ঢাকা ০২:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের বর্ষবরণে হামলায় আইএস!

  • আপডেট সময় : ০৮:২৩:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে একাধিক মানুষকে হত্যাকারী সাবেক মার্কিন সেনার ট্রাকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পতাকা থাকা নিয়ে গোষ্ঠীটি আবারও আলোচনায় এসেছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর অভিযানে কয়েকবছর আগে প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া গোষ্ঠীটির এখনও অনুসারী পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়েছে বিশ্ব।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের গতকাল শনিবার (৪ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই খবর জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিরিয়াতে আইএস নিজেদের দল পুনর্গঠন ও নতুন সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে বলে তারা উদ্বিগ্ন। বিশেষত, বাশার আল-আসাদের পতনের পর সেখানকার ক্ষমতায় যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা চরমপন্থিরা পূরণ করার আশঙ্কায় এই উদ্বেগ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ক্ষমতার শীর্ষে ছিল আইএস।

ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল এলাকায় দমনপীড়ন চালিয়ে জনগণের ওপর শাসন করেছে তারা। সে সময় মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে তাদের জাল বিস্তার করেছে তারা। আইএসের তৎকালীন নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি হুট করে জনসম্মুখে এসে নিজেকে মুসলমানদের খলিফা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তাকে হত্যা করেছিল। ইরাকে ২০১৭ সালে ও সিরিয়ায় ২০১৯ সালে এই এই গোষ্ঠীর কথিত খিলাফত ধ্বংস হয় মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের ধারাবাহিক অভিযানের মাধ্যমে। তবে এরপর আইএস বিভক্ত হয়ে ছোট ছোট সেলে ভেঙে পড়ে। তাদের নেতৃত্ব এখন গোপন রয়েছে। দলটির সামগ্রিক শক্তি নির্ধারণ করা তাই কঠিন।

জাতিসংঘের অনুমান অনুযায়ী, মূলভূমিতে আইএসের প্রায় ১০ হাজার সশস্ত্র সদস্য রয়েছে। বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের মাধ্যমে সশস্ত্র গোষ্ঠীদের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট। এরমধ্যেও আইএস কিছু বড় হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে ও নিউ অরলিন্সের ঘটনার মতো ‘লোন উলফ’ হামলার জন্য মানুষকে প্ররোচিত করতে পারছে। এধরণের হামলার মধ্যে রয়েছে ২০২৪ সালের মার্চে রাশিয়ার একটি মিউজিক হলে বন্দুকধারীদের আক্রমণে অন্তত ১৪৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনা। এছাড়া, গত জানুয়ারিতে ইরানের কেরমান শহরে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে দুটি বিস্ফোরণে শখানেক মানুষ নিহত হওয়া। মার্কিন ন্যাশনাল কাউন্টার টেররিজম সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ব্রেট হলমগ্রেন গত অক্টোবরে সতর্ক করে বলেছিলেন, আইএস-এর মিডিয়া অপারেশন পুনরায় সক্রিয় করার ও চক্রান্ত শুরুর আভাস পাওয়া গেছে। বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ইসলামিক স্টেটের জন্যও কিছুটা সহায়ক হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে মুসলিমদের মধ্যে যে ক্রোধের সঞ্চার হয়েছে, তার সুযোগ নিয়ে দলভারী করার চেষ্টায় রয়েছে আইএস।

সিরীয় কুর্দিদের কাছে বন্দি আইএসের হাজারো সদস্যরাও দলটির জন্য আরেকটা সুযোগ নিয়ে আসতে পারে। মার্কিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জানিয়েছে, নিউ অরলিন্স হামলাকারীর ট্রাকে আইএসের পতাকা থাকলেও ও গোষ্ঠীর সমর্থকরা এই হামলায় উল্লাস প্রকাশ করলেও, দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে ওই হামলার দায় স্বীকার বা প্রশংসামূলক বক্তব্য প্রকাশ করেনি।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যুক্তরাষ্ট্রের বর্ষবরণে হামলায় আইএস!

