ঢাকা ১১:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের একাধিক বাড়ির অভিযোগ আদালতের নির্দেশে অনুসন্ধান করবে দুদক

  • আপডেট সময় : ০৩:০৫:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ৯৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ প্রসঙ্গে দুদকের কমিশনার জহুরুল হক বলেছেন, আমরা আদালতের নির্দেশনা মানতে বাধ্য।
গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মো. আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
সোমবার দুদক কমিশনার জহুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আদালতের নির্দেশনা মানতে বাধ্য, সংবিধান বলেছে আদালতের নির্দেশনা মানা সকলের জন্য বাধ্যতামূলক। আমরা অবশ্যই আদালতের নির্দেশনা প্রতিপালন করবো। আদালত কী আদেশ দিয়েছেন, তা আমরা এখনও পাইনি। যদি আদালত কোনও সময়সীমা নির্ধারণ করে দেন, তাহলে সে সময়ের মধ্যে শেষ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করবো। যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে না পারি আদালতের কাছে সময় চাইবো। আমাদের সাধ্য ও এখতিয়ারের মধ্যে আমরা আদালতের নির্দেশন অবশ্যই মানবো। আদালতের নির্দেশনার বাইরে দুদক স্বপ্রণোদিত হয় অনুসন্ধান করছে না এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক কমিশনার জহুরুল হক বলেন, আমরা সবই করছি। তবে আমরা আদালতের নির্দেশনা বেশি মানছি। আদালত নির্দেশনা দিলে সেটি মানা ম্যান্ডেটরি (বাধ্যকর) হয়ে যায়। অন্যান্য কিছু আমরা অনুসন্ধান করলে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এখন আদালত নির্দেশন দিলে আমরা যাচাইবাছাই ছাড়াই সরাসরি অনুসন্ধান করবো, এখানে কাজ একটি ধাপ এগিয়ে গেলো।
এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন রিটটি দায়ের করেন। রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আবদুস সোবহান মিয়াকে (গোলাপ) বিবাদী করা হয়। রিট আবেদনে ২০১৮ সালে নির্বাচনি হলফনামায় তথ্য গোপন করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশ-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আবদুস সোবহান মিয়ার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না-জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়। একইসঙ্গে রিট আবেদনে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত বেশ কিছু প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ বা ওসিসিআরপি তাদের ওয়েবসাইটে করা একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। ওসিসিআরপির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মো. আবদুস সোবহান মিয়া ২০১৪ সালে প্রথম নিউ ইয়র্কে অ্যাপার্টমেন্ট কেনা শুরু করেন। ওই বছর নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় একটি সুউচ্চ ভবনে অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন তিনি। পরের পাঁচ বছরে তিনি নিউ ইয়র্কে একে একে মোট ৯টি প্রপার্টি বা সম্পত্তির (ফ্ল্যাট বা বাড়ি) মালিক হন। এসব সম্পত্তির মূল্য ৪০ লাখ ডলারের বেশি (ডলারের বর্তমান বিনিময় মূল্য অনুযায়ী প্রায় ৪২ কোটি টাকা)। ওসিসিআরপির করা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে পাঁচটি কনডোমিনিয়াম (অ্যাপার্টমেন্ট) কিনেছিলেন আবদুস সোবহান। সে সময় ওই সম্পত্তির মূল্য ছিল প্রায় ২৪ লাখ ডলার। এ ছাড়া আশপাশের ভবনগুলোতে ছয় লাখ ৮০ হাজার ডলার মূল্যের তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছিলেন তিনি। নিউ ইয়র্কে কেনা এসব সম্পত্তির নথিপত্র বলছে, সম্পত্তিগুলো নগদ অর্থে কেনা হয়েছিল। এগুলোর মালিকানায় রয়েছেন তার স্ত্রী গুলশান আরাও।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এক নারীকে দুই ভাই বিয়ে করে বললেন- আমরা গর্বিত

যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের একাধিক বাড়ির অভিযোগ আদালতের নির্দেশে অনুসন্ধান করবে দুদক

আপডেট সময় : ০৩:০৫:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ প্রসঙ্গে দুদকের কমিশনার জহুরুল হক বলেছেন, আমরা আদালতের নির্দেশনা মানতে বাধ্য।
গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মো. আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
সোমবার দুদক কমিশনার জহুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আদালতের নির্দেশনা মানতে বাধ্য, সংবিধান বলেছে আদালতের নির্দেশনা মানা সকলের জন্য বাধ্যতামূলক। আমরা অবশ্যই আদালতের নির্দেশনা প্রতিপালন করবো। আদালত কী আদেশ দিয়েছেন, তা আমরা এখনও পাইনি। যদি আদালত কোনও সময়সীমা নির্ধারণ করে দেন, তাহলে সে সময়ের মধ্যে শেষ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করবো। যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে না পারি আদালতের কাছে সময় চাইবো। আমাদের সাধ্য ও এখতিয়ারের মধ্যে আমরা আদালতের নির্দেশন অবশ্যই মানবো। আদালতের নির্দেশনার বাইরে দুদক স্বপ্রণোদিত হয় অনুসন্ধান করছে না এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক কমিশনার জহুরুল হক বলেন, আমরা সবই করছি। তবে আমরা আদালতের নির্দেশনা বেশি মানছি। আদালত নির্দেশনা দিলে সেটি মানা ম্যান্ডেটরি (বাধ্যকর) হয়ে যায়। অন্যান্য কিছু আমরা অনুসন্ধান করলে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এখন আদালত নির্দেশন দিলে আমরা যাচাইবাছাই ছাড়াই সরাসরি অনুসন্ধান করবো, এখানে কাজ একটি ধাপ এগিয়ে গেলো।
এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন রিটটি দায়ের করেন। রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আবদুস সোবহান মিয়াকে (গোলাপ) বিবাদী করা হয়। রিট আবেদনে ২০১৮ সালে নির্বাচনি হলফনামায় তথ্য গোপন করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশ-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আবদুস সোবহান মিয়ার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না-জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়। একইসঙ্গে রিট আবেদনে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত বেশ কিছু প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ বা ওসিসিআরপি তাদের ওয়েবসাইটে করা একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। ওসিসিআরপির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মো. আবদুস সোবহান মিয়া ২০১৪ সালে প্রথম নিউ ইয়র্কে অ্যাপার্টমেন্ট কেনা শুরু করেন। ওই বছর নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় একটি সুউচ্চ ভবনে অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন তিনি। পরের পাঁচ বছরে তিনি নিউ ইয়র্কে একে একে মোট ৯টি প্রপার্টি বা সম্পত্তির (ফ্ল্যাট বা বাড়ি) মালিক হন। এসব সম্পত্তির মূল্য ৪০ লাখ ডলারের বেশি (ডলারের বর্তমান বিনিময় মূল্য অনুযায়ী প্রায় ৪২ কোটি টাকা)। ওসিসিআরপির করা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে পাঁচটি কনডোমিনিয়াম (অ্যাপার্টমেন্ট) কিনেছিলেন আবদুস সোবহান। সে সময় ওই সম্পত্তির মূল্য ছিল প্রায় ২৪ লাখ ডলার। এ ছাড়া আশপাশের ভবনগুলোতে ছয় লাখ ৮০ হাজার ডলার মূল্যের তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছিলেন তিনি। নিউ ইয়র্কে কেনা এসব সম্পত্তির নথিপত্র বলছে, সম্পত্তিগুলো নগদ অর্থে কেনা হয়েছিল। এগুলোর মালিকানায় রয়েছেন তার স্ত্রী গুলশান আরাও।