ঢাকা ০৬:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কমানোকে ঐতিহাসিক চুক্তি ও কূটনৈতিক বিজয় বললেন ইউনূস

  • আপডেট সময় : ০৪:৩১:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫
  • ৪৪ বার পড়া হয়েছে

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস -ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি বাংলাদেশের জন্য কূটনৈতিক বিজয়। তিনি বলেন, আমরা গর্বের সঙ্গে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচক দলকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি অর্জনের জন্য অভিনন্দন জানাই। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক বিজয় বলে অভিহিত করেন অধ্যাপক ইউনূস।

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শুল্ক হার প্রত্যাশিতের চেয়ে ১৭ পয়েন্ট কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনে আমাদের আলোচকরা অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা ও উন্নয়নের প্রতি অটুট প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তারা নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন এবং শুল্ক, অশুল্ক বাধা ও জাতীয় নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিষয়সহ জটিল এক আলোচনার প্রক্রিয়া দক্ষতার সঙ্গে অতিক্রম করেছেন। তারা যে চুক্তিটি অর্জন করেছেন, তা আমাদের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা ধরে রেখেছে, বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশাধিকারের সুযোগ বৃদ্ধি করেছে এবং আমাদের মৌলিক জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে। তিনি আরও বলেন, এই অর্জন শুধু বাংলাদেশের বৈশ্বিক অঙ্গনে ক্রমবর্ধমান শক্তিকে তুলে ধরে না, বরং আরও বৃহত্তর সুযোগ। দ্রুততর প্রবৃদ্ধি এবং স্থায়ী সমৃদ্ধির দরজাও উন্মোচন করে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল। আজকের এই সাফল্য আমাদের জাতির দৃঢ়তা ও আরও শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির এক শক্তিশালী প্রমাণ।

এদিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, আজ আমরা সম্ভাব্য ৩৫% পাল্টা শুল্ক এড়াতে পেরেছি। এটি আমাদের পোশাক খাত ও লাখও শ্রমিকের জন্য সুখবর। পাশাপাশি, আমরা আমাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার অবস্থান ধরে রেখেছি এবং বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছি।

১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুক্রবার নতুন শুল্ক হার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক দাঁড়াল ২০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে এই ঘোষণা আসার পর এক বিবৃতিতে খলিলুর রহমান এসব কথা বলেন। খলিলুর রহমান বলেন, আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আলোচনার প্রতিটি ধাপ পরিচালনা করেছি। আমাদের পোশাক খাত রক্ষাই ছিল অগ্রাধিকার, তবে আমরা মার্কিন কৃষিপণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, যা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা ও যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি রাজ্যগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরিতে সহায়ক হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ৭০টি দেশের আমদানির ওপর সর্বোচ্চ ৪১% পর্যন্ত নতুন শুল্কহার ঘোষণা করেছেন। চুক্তিগুলো শুধু শুল্ক সংশোধনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এতে দেশীয় নীতিমালার সংস্কার, বাণিজ্য ভারসাম্য, অশুল্ক বাধা ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত। এসব আলোচনার অংশ হিসেবে দেশগুলোকে মার্কিন পণ্য কেনার সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে, যাতে মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস পায়।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আদেশ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, প্রতিটি দেশের শুল্ক হার এই সমস্ত ক্ষেত্রে তাদের প্রতিশ্রুতির গভীরতা প্রতিফলিত করবে।

বাংলাদেশ ২০% শুল্কহার পেয়েছে, যা শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী পোশাক রপ্তানিকারক দেশের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে সমান। অন্যদিকে ভারত একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারায় ২৫% শুল্কের মুখোমুখি হয়েছে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কমানোকে ঐতিহাসিক চুক্তি ও কূটনৈতিক বিজয় বললেন ইউনূস

আপডেট সময় : ০৪:৩১:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি বাংলাদেশের জন্য কূটনৈতিক বিজয়। তিনি বলেন, আমরা গর্বের সঙ্গে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচক দলকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি অর্জনের জন্য অভিনন্দন জানাই। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক বিজয় বলে অভিহিত করেন অধ্যাপক ইউনূস।

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শুল্ক হার প্রত্যাশিতের চেয়ে ১৭ পয়েন্ট কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনে আমাদের আলোচকরা অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা ও উন্নয়নের প্রতি অটুট প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তারা নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন এবং শুল্ক, অশুল্ক বাধা ও জাতীয় নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিষয়সহ জটিল এক আলোচনার প্রক্রিয়া দক্ষতার সঙ্গে অতিক্রম করেছেন। তারা যে চুক্তিটি অর্জন করেছেন, তা আমাদের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা ধরে রেখেছে, বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশাধিকারের সুযোগ বৃদ্ধি করেছে এবং আমাদের মৌলিক জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে। তিনি আরও বলেন, এই অর্জন শুধু বাংলাদেশের বৈশ্বিক অঙ্গনে ক্রমবর্ধমান শক্তিকে তুলে ধরে না, বরং আরও বৃহত্তর সুযোগ। দ্রুততর প্রবৃদ্ধি এবং স্থায়ী সমৃদ্ধির দরজাও উন্মোচন করে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল। আজকের এই সাফল্য আমাদের জাতির দৃঢ়তা ও আরও শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির এক শক্তিশালী প্রমাণ।

এদিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, আজ আমরা সম্ভাব্য ৩৫% পাল্টা শুল্ক এড়াতে পেরেছি। এটি আমাদের পোশাক খাত ও লাখও শ্রমিকের জন্য সুখবর। পাশাপাশি, আমরা আমাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার অবস্থান ধরে রেখেছি এবং বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছি।

১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুক্রবার নতুন শুল্ক হার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক দাঁড়াল ২০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে এই ঘোষণা আসার পর এক বিবৃতিতে খলিলুর রহমান এসব কথা বলেন। খলিলুর রহমান বলেন, আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আলোচনার প্রতিটি ধাপ পরিচালনা করেছি। আমাদের পোশাক খাত রক্ষাই ছিল অগ্রাধিকার, তবে আমরা মার্কিন কৃষিপণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, যা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা ও যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি রাজ্যগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরিতে সহায়ক হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ৭০টি দেশের আমদানির ওপর সর্বোচ্চ ৪১% পর্যন্ত নতুন শুল্কহার ঘোষণা করেছেন। চুক্তিগুলো শুধু শুল্ক সংশোধনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এতে দেশীয় নীতিমালার সংস্কার, বাণিজ্য ভারসাম্য, অশুল্ক বাধা ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত। এসব আলোচনার অংশ হিসেবে দেশগুলোকে মার্কিন পণ্য কেনার সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে, যাতে মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস পায়।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আদেশ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, প্রতিটি দেশের শুল্ক হার এই সমস্ত ক্ষেত্রে তাদের প্রতিশ্রুতির গভীরতা প্রতিফলিত করবে।

বাংলাদেশ ২০% শুল্কহার পেয়েছে, যা শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী পোশাক রপ্তানিকারক দেশের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে সমান। অন্যদিকে ভারত একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারায় ২৫% শুল্কের মুখোমুখি হয়েছে।