আপডেট সময় : ০৮:২৩:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে একাধিক মানুষকে হত্যাকারী সাবেক মার্কিন সেনার ট্রাকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পতাকা থাকা নিয়ে গোষ্ঠীটি আবারও আলোচনায় এসেছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর অভিযানে কয়েকবছর আগে প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া গোষ্ঠীটির এখনও অনুসারী পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়েছে বিশ্ব।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের গতকাল শনিবার (৪ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই খবর জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিরিয়াতে আইএস নিজেদের দল পুনর্গঠন ও নতুন সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে বলে তারা উদ্বিগ্ন। বিশেষত, বাশার আল-আসাদের পতনের পর সেখানকার ক্ষমতায় যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা চরমপন্থিরা পূরণ করার আশঙ্কায় এই উদ্বেগ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ক্ষমতার শীর্ষে ছিল আইএস।

ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল এলাকায় দমনপীড়ন চালিয়ে জনগণের ওপর শাসন করেছে তারা। সে সময় মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে তাদের জাল বিস্তার করেছে তারা। আইএসের তৎকালীন নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি হুট করে জনসম্মুখে এসে নিজেকে মুসলমানদের খলিফা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তাকে হত্যা করেছিল। ইরাকে ২০১৭ সালে ও সিরিয়ায় ২০১৯ সালে এই এই গোষ্ঠীর কথিত খিলাফত ধ্বংস হয় মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের ধারাবাহিক অভিযানের মাধ্যমে। তবে এরপর আইএস বিভক্ত হয়ে ছোট ছোট সেলে ভেঙে পড়ে। তাদের নেতৃত্ব এখন গোপন রয়েছে। দলটির সামগ্রিক শক্তি নির্ধারণ করা তাই কঠিন।

জাতিসংঘের অনুমান অনুযায়ী, মূলভূমিতে আইএসের প্রায় ১০ হাজার সশস্ত্র সদস্য রয়েছে। বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের মাধ্যমে সশস্ত্র গোষ্ঠীদের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট। এরমধ্যেও আইএস কিছু বড় হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে ও নিউ অরলিন্সের ঘটনার মতো ‘লোন উলফ’ হামলার জন্য মানুষকে প্ররোচিত করতে পারছে। এধরণের হামলার মধ্যে রয়েছে ২০২৪ সালের মার্চে রাশিয়ার একটি মিউজিক হলে বন্দুকধারীদের আক্রমণে অন্তত ১৪৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনা। এছাড়া, গত জানুয়ারিতে ইরানের কেরমান শহরে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে দুটি বিস্ফোরণে শখানেক মানুষ নিহত হওয়া। মার্কিন ন্যাশনাল কাউন্টার টেররিজম সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ব্রেট হলমগ্রেন গত অক্টোবরে সতর্ক করে বলেছিলেন, আইএস-এর মিডিয়া অপারেশন পুনরায় সক্রিয় করার ও চক্রান্ত শুরুর আভাস পাওয়া গেছে। বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ইসলামিক স্টেটের জন্যও কিছুটা সহায়ক হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে মুসলিমদের মধ্যে যে ক্রোধের সঞ্চার হয়েছে, তার সুযোগ নিয়ে দলভারী করার চেষ্টায় রয়েছে আইএস।

সিরীয় কুর্দিদের কাছে বন্দি আইএসের হাজারো সদস্যরাও দলটির জন্য আরেকটা সুযোগ নিয়ে আসতে পারে। মার্কিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জানিয়েছে, নিউ অরলিন্স হামলাকারীর ট্রাকে আইএসের পতাকা থাকলেও ও গোষ্ঠীর সমর্থকরা এই হামলায় উল্লাস প্রকাশ করলেও, দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে ওই হামলার দায় স্বীকার বা প্রশংসামূলক বক্তব্য প্রকাশ করেনি।