ঢাকা ০৮:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

যাত্রীবেশে দূরপাল্লার বাসে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ১০

  • আপডেট সময় : ০২:২৩:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুন ২০২২
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : যাত্রীবেশে দূরপাল্লার বাসে উঠে একাধিকবার ডাকাতির ঘটনায় একটি চক্রের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
গতকাল রোববার সকালে ঢাকার কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ কথা জানান। চক্রটি গত মে মাসে দূরপাল্লার তিনটি বাসে ডাকাতি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই ঘটনাগুলোর তদন্তে নেমে র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৮ এর একটি দল গত শনিবার রাতে ঢাকার আশুলিয়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. হিরা শেখ ওরফে কালাম শেখ ওরফে সোলেমান শেখ (৪০), মো. হাসান মোল্লা ওরফে ইশারত মোল্লা (৩৯), আরিফ প্রামানিক ওরফে আরিফ হোসেন (৩৩), মো. নুর ইসলাম (৫৩), মো. রাজু শেখ ওরফে রাজ্জাক (৫৪), মো. রেজাউল সরকার (৪৯), মো. রতন (৩৬), মো. শরিফুল ইসলাম (৩৯), মো. হানিফ (৪২) ও মো. নজরুল ইসলাম (৩৫)।
সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার মঈন বলেন, গত ৮ জুন মহব্বত ওরফে রয়েল নামে এক ডাকাতকে লুট করা মালামালসহ রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার কথায় সংঘবদ্ধ এই ডাকাত চক্রটির তথ্য উঠে আসে। চক্রটি গত ১১ মে চট্টগ্রাম থেকে যশোর বেনাপোলগামী হানিফ পরিবহন, ২৫ মে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ন্যাশনাল ট্রাভেলস পরিবহন এবং ২৯ মে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে স্টার লাইন পরিবহনে ডাকাতি করে।
“এই দলে ১২ থেকে ১৫ জন রয়েছে। সংঘবদ্ধ এই ডাকাত দলে নেতৃত্ব দেন হিরা শেখ। হীরা তার অন্যতম সহযোগী হাসান মোল্লা ডাকাতির বিভিন্ন ডাকাতির পরিকল্পনা করতেন,” বলেন মঈন।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, “সর্বশেষ তারা ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জগামী স্টার লাইন পরিবহনে ডাকাতি করেন। ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন দূরপাল্লার আন্তঃজেলা বাসকে টার্গেট করতেন এবং টিকেট কেটে বাসে উঠতেন।
“অন্য সদস্যরা বিভিন্ন কাউন্টার থেকে বাসে উঠতেন। তবে দূরপাল্লার যে বাসগুলো কাউন্টার ছাড়া সড়কে যাত্রী ওঠায় সেসব বাসকে প্রাধান্য দিতেন তারা।”
খন্দকার মঈন বলেন, সাধারণত চক্রটি মহাসড়কের নির্জন এলাকায় বাসে ডাকাতির জন্য বেছে নিত। ডাকাতির পর পুনরায় আশুলিয়ায় ফিরে আসত।
“গত ২ বছরে তারা প্রায় ১০ থেকে ১৫টি বাসে ডাকাতি করেন। এর আগে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহন ও মামুন ট্রাভেলস, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ন্যাশনাল ট্রাভেলস ও একতা ট্রাভেলসে ডাকাতি করেন তারা।”
র‌্যাবের মুখপাত্র মঈন জানান, ওই চক্রের সদস্যরা চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে সৌদিয়া বাসে ডাকাতির সময় বাস চালকের হাতে ও চালকের সহকারীর পেটে ছুরিকাঘাত করে। তারা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফাল্গুনী ট্রাভেলস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও কণক পরিবহন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সুরভী পরিবহন, হানিফ পরিবহন, সিলেট-রাজশাহী মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহন ও রইস পরিবহন, ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে পাবনা এক্সপ্রেস ও সরকার ট্রাভেলস, রাজশাহী-বরিশাল মহাসড়কে সেবা গ্রীন লাইন পরিবহন ও তুহিন পরিবহনে ডাকাতি করে।
র‌্যাব জানায়, এর আগে তারা মানুষের ঘরবাড়িতেও ডাকাতি করেছে। তাদের কারও বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ অন্যান্য মামলায় ২ থেকে ৬ বছর মেয়াদের সাজা রয়েছে। ডাকাত সর্দার হিরা শেখ গার্মেন্টস পণ্য বিক্রি করতেন জানিয়ে মঈন বলেন, “পরবর্তীতে তিনি ডাকাতির পেশায় জড়িয়ে পড়েন এবং ১০ থেকে ১২ বছর ধরে ডাকাতি করে আসছেন।
“হিরার নামে ডাকাতিসহ অস্ত্র আইনে মোট সাতটি মামলা রয়েছে। হাসান মোল্লার বিরুদ্ধেও ১০টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার নুর ইসলাম, হানিফ, আরিফ, শরীফ ও রতন এই চক্রের অন্যতম সদস্য।”
অটোরিকশা ও পিকআপভ্যান চালকসহ নানা পেশার আড়ালে তারা ডাকাতি করতেন। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও আটটি দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যাত্রীবেশে দূরপাল্লার বাসে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ১০

