নারী ও শিশু ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নারী প্রেসিডেন্ট ব্যাপারটি এখনো ঘটেনি। না ঘটলেও লড়াইয়ে পিছপা হননি নারীরা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন কমলা হ্যারিস। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নতুন প্রার্থী করা হয় তাকে। শুরু হয়ে যায় তার নির্বাচনী প্রচার। প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বনে গেলেন কমলা হ্যারিস।
কমলা হ্যারিসের জন্ম ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে। তার মা ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও বাবা জ্যামাইকান আমেরিকান। কমলার পাঁচ বছর বয়সে মা-বাবার বিচ্ছেদ হলে মায়ের কাছেই বড় হন তিনি ও তার বোন। ক্যানসার গবেষক ও নাগরিক অধিকারকর্মী কমলার মা খুব ভালোভাবে টের পেয়েছিলেন মেয়েদের একা হাতে বড় করার ঝক্কি। কমলা হ্যারিস এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন তার আত্মজীবনী ‘দ্য ট্রুথস উই হোল্ড’ বইয়ে।
আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা কমলা ২০২০ সালে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হওয়ার জন্য প্রচার চালিয়েছিলেন। তবে ওই বছর বাদ পড়েন। এরপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হওয়ার পরই জো বাইডেন তার রানিংমেট হিসেবে কমলাকে বেছে নিয়েছিলেন।
বিখ্যাত ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনে কমলাকে প্রচ্ছদ করে তার একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয় ১১ অক্টোবর। রেসের ফিনিশিং লাইনে দাঁড়ানো কমলা হ্যারিসের বিভিন্ন কথা সেখানে তুলে ধরেন সাংবাদিক নাথান হেলার। সাক্ষাৎকারে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার যাত্রার কিছু মুহূর্ত তুলে ধরেন। ভোগকে তিনি বলেন, এক শব্দে ‘কাজ’ আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের শব্দ। কিন্তু কাজই সব সমস্যার সমাধান করতে পারে না বলেও মনে করেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে চলা মধ্যপ্রাচ্যের সহিংসতা, লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সংকটের কথা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে প্রায় দেড় ঘণ্টার জন্য প্রেসিডেন্টের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়েছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তবে এটিও সত্য, একজন নারী যুক্তরাষ্ট্রকে শাসন করছেন, এ দৃশ্য বিশ্ব এখনো দেখেনি অনেক সম্ভাবনা থাকার পরও।
নারী রাজনীতিবিদদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় প্রায় সময়। বিষয়টি বিশ্লেষণ করে রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর আমেরিকান উইমেন অ্যান্ড পলিটিকসের পরিচালক ডেবি ওয়ালশ বলেন, রাজনীতি করতে আসা নারীদের নিজের দৃঢ়তা প্রকাশ আর আগ্রাসী আচরণÑ এ দুয়ের মধ্যকার সূক্ষ্ম পার্থক্য বুঝতে হবে।
হিলারি ক্লিনটনের পরে বিশ্ববাসী তাকিয়ে কমলা হ্যারিসের দিকে। এবার দেখা যাক, এই দৌড়ে তিনি উতরাতে পারেন কি না।