ঢাকা ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাজ্যে ১৮ বয়সী সব শিক্ষার্থীকে গণিত পড়তে হবে

  • আপডেট সময় : ০৩:০৭:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১১২ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : যুক্তরাজ্যে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে কোনো না কোনোভাবে গণিত পড়তে হবে। এমনটাই পরিকল্পনা করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের প্রথম বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী ঋষি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাঁর পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করবেন। যুক্তরাজ্যে এখন একাধিক ধর্মঘট, জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকট ও ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এসব নিয়েও কথা বলবেন ঋষি। ২০২৩ সালের প্রথম বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী ঋষিকে তাঁর দক্ষতা ও দৃঢ়তা প্রমাণ করতে হবে। গত বছর দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ধারণা দিতে হবে তাঁকে।
এদিকে গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসকে তাঁর প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার ব্যাপক আত্মবিশ্বাসী। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির শিক্ষাবিষয়ক মুখপাত্র মুনিরা উইলসন এ পরিকল্পনাকে কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন, যা শিশুদের শিক্ষাব্যবস্থাকে খুব বাজেভাবে অবহেলা করেছে বলেও বলেছেন তিনি।
ঋষি তাঁর এ বছরের প্রথম বক্তব্যে যুক্তরাজ্যের জন্য তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এনএইচএসের সংকট মোকাবিলায় ব্যক্তিগতভাবে তিনি প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বও নিতে পারেন। তবে দেশটির বিরোধী দলগুলো এনএইচএসের চলমান সংকটের কারণে প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করেছেন। কারণ, জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকেরা আগেই এ ধরনের দুর্ঘটনা এবং জরুরি ইউনিটগুলো যে পুরো সংকটের মধ্যে রয়েছে, সে বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। বক্তৃতায় ঋষি গণিতশিক্ষার ওপর জোর দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন, ‘এখন বিশ্বের সর্বত্র ডেটার ওপর জোর দেওয়া হয় এবং প্রতিটি কাজে পরিসংখ্যানের ভূমিকা আছে। আমাদের চাকরির জন্য আরও বেশি বিশ্লেষণাত্মক (অ্যানালিটিক্যাল) দক্ষতার প্রয়োজন। এসব দক্ষতা ছাড়াই চাকরির বাজারে নেমে পড়ে তরুণেরা। পরে হতাশ হতে হয়।’ ঋষি সুনাকের মতে, ১৬ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের মাত্র অর্ধেক অংশ গণিত বিষয়ে পড়াশোনা করেন। এর মধ্যে বিজ্ঞানে অধ্যয়ন করা শিক্ষার্থী ও যাঁরা ইতিমধ্যে বাধ্যতামূলক জিসিএসই করে কলেজে পড়ছেন, তাঁরাই আছেন। তবে এ ক্ষেত্রে বি-টেকসহ মানবিক ও সৃজনশীল বিষয়ে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের গণিত অধ্যয়ন করতে হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সরকার বিদ্যমান যোগ্যতা বাড়াতে উদ্ভাবনী বিকল্পের বিষয় নিয়ে ভাবছে। প্রধানমন্ত্রী চলতি পার্লামেন্টে এসব পরিকল্পনার কাজ শুরু করবেন এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনের পর শেষ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ইনস্টিটিউট ফর ফিসক্যাল স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের সংখ্যা ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, যা ২ লাখ অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর সমান। দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব স্কুল অ্যান্ড কলেজের নেতারা বলছেন, দেশে গণিতের শিক্ষকের দীর্ঘস্থায়ী সংকট আছে।
এদিকে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর গণিত অধ্যয়নের জন্য কীভাবে অর্থায়ন করা হবে, তা প্রধানমন্ত্রী ঋষিকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন লেবার পার্টির ছায়া শিক্ষামন্ত্রী ব্রিজেত ফিলিপসন। ব্রিজেত ফিলিপসন বলেন, গণিতের পর্যাপ্ত শিক্ষক ছাড়া তিনি এ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারেন না। গণিতের শিক্ষক নিয়োগে সরকার বছরের পর বছর তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। যুক্তরাজ্যে ২০২১ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের সংখ্যা ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, যা ২ লাখ অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর সমান।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির শিক্ষাবিষয়ক মুখপাত্র মুনিরা উইলসন এ পরিকল্পনাকে কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন, যা শিশুদের শিক্ষাব্যবস্থাকে খুব বাজেভাবে অবহেলা করেছে বলেও বলেছেন তিনি।
মুনিরা উইলসন বলেন, গণিতের ক্ষেত্রে অনেক শিশুকে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিশুদের ১৬ বছর বয়সে পৌঁছানোর আগেই এ ঘটনা ঘটছে। ২০১১ সালে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মাইকেল গভ বলেছিলেন, তিনি আগামী এক দশকের মধ্যে ইংল্যান্ডের ১৮ বছর বয়সী বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর গণিত অধ্যয়ন দেখতে চান।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যুক্তরাজ্যে ১৮ বয়সী সব শিক্ষার্থীকে গণিত পড়তে হবে

