পেয়েছিলেন। সূত্র: বিবিসি