আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি ঘোষণা দিয়েছেন, পরমাণু চুক্তিতে ফেরার ব্যাপারে আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি ইরান মেনে নেবে না। গতকাল বুধবার এ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ওই দাবিকে ‘একগুঁয়ে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। খবর রয়টার্সের।
আয়াতুল্লা আলী খামেনি বলেন, ২০১৫ সালে হওয়া পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র আবার বেরিয়ে যাবে না—এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। দেশটি কাপুরুষোচিত ও বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। খামেনি অভিযোগ করে বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র একবার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।
২০১৫ সালে বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকার সময় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি হয় ইরানের। ওই চুক্তির মূল বিষয় ছিল, ইরান পরমাণু কার্যক্রম সীমিত রাখবে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন ইরানের যেকোনো পরমাণু স্থাপনায় যেকোনো সময় পরিদর্শন করতে পারবে। বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
কিন্তু সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ইরানও এই চুক্তি থেকে সরে যায় এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ শুরু করে। যদিও দুই পক্ষ থেকে এই চুক্তিতে ফেরার ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ই বলা হয়েছে। এ ছাড়া চুক্তিতে থাকা অন্য দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। এ ছাড়া এই চুক্তিতে ফিরতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সরাসরি কোনো আলোচনা হয়নি।
জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর চুক্তিতে ফিরবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে ট্রাম্পের আমলে যেসব নিষেধাজ্ঞা ইরানের ওপর আরোপ করা হয়েছে, তা এখনো প্রত্যাহার করা হয়নি। সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, বাইডেন প্রশাসন এই চুক্তিতে ফিরতে একটি অর্থবহ কূটনীতির পথ তৈরি করতে আন্তরিক।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেন, ২০১৫ সালের ওই চুক্তিতে ফেরার জন্য তারা প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘আমরা ইরানের প্রতি আহ্বান জানাই, শিগগিরই আলোচনার বসুন, যাতে আমরা দ্রুত ওই চুক্তিতে ফিরতে পারি।’
তবে খামেনি বলেন, সম্প্রতি যে আলোচনাগুলো হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্র তার অনমনীয় অবস্থান ধরে রেখেছে। তারা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে এবং কাগজে-কলমে বলছে, ইরানের ওপর থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে। কিন্তু তাদের কাজে এর প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। তারা এটা করবেও না।
যুক্তরাষ্ট্রের একগুঁয়ে দাবি মানবে না ইরান: খামেনি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