আপডেট সময় : ০৩:০৭:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৩

প্রত্যাশা ডেস্ক : যুক্তরাজ্যে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে কোনো না কোনোভাবে গণিত পড়তে হবে। এমনটাই পরিকল্পনা করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের প্রথম বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী ঋষি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাঁর পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করবেন। যুক্তরাজ্যে এখন একাধিক ধর্মঘট, জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকট ও ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এসব নিয়েও কথা বলবেন ঋষি। ২০২৩ সালের প্রথম বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী ঋষিকে তাঁর দক্ষতা ও দৃঢ়তা প্রমাণ করতে হবে। গত বছর দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ধারণা দিতে হবে তাঁকে।
এদিকে গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসকে তাঁর প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার ব্যাপক আত্মবিশ্বাসী। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির শিক্ষাবিষয়ক মুখপাত্র মুনিরা উইলসন এ পরিকল্পনাকে কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন, যা শিশুদের শিক্ষাব্যবস্থাকে খুব বাজেভাবে অবহেলা করেছে বলেও বলেছেন তিনি।
ঋষি তাঁর এ বছরের প্রথম বক্তব্যে যুক্তরাজ্যের জন্য তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এনএইচএসের সংকট মোকাবিলায় ব্যক্তিগতভাবে তিনি প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বও নিতে পারেন। তবে দেশটির বিরোধী দলগুলো এনএইচএসের চলমান সংকটের কারণে প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করেছেন। কারণ, জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকেরা আগেই এ ধরনের দুর্ঘটনা এবং জরুরি ইউনিটগুলো যে পুরো সংকটের মধ্যে রয়েছে, সে বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। বক্তৃতায় ঋষি গণিতশিক্ষার ওপর জোর দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন, ‘এখন বিশ্বের সর্বত্র ডেটার ওপর জোর দেওয়া হয় এবং প্রতিটি কাজে পরিসংখ্যানের ভূমিকা আছে। আমাদের চাকরির জন্য আরও বেশি বিশ্লেষণাত্মক (অ্যানালিটিক্যাল) দক্ষতার প্রয়োজন। এসব দক্ষতা ছাড়াই চাকরির বাজারে নেমে পড়ে তরুণেরা। পরে হতাশ হতে হয়।’ ঋষি সুনাকের মতে, ১৬ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের মাত্র অর্ধেক অংশ গণিত বিষয়ে পড়াশোনা করেন। এর মধ্যে বিজ্ঞানে অধ্যয়ন করা শিক্ষার্থী ও যাঁরা ইতিমধ্যে বাধ্যতামূলক জিসিএসই করে কলেজে পড়ছেন, তাঁরাই আছেন। তবে এ ক্ষেত্রে বি-টেকসহ মানবিক ও সৃজনশীল বিষয়ে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের গণিত অধ্যয়ন করতে হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সরকার বিদ্যমান যোগ্যতা বাড়াতে উদ্ভাবনী বিকল্পের বিষয় নিয়ে ভাবছে। প্রধানমন্ত্রী চলতি পার্লামেন্টে এসব পরিকল্পনার কাজ শুরু করবেন এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনের পর শেষ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ইনস্টিটিউট ফর ফিসক্যাল স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের সংখ্যা ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, যা ২ লাখ অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর সমান। দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব স্কুল অ্যান্ড কলেজের নেতারা বলছেন, দেশে গণিতের শিক্ষকের দীর্ঘস্থায়ী সংকট আছে।
এদিকে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর গণিত অধ্যয়নের জন্য কীভাবে অর্থায়ন করা হবে, তা প্রধানমন্ত্রী ঋষিকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন লেবার পার্টির ছায়া শিক্ষামন্ত্রী ব্রিজেত ফিলিপসন। ব্রিজেত ফিলিপসন বলেন, গণিতের পর্যাপ্ত শিক্ষক ছাড়া তিনি এ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারেন না। গণিতের শিক্ষক নিয়োগে সরকার বছরের পর বছর তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। যুক্তরাজ্যে ২০২১ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের সংখ্যা ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, যা ২ লাখ অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর সমান।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির শিক্ষাবিষয়ক মুখপাত্র মুনিরা উইলসন এ পরিকল্পনাকে কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন, যা শিশুদের শিক্ষাব্যবস্থাকে খুব বাজেভাবে অবহেলা করেছে বলেও বলেছেন তিনি।
মুনিরা উইলসন বলেন, গণিতের ক্ষেত্রে অনেক শিশুকে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিশুদের ১৬ বছর বয়সে পৌঁছানোর আগেই এ ঘটনা ঘটছে। ২০১১ সালে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মাইকেল গভ বলেছিলেন, তিনি আগামী এক দশকের মধ্যে ইংল্যান্ডের ১৮ বছর বয়সী বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর গণিত অধ্যয়ন দেখতে চান।