ঢাকা ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যাত্রী সেজে রিকশা-অটোরিকশা ছিনতাই

  • আপডেট সময় : ০১:০৭:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২
  • ১২০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : যাত্রী সেজে ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করতেন তারা। এরপর চালকের সঙ্গে সখ্য গড়ে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করে যানবাহন নিয়ে যেতেন তারা। গত শুক্রবার (১১ নভেম্বর) দিনগত রাতে এমনই একটি ছিনতাই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন মানিক সরদার, দেলোয়ার ও ইলিয়াস কাঞ্চন।
পুলিশ বলছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিনব কায়দায় খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করে আসছিল।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, গত ২ নভেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার শ্যামলী পিসি কালচার এলাকা থেকে অচেতন অবস্থায় মোক্তার হোসেন (৬০) নামে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালককে উদ্ধার করেন পথচারীরা। পরে তাকে শেরেবাংলা নগরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মো. হাবিব হোসেন মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। এরপর মামলা তদন্তে গিয়ে শুক্রবার দিনগত রাতে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে নিহতের মোবাইল ফোন, ছিনিয়ে নেওয়া অটোরিকশাসহ ১৮টি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত মানিক সরদারকে শনাক্ত করা হয়। এরপর শুক্রবার রাতে মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিক্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের সদস্য দেলোয়ার ও ইলিয়াস কাঞ্চনকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। পরে তাদের কাছ থেকে ছয়পাতা চেতনানাশক ওষুধ জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে হাফিজ আক্তার বলেন, একজন সর্দারের নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজি চুরি করে আসছে। তিন-চারজন করে দলে ভাগ হয়ে ১০-১২টি দল বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ব্যাটারি বা সিএনজিচালিত অটোচালকদের টার্গেট করেন। এরপর ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন এলাকায ঘুরে বেড়ানোর এক পর্যায়ে চালকের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে নির্জন কোনো স্থানে নিয়ে যায়। আলাপচারিতার একপর্যায়ে চালককে জুস ও কোমল পানীয়ের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে রিকশা চুরি করে সেই রিকশা কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বিক্রি করতেন। প্রতিটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। তারা দুই শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশা চুরি করেছেন বলে স্বীকার করেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যাত্রী সেজে রিকশা-অটোরিকশা ছিনতাই

আপডেট সময় : ০১:০৭:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : যাত্রী সেজে ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করতেন তারা। এরপর চালকের সঙ্গে সখ্য গড়ে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করে যানবাহন নিয়ে যেতেন তারা। গত শুক্রবার (১১ নভেম্বর) দিনগত রাতে এমনই একটি ছিনতাই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন মানিক সরদার, দেলোয়ার ও ইলিয়াস কাঞ্চন।
পুলিশ বলছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিনব কায়দায় খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করে আসছিল।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, গত ২ নভেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার শ্যামলী পিসি কালচার এলাকা থেকে অচেতন অবস্থায় মোক্তার হোসেন (৬০) নামে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালককে উদ্ধার করেন পথচারীরা। পরে তাকে শেরেবাংলা নগরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মো. হাবিব হোসেন মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। এরপর মামলা তদন্তে গিয়ে শুক্রবার দিনগত রাতে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে নিহতের মোবাইল ফোন, ছিনিয়ে নেওয়া অটোরিকশাসহ ১৮টি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত মানিক সরদারকে শনাক্ত করা হয়। এরপর শুক্রবার রাতে মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিক্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের সদস্য দেলোয়ার ও ইলিয়াস কাঞ্চনকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। পরে তাদের কাছ থেকে ছয়পাতা চেতনানাশক ওষুধ জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে হাফিজ আক্তার বলেন, একজন সর্দারের নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজি চুরি করে আসছে। তিন-চারজন করে দলে ভাগ হয়ে ১০-১২টি দল বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ব্যাটারি বা সিএনজিচালিত অটোচালকদের টার্গেট করেন। এরপর ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন এলাকায ঘুরে বেড়ানোর এক পর্যায়ে চালকের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে নির্জন কোনো স্থানে নিয়ে যায়। আলাপচারিতার একপর্যায়ে চালককে জুস ও কোমল পানীয়ের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে রিকশা চুরি করে সেই রিকশা কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বিক্রি করতেন। প্রতিটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। তারা দুই শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশা চুরি করেছেন বলে স্বীকার করেন।