নিজস্ব প্রতিবেদক :বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করে এলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করে আসেন সরকারবিরোধী দলের এই শীর্ষ নেতা। দুপুর ১টা ২০ মিনিটে বিএনপির মহাসচিবকে বহনকারী প্রাইভেট কারটি যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ভবনে ঢোকে। এক ঘণ্টা পর দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে গাড়িটি বেরিয়ে আসে। পিটার হাসের আমন্ত্রণে মির্জা ফখরুল ইসলাম গিয়েছিলেন এবং এই বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি একাই ছিলেন বলে জানা গেছে। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল বিএনপির মহাসচিব যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকে তাঁর সঙ্গে বিএনপির আরও দুজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, সে ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকার যেহেতু নির্বাচনী প্রক্রিয়াসহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে, সে প্রেক্ষাপটে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে এই ভিসা নীতি দিতে হয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমাদের এ অবস্থানই পিটার হাসের কাছে তুলে ধরেছি।’
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আগামী নির্বাচনসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বিএনপির বক্তব্য জানতে চান বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না বলে তাঁরা মনে করেন। এ বক্তব্যই তিনি তুলে ধরেন পিটার হাসের কাছে।
সর্বশেষ গত ১৬ এপ্রিল গুলশানে রাষ্ট্রদূতের আমন্ত্রণে তার বাসায় গিয়েছিলেন ফখরুলসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা। সেই বৈঠকের পর বিএনপি কিছু বলেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বলেছিল, বৈঠকে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং অহিংস রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার গুরুত্ব’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশে রাজনৈতিক বিরোধ এখনও কাটেনি। বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করলেও তা নাকচ করে আসছে আওয়ামী লীগ। একদিন আগে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গিয়ে ফখরুলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন জাপানের রাষ্ট্রদূত। রাষ্ট্রদূত কিছু না জানালেও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, রাষ্ট্রদূতের জিজ্ঞাসায় তারা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তার কাছে তুলে ধরেন। আন্দোলনে ‘ব্যর্থ’ হয়ে বিএনপি বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে ধরনা দিচ্ছে বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্য। একদিন আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, কূটনীতিকরা সীমা ছাড়ালে সরকার ব্যবস্থা নেবে।