আপডেট সময় : ০২:২৩:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুন ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : যাত্রীবেশে দূরপাল্লার বাসে উঠে একাধিকবার ডাকাতির ঘটনায় একটি চক্রের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
গতকাল রোববার সকালে ঢাকার কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ কথা জানান। চক্রটি গত মে মাসে দূরপাল্লার তিনটি বাসে ডাকাতি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই ঘটনাগুলোর তদন্তে নেমে র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৮ এর একটি দল গত শনিবার রাতে ঢাকার আশুলিয়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. হিরা শেখ ওরফে কালাম শেখ ওরফে সোলেমান শেখ (৪০), মো. হাসান মোল্লা ওরফে ইশারত মোল্লা (৩৯), আরিফ প্রামানিক ওরফে আরিফ হোসেন (৩৩), মো. নুর ইসলাম (৫৩), মো. রাজু শেখ ওরফে রাজ্জাক (৫৪), মো. রেজাউল সরকার (৪৯), মো. রতন (৩৬), মো. শরিফুল ইসলাম (৩৯), মো. হানিফ (৪২) ও মো. নজরুল ইসলাম (৩৫)।
সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার মঈন বলেন, গত ৮ জুন মহব্বত ওরফে রয়েল নামে এক ডাকাতকে লুট করা মালামালসহ রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার কথায় সংঘবদ্ধ এই ডাকাত চক্রটির তথ্য উঠে আসে। চক্রটি গত ১১ মে চট্টগ্রাম থেকে যশোর বেনাপোলগামী হানিফ পরিবহন, ২৫ মে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ন্যাশনাল ট্রাভেলস পরিবহন এবং ২৯ মে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে স্টার লাইন পরিবহনে ডাকাতি করে।
“এই দলে ১২ থেকে ১৫ জন রয়েছে। সংঘবদ্ধ এই ডাকাত দলে নেতৃত্ব দেন হিরা শেখ। হীরা তার অন্যতম সহযোগী হাসান মোল্লা ডাকাতির বিভিন্ন ডাকাতির পরিকল্পনা করতেন,” বলেন মঈন।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, “সর্বশেষ তারা ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জগামী স্টার লাইন পরিবহনে ডাকাতি করেন। ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন দূরপাল্লার আন্তঃজেলা বাসকে টার্গেট করতেন এবং টিকেট কেটে বাসে উঠতেন।
“অন্য সদস্যরা বিভিন্ন কাউন্টার থেকে বাসে উঠতেন। তবে দূরপাল্লার যে বাসগুলো কাউন্টার ছাড়া সড়কে যাত্রী ওঠায় সেসব বাসকে প্রাধান্য দিতেন তারা।”
খন্দকার মঈন বলেন, সাধারণত চক্রটি মহাসড়কের নির্জন এলাকায় বাসে ডাকাতির জন্য বেছে নিত। ডাকাতির পর পুনরায় আশুলিয়ায় ফিরে আসত।
“গত ২ বছরে তারা প্রায় ১০ থেকে ১৫টি বাসে ডাকাতি করেন। এর আগে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহন ও মামুন ট্রাভেলস, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ন্যাশনাল ট্রাভেলস ও একতা ট্রাভেলসে ডাকাতি করেন তারা।”
র‌্যাবের মুখপাত্র মঈন জানান, ওই চক্রের সদস্যরা চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে সৌদিয়া বাসে ডাকাতির সময় বাস চালকের হাতে ও চালকের সহকারীর পেটে ছুরিকাঘাত করে। তারা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফাল্গুনী ট্রাভেলস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও কণক পরিবহন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সুরভী পরিবহন, হানিফ পরিবহন, সিলেট-রাজশাহী মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহন ও রইস পরিবহন, ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে পাবনা এক্সপ্রেস ও সরকার ট্রাভেলস, রাজশাহী-বরিশাল মহাসড়কে সেবা গ্রীন লাইন পরিবহন ও তুহিন পরিবহনে ডাকাতি করে।
র‌্যাব জানায়, এর আগে তারা মানুষের ঘরবাড়িতেও ডাকাতি করেছে। তাদের কারও বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ অন্যান্য মামলায় ২ থেকে ৬ বছর মেয়াদের সাজা রয়েছে। ডাকাত সর্দার হিরা শেখ গার্মেন্টস পণ্য বিক্রি করতেন জানিয়ে মঈন বলেন, “পরবর্তীতে তিনি ডাকাতির পেশায় জড়িয়ে পড়েন এবং ১০ থেকে ১২ বছর ধরে ডাকাতি করে আসছেন।
“হিরার নামে ডাকাতিসহ অস্ত্র আইনে মোট সাতটি মামলা রয়েছে। হাসান মোল্লার বিরুদ্ধেও ১০টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার নুর ইসলাম, হানিফ, আরিফ, শরীফ ও রতন এই চক্রের অন্যতম সদস্য।”
অটোরিকশা ও পিকআপভ্যান চালকসহ নানা পেশার আড়ালে তারা ডাকাতি করতেন। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও আটটি দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।