অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) সেই দেশে আরও ১১৪টি শাখা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী বছরের এপ্রিল মাস থেকে শুরু হবে শাখা বন্ধের এই কার্যক্রম। কারণ হিসেবে ব্যাংকটি মহামারির সময় (কোভিড- ১৯) থেকে গ্রাহকদের ব্যবহার, অর্থাৎ শাখায় আসার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া এবং অনলাইনে ব্যাংকিং লেনদেন বেশি করার কথা উল্লেখ করেছে।
এইচএসবিসি জানায়, যেসব কর্মীর ওপর শাখা বন্ধের প্রভাব পড়বে তাঁদের পুনরায় নিয়োগের চেষ্টা করা হবে। তাতেও কিন্তু ১০০ জনের মতো কর্মী তাঁদের চাকরি হারাবেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিভিন্ন ব্যাংক তাদের হাজার হাজার শাখা বন্ধ করেছে। এর প্রধান দুই কারণ হলো—১. দিন দিন গ্রাহকেরা অনলাইন ব্যাংকিং লেনদেনে ঝুঁকছেন, ২. ব্যাংকগুলো তাদের পরিচালন খরচ কমাতে চাইছে। এইচএসবিসি বলেছে, শতাধিক শাখা বন্ধের পরেও যুক্তরাজ্যে তাদের ৩২৭টি শাখার কার্যক্রম চলমান থাকবে। এসব শাখার কার্যক্রম উন্নয়নে বিনিয়োগ অব্যাহত থাকবে। এদিকে ব্যাংক কর্মীদের একটি ইউনিয়ন এইচএসবিসির শাখা বন্ধ করাকে গ্রাহকদের পরিত্যাগ করা বলে অভিযোগ তুলেছে। ইউনিটির জাতীয় কর্মকর্তা ডমিনিক হুক বলেছেন, ‘কোনো করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা ছাড়াই বয়স্ক, অক্ষম বা দুর্বলদের সাহায্য করার জন্য আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে। তা না হলে নগদ ব্যাংকিয়ের প্রবেশাধিকার চিরতরে হারিয়ে যাবে।’ এইচএসবিসি ইউকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জ্যাকি উহি বলেছেন, ব্যাংকিং কার্যক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। অনেক শাখায় গ্রাহক উপস্থিতি ‘সর্বকালের সর্বনি¤œ পর্যায়ে’ নেমে গেছে, যা আর ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো লক্ষণ নেই।’ তিনি বলেন, ‘দূরবর্তী অবস্থানে থেকেই ব্যাংকিং লেনদেন করাটা আমাদের বিশাল গ্রাহকের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছে আদর্শ হয়ে উঠছে।’
জ্যাকি উহি বলেন, শাখা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না, এটাকে কখনোই হালকাভাবে নেওয়া হয়নি। বিশেষ করে কোনো শাখা একটি এলাকার শেষ শাখা হয়ে থাকলে সেটি বিবেচনায় রাখা হয়। তিনি আরও বলেন, এইচএসবিসি ‘বন্ধ-পরবর্তী’ ব্যবস্থা হিসেবে বিনিয়োগ করে যাবে। যেমন কিছু শাখার গ্রাহকদের ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের সুবিধা করে দিতে তাঁদের বিনা মূল্যে ট্যাবলেট ডিভাইস সরবরাহ করা হবে। ব্যাংকের শাখা বন্ধ করাকে এখন একটি অনিবার্য বিষয় বলে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, শাখাগুলোয় ক্রমান্বয়ে গ্রাহকদের উপস্থিতি কমে আসছে। কোভিড মহামারির সময়ে এই প্রবণতা জোরালো হয়েছে। যেমন এইচএসিবিসির শাখায় প্রতি সপ্তাহে ২৫০ জনেরও কম লোক সেবা নিতে আসেন। ব্যাংকের প্রতি ১০টি লেনদেন সেবার মধ্যে অন্তত নয়টিই এখন ডিজিটাল উপায়ে হয়ে থাকে।
যুক্তরাজ্যে আরও ১১৪টি শাখা বন্ধ করবে এইচএসবিসি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