ঢাকা ১০:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে চীনা টেলিকম কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল

  • আপডেট সময় : ১১:৫১:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ অক্টোবর ২০২১
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতীয় নিরাপত্তার কথা জানিয়ে চীনের অন্যতম বৃহৎ একটি টেলিযোগাযোগ কোম্পানি চায়না টেলিকমের লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সকল ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে চায়না টেলিকমকে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই কোম্পানির ওপর চীনের সরকারের নিয়ন্ত্রণের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ ব্যবস্থায় তাদের প্রবেশ, তথ্য মজুদ করা, বিঘœ তৈরি করা বা ভুলভাবে চালানোর সুযোগ থেকে যায়। এর ফলে চীন ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি বা অন্য ক্ষতিকর কর্মকা- চালানোর’ সুযোগ পেতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে গত প্রায় ২০ বছর ধরে টেলিযোগাযোগ সেবা দিয়ে আসা চায়না টেলিকম এই সিদ্ধান্তকে ‘হতাশাজনক’ বলে বর্ণনা করেছে। একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সম্ভাব্য সকল বিকল্প অনুসরণের পরিকল্পনা করছি।’ চীনের টেলিযোগাযোগ খাতে যে তিনটি কোম্পানির প্রাধান্য রয়েছে, তাদের একটি চায়না টেলিকম। এই কোম্পানিটি ১১০টি দেশে কোটি কোটি গ্রাহককে সেবা দিয়ে থাকে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট থেকে শুরু করে মোবাইল ও ল্যান্ডলাইন টেলিফোন নেটওয়ার্কে এই কোম্পানি সেবা দিয়ে থাকে।
চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী লিউ হে’র সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পরেই চায়না টেলিকমের লাইসেন্স বাতিলের এই সিদ্ধান্ত জানা গেল। বাণিজ্য এবং তাইওয়ান ইস্যুতে দুই পরাশক্তির সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর এই দুই নেতার বৈঠককে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতির লক্ষণ হিসাবে মনে করা হচ্ছিল।
২০২০ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশন (এফসিসি) সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তারা হয়তো চায়না টেলিকমের কর্মকা- বন্ধ করে দিতে পারে। সেখানে তারা দাবি করেছিল, ‘চীনা সরকারের শোষণ, প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি।’
সেখানে বলা হয়েছিল, এই প্রতিষ্ঠানটি ‘সম্ভবত কোনো রকম স্বাধীন বিচার বিবেচনা ছাড়াই চীনা সরকারের অনুরোধ মেনে চলতে বাধ্য হয়ে থাকে।’ চায়না টেলিকম হলো চীনের সর্বশেষ প্রতিষ্ঠান যাদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন। গত বছর হুয়াওয়ে এবং জেডটিই-কে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য হুমকি হিসাবে বর্ণনা করেছিল এফসিসি। এর ফলে তাদের কাছ থেকে যন্ত্রপাতি কেনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কঠিন হয়ে যায়।
এর আগে ২০১৯ সালে চায়না মোবাইলের মার্কিন লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছিল এফসিসি। চায়না ইউনিকম আমেরিকান এবং প্যাসিফিক নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রেও এরকম ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সবগুলো ঘটনাতেই যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, এসব কোম্পানির মাধ্যমে চীনের সরকার আমেরিকার বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি বা জাতীয় স্বার্থের ক্ষতি করতে পারে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যুক্তরাষ্ট্রে চীনা টেলিকম কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল

আপডেট সময় : ১১:৫১:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ অক্টোবর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতীয় নিরাপত্তার কথা জানিয়ে চীনের অন্যতম বৃহৎ একটি টেলিযোগাযোগ কোম্পানি চায়না টেলিকমের লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সকল ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে চায়না টেলিকমকে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই কোম্পানির ওপর চীনের সরকারের নিয়ন্ত্রণের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ ব্যবস্থায় তাদের প্রবেশ, তথ্য মজুদ করা, বিঘœ তৈরি করা বা ভুলভাবে চালানোর সুযোগ থেকে যায়। এর ফলে চীন ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি বা অন্য ক্ষতিকর কর্মকা- চালানোর’ সুযোগ পেতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে গত প্রায় ২০ বছর ধরে টেলিযোগাযোগ সেবা দিয়ে আসা চায়না টেলিকম এই সিদ্ধান্তকে ‘হতাশাজনক’ বলে বর্ণনা করেছে। একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সম্ভাব্য সকল বিকল্প অনুসরণের পরিকল্পনা করছি।’ চীনের টেলিযোগাযোগ খাতে যে তিনটি কোম্পানির প্রাধান্য রয়েছে, তাদের একটি চায়না টেলিকম। এই কোম্পানিটি ১১০টি দেশে কোটি কোটি গ্রাহককে সেবা দিয়ে থাকে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট থেকে শুরু করে মোবাইল ও ল্যান্ডলাইন টেলিফোন নেটওয়ার্কে এই কোম্পানি সেবা দিয়ে থাকে।
চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী লিউ হে’র সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পরেই চায়না টেলিকমের লাইসেন্স বাতিলের এই সিদ্ধান্ত জানা গেল। বাণিজ্য এবং তাইওয়ান ইস্যুতে দুই পরাশক্তির সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর এই দুই নেতার বৈঠককে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতির লক্ষণ হিসাবে মনে করা হচ্ছিল।
২০২০ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশন (এফসিসি) সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তারা হয়তো চায়না টেলিকমের কর্মকা- বন্ধ করে দিতে পারে। সেখানে তারা দাবি করেছিল, ‘চীনা সরকারের শোষণ, প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি।’
সেখানে বলা হয়েছিল, এই প্রতিষ্ঠানটি ‘সম্ভবত কোনো রকম স্বাধীন বিচার বিবেচনা ছাড়াই চীনা সরকারের অনুরোধ মেনে চলতে বাধ্য হয়ে থাকে।’ চায়না টেলিকম হলো চীনের সর্বশেষ প্রতিষ্ঠান যাদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন। গত বছর হুয়াওয়ে এবং জেডটিই-কে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য হুমকি হিসাবে বর্ণনা করেছিল এফসিসি। এর ফলে তাদের কাছ থেকে যন্ত্রপাতি কেনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কঠিন হয়ে যায়।
এর আগে ২০১৯ সালে চায়না মোবাইলের মার্কিন লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছিল এফসিসি। চায়না ইউনিকম আমেরিকান এবং প্যাসিফিক নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রেও এরকম ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সবগুলো ঘটনাতেই যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, এসব কোম্পানির মাধ্যমে চীনের সরকার আমেরিকার বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি বা জাতীয় স্বার্থের ক্ষতি করতে পারে।