আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ওপর রাশিয়ার সাইবার হামলার হুমকি বাড়ছে– গোয়েন্দা তথ্য থেকে এমন ইঙ্গিত মিলছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ড জো বাইডেন।
রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সাইবার হামলা চালানোর বিষয়টি ‘ভেবে দেখছে’; তবে, যুক্তরাষ্ট্র ‘সম্ভাব্য সকল সরঞ্জাম’ ব্যবহার করে সাইবার আক্রমণ মোকাবেল করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেইনে সামরিক আগ্রাসনের জেরে রাশিয়ার উপর আরোপিত অবরোধের প্রতিশোধ নিতে মস্কো সাইবার হামলা চালাতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
অন্যদিকে, মস্কো ও যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক “ভাঙনের মুখে” রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাশিয়া সাইবার হামলা চালাতে পারে বলে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন বাইডেন, যুক্তরাষ্ট্র হামলার উত্তর দিতে প্রস্তুত আছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ২৪ ফেব্রুয়ারিতেই।
গত সোমবারের বিবৃতিতে বাইডেন জানিয়েছেন, নতুন নতুন গোয়েন্দা তথ্য আসছে এবং “রাশিয়া সরকার বিকল্প উপায়গুলো নিয়ে ভাবছে” বলে বিশ্বাস করে যুক্তরাষ্ট্র।
পাশাপাশি, নিজ দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাশিয়ার সকল “ডিজিটাল দুয়ার বন্ধ করার গতি” বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
“আমেরিকানরা যে প্রযুক্তি ও গুরুত্বপূর্ণ সেবার উপর নির্ভর করে তার স্থিতীশীলতা এবং সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করার শক্তি, সক্ষমতা এবং দায়ভার আপনাদের আছে। সবাই যেন তার ভূমিকাটি পালন করেন, সেটাই প্রয়োজন আমাদের।”
রাশিয়া-ইউক্রেইন উত্তেজনার শুরু থেকেই রাশিয়ার সম্ভাব্য সাইবার হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে সাইবার নিরাপত্তা জগৎ। সাইবার হামলার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য শুধু সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতেই বলেনি, ইউক্রেইনের উপর রাশিয়ার হামলার প্রভাব অন্যদের উপরও পড়তে পারে বলে শুরুতেই সতর্ক করে দিয়েছিল উভয় দেশের কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে, উদাহরণ হিসেবে ‘নটপেটইয়া’ ওয়াইপার হামলার কথা বারবার উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। ম্যালওয়্যারটির জন্য দায়ী করা হচ্ছে রাশিয়ার সামরিক হ্যাকারদের।
২০১৭ সালে বিশ্বের কয়েক হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার সিস্টেমে ছড়িয়ে পরেছিল ম্যালওয়্যারটি। ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১ হাজার কোটি ডলার ছিল বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা বিবিসি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন সরাসরি না বললেও, যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর সাইবার হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে উঠে এসেছে বিবিসির প্রতিবেদনে। গেল বছরেই কলোনিয়াল পাইপলাইনের উপর সাইবার হামলার ঘটনায় বিপাকে পরেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র বা নেটোভুক্ত কোনো দেশের ওপর সাইবার হামলার ঘটনা ঘটলে সেক্ষেত্রে ‘আর্টিকেল ৫’ কার্যকর হবে। নেটোভুক্ত দেশগুলোর জোটবদ্ধ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কথা বলা আছে এতে। বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, সোমবারের বিবৃতিতে বাইডেন যে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন, সেটি একদিকে নতুন কিছু নয়। টানা কয়েক মাস ধরেই এমন সতর্কবার্তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, রাশিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ আগাম আঁচ করার বেলায় এখন পর্যন্ত সফল পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। চলমান পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বমুখী সামরিক উত্তেজনায় বাইডেনের সতর্কবার্তা তাই আলাদা ওজন বহন করছে বলে উঠে এসেছে বিবিসির প্রতিবেদনে।
যুক্তরাষ্ট্রের উপর সাইবার হামলা ‘ভেবে দেখছে’ রাশিয়া
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